মামলা নিয়ে মোটেও চিন্তিত নই: আসিফ
প্রকাশ :
কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবর তার বিরুদ্ধে দায়ের করা তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের মামলাটি নিয়ে মোটেও চিন্তিত নন। মামলাটি আইনগতভাবে মোকাবিলা করা হবে বলে জানান তিনি।
সোমবার (৮ নভেম্বর) সংগীতশিল্পী ও সুরকার শফিক তুহিনের দায়ের করা মামলায় ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে হাজিরা দেন আসিফ। এসময় তিনি এসব কথা বলেন।
এদিন তার বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনে করা মামলার অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। রাষ্ট্রপক্ষ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি করেন। অপর দিকে আসিফের আইনজীবী মামলার দায় থেকে তার অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেন। ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আসসামছ জগলুল হোসেন উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদেশের জন্য মঙ্গলবার দিন ধার্য করেন।
শুনানি শেষে আসিফ আকবর বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে মামলাটি করা হয়েছে তা নিয়ে আমি মোটেও চিন্তিত নই। আইনগতভাবে আমি মামলাটি মোকাবিলা করবো।
আসিফের আইনজীবী জজ আহমেদ বলেন, আসিফ আকবরের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সঠিক নয়। মামলার দায় থেকে আসিফকে অব্যাহতি দানের আবেদন করেছি। আশা করি, আদালত তাকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেবেন।
২০১৮ সালের ৪ জুন সন্ধ্যায় গীতিকার ও কণ্ঠশিল্পী শফিক তুহিন তেজগাঁও থানায় তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনে আসিফের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলায় আসিফ ছাড়া আরও চার-পাঁচ জন অজ্ঞাতনামা আসামি রয়েছে।
মামলার এজাহারে বাদী শফিক তুহিন উল্লেখ করেন, ২০১৮ সালের ১ জুন আনুমানিক রাত ৯টার দিকে চ্যানেল ২৪-এর সার্চলাইট অনুষ্ঠানের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন যে, অনুমতি ছাড়াই তার সংগীতকর্মসহ অন্য গীতিকার, সুরকার ও শিল্পীদের ৬১৭টি গান বিক্রি করেছেন আসিফ আকবর।
পরে তিনি বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করে জানতে পারেন, আসিফ আকবর আর্ব এন্টারটেইনমেন্টের চেয়ারম্যান হিসেবে অন মোবাইল প্রাইভেট লিমিটেড কনটেন্ট প্রোভাইডার, নেক্সনেট লিমিটেড গাক মিডিয়া বাংলাদেশ লিমিটেড ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গানগুলো ডিজিটাল রূপান্তরের মাধ্যমে ট্রু-টিউন, ওয়াপ-২, রিংটোন, পিআরবিটি, ফুলট্রেক, ওয়াল পেপার, অ্যানিমেশন, থ্রি-জি কন্টেন্ট ইত্যাদি হিসেবে বাণিজ্যিক ব্যবহার করে অসাধুভাবে ও প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল অর্থ উপার্জন করেছেন।
ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শফিক তুহিন ওই বছরের ২ জুন রাত ২টা ২২ মিনিটে
তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি পোস্ট দেন। তার ওই পোস্টের নিচে
আসিফ আকবর নিজের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে অশালীন মন্তব্য করেন ও হুমকি দেন।
পরদিন
রাত ৯টা ৫৯ মিনিটে আসিফ আকবর তার প্রায় ৩২ লাখ লাইকার-সমৃদ্ধ ভেরিফাইড
ফেসবুক পেজে লাইভে আসেন। ৫৪ মিনিট ৩৪ সেকেন্ড লাইভ ভিডিওর ২২ মিনিট থেকে
তুহিনের বিরুদ্ধে অবমাননাকর, অশালীন ও মিথ্যা-বানোয়াট বক্তব্য দেন।
ভিডিওতে আসিফ আকবর ‘তাকে (শফিক তুহিন) শায়েস্তা করবেন’ বলার পাশাপাশি ভক্তদের উদ্দেশে বলেন, ‘তাকে যেখানেই পাবেন, সেখানেই প্রতিহত করবেন।’
এ নির্দেশনা পেয়ে আসিফ আকবরের ভক্তরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শফিক তুহিনকে হত্যার হুমকি দেন। আসিফ আকবরের এ বক্তব্য লাখ লাখ মানুষ দেখেছেন। তিনি উসকানি দিয়েছেন। এতে তার (শফিক তুহিন) মানহানি হয়েছে।
বিষয়টি সংগীতাঙ্গনের সুপরিচিত শিল্পী, সুরকার ও গীতিকার প্রীতম আহমেদসহ অনেকেই জানেন বলে এজাহারে উল্লেখ করেন শফিক তুহিন।
২০১৯ সালের ২০ নভেম্বর আসিফের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি ও দণ্ডবিধি আইনে পৃথক দুইটি চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।