, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ অনলাইন সংস্করণ

শুভ জন্মদিন প্রিয়দর্শিনী মৌসুমী

  বিনোদন ডেস্ক

  প্রকাশ : 

শুভ জন্মদিন প্রিয়দর্শিনী মৌসুমী

যে প্রিয় মানুষের দর্শনে চোখ জুড়ায়, মন কেমন কেমন করে কিংবা যুবকের বুকের বামপাশে জমা হয় একরাশ উদাসী দীর্ঘশ্বাস- তিনিই তো প্রিয়দর্শিনী। হ্যাঁ, ঢাকাই ছবিতে দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে দর্শক মুগ্ধ করে এই উপমাটি তিনি নিজের করে নিয়েছেন। বলছি মৌসুমীর কথা। আজ বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) এই নন্দিত চিত্রনায়িকার জন্মদিন।

মৌসুমী তার মেয়েকে নিয়ে কদিন আগেই ছুটি কাটাতে গেছেন আমেরিকায়। দুই সপ্তাহ মেয়েকে ঘুরিয়ে দেখিছেন সানফ্রান্সিসকো। এখন আছেন আটলান্টায় ছোট বোন চলচ্চিত্র জগতের আরেক নায়িকা ইরিনের বাসায়। নায়িকা মৌসুমীর মা আছেন ছোট বোন ইরিনের বাসায়। ইরিন অনেকদিন হলো স্থায়ী হয়েছেন আমেরিকায়। এবারের জন্মদিন মৌসুমী তার মা ও ছোট বোনের সঙ্গে কাটান।

জন্মদিন উপলক্ষে মৌসুমী গণমাধ্যমে জানান, জন্মদিন এলে মানুষের ভালোবাসার প্রকাশ বেশি করে ঘটে। মানুষ আমাকে কতটা ভালোবাসে তা বুঝতে পারি। মানুষের ভালোবাসা নিয়েই একটি জীবন পাড়ি দিতে চাই। ‘জন্মদিনে দেশকে মিস করছি। সানীকে মিস করছি। পুত্র ও পুত্রবধূকে মিস করছি। ওরা দেশে আছে। মেয়েকে নিয়ে আমি আমিরেকায়।’

অনেক বছর পর এবারের জন্মদিনে মায়ের সঙ্গে কেক কাটবেন মৌসুমী। তার কাছে এই মুহূর্ত হয়ে থাকবে স্মরণীয়।

মৌসুমীর পুরো নাম আরিফা পারভীন মৌসুমী। ১৯৭৩ সালের ৩ নভেম্বর খুলনায় তার জন্ম। বাবা নাজমুজ্জামান মনি ও মা শামীমা আখতার জামান। মৌসুমী ১৯৯৬ সালের ২ আগস্ট জনপ্রিয় চিত্রনায়ক ওমর সানীর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবন্ধ হন। দাম্পত্য জীবনে তাদের ফারদিন এহসান স্বাধীন (ছেলে) এবং ফাইনা (মেয়ে) নামের দুই সন্তান রয়েছে।

মৌসুমী ছোটবেলা থেকেই একজন অভিনেত্রী এবং গায়িকা হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। এরপর তিনি ‘আনন্দ বিচিত্রা ফটো বিউটি কনটেস্ট’ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন, যার ওপর ভিত্তি করে তিনি ১৯৯০ সালে টেলিভিশনের বাণিজ্যিক ধারার বিভিন্ন অনুষ্ঠান নিয়ে হাজির হন।

আর চিত্রনায়িকা হিসেবে ঢাকাই চলচ্চিত্রে মৌসুমীর অভিষেক ১৯৯৩ সালে সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে। এই সিনেমায় সালমান শাহের সঙ্গে জুটি হন এ অভিনেত্রী। প্রথম ছবিতেই নিজেদের মেধার জানান দেন সালমান শাহ ও মৌসুমী। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। দুজনই ঢালিউডে নিজেদের অবস্থান তৈরি করেছেন।

তারপর দুই দশকের বেশি সময় ধরে ঢালিউডে মেধার দ্যুতি ছড়াচ্ছেন মৌসুমী। প্রায় দুই শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। নারগিস আক্তার পরিচালিত ‘মেঘলা আকাশ’ ও চাষী নজরুল ইসলাম পরিচালিত ‘দেবদাস’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। সালমান শাহের সঙ্গে জুটি বেঁধে ক্যারিয়ার শুরু করা মৌসুমী সফল হয়েছেন ওমর সানী, রিয়াজ, ফেরদৌস, ইলিয়াস কাঞ্চন ও মান্নার সঙ্গে জুটি বেঁধে।

অভিনয়ের পাশাপাশি নির্মাতা হিসেবেও সাফল্য দেখিয়েছেন মৌসুমী। ‘কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি’ মৌসুমী পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র। তারপর তিনি ২০০৬ সালে মেহের নিগার চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেন। এরপর নির্মাণ করছেন ‘শূন্য হৃদয়’, ‘ভালোবাসবোই তো’ নামের দুটি ছবি। আগামীতে মৌসুমী অভিনয় করবেন পবিত্র ভালোবাসা নামের আরেকটি ছবিতে।

অভিনয়ের বাইরে একজন মডেল হিসেবেও তার জনপ্রিয়তা আকাশছোঁয়া। লাক্স, তিব্বতসহ বিভিন্ন সময় তাকে দেখা গেছে অসংখ্য পণ্যের বিজ্ঞাপনে। বর্তমানে তিনি দেশের বৃহত্তম প্লাস্টিক হাউজহোল্ড, কাস্ট আয়রন, পিভিসি, ইলেকট্রনিক্স ও ফার্নিচার সামগ্রী প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান আরএফএলের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে কাজ করছেন।

শোবিজের বাইরে মৌসুমী একজন আদর্শ গৃহিণী, আদর্শ মা। পাশাপাশি তিনি নিজেকে জড়িয়ে রেখেছেন নানা সামাজিক কর্মকাণ্ডেও। ‘মৌসুমী ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন’ নামে একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান দেখাশুনা করেন তিনি। বাংলাদেশের শিশুদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় জনমত ও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইউনিসেফ অ্যাডভোকেটের দায়িত্ব পালন করছেন মৌসুমী।

মৌসুমী-অভিনীত ছবিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য মৌসুমী, দোলা, আত্মঅহংকার, স্নেহ, প্রথম প্রেম, দেনমহর, অন্তরে অন্তরে, বিদ্রোহী বধূ, মুক্তির সংগ্রাম, হারানো প্রেম, ভাংচুর, সাজন, শেষ খেলা, আত্মত্যাগ, বিশ্ব প্রেমিক, গরিবের রাণী, প্রিয় তুমি, রাক্ষস, সুখের স্বর্গ, আদরের সন্তান, সুখের ঘরে দুঃখের আগুন, লুট তরাজ, আম্মাজান, শান্তি চাই, অন্ধ ভালোবাসা, মিথ্যা অহংকার, ঘাত প্রতিঘাত, সংসারের সুখ দুঃখ, প্রিয় শত্রু, লাট সাহেবের মেয়ে, লজ্জা, তুমি সুন্দর, বাঘের বাচ্চা, রূপসী রাজকন্যা, মোল্লা বাড়ির বউ, গোলাপী এখন বিলাতে, একজন সঙ্গে ছিল ইত্যাদি। তিনি অভিনয়ের স্বীকৃতিস্বরূপ পেয়েছেন একাধিকবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।

  • সর্বশেষ - বিনোদন