, ২২ বৈশাখ ১৪৩১ অনলাইন সংস্করণ

পরীর পাহাড়ে চট্টগ্রামের লাইট হাউস করার দাবি

  নিজস্ব প্রতিবেদক

  প্রকাশ : 

পরীর পাহাড়ে চট্টগ্রামের লাইট হাউস করার দাবি

চট্টগ্রামের পরীর পাহাড় প্রত্নসম্পদ হিসেবে সংরক্ষণ করে সেখানে লাইট হাউস করার দাবি জানিয়েছে ‘চট্টগ্রাম ইতিহাস সংস্কৃতি গবেষণা কেন্দ্র’ নামে একটি সংগঠন। মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির পক্ষ থেকে এ দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, ৭০০ বছরের ইতিহাসসমৃদ্ধ পরীর পাহাড়। এই প্রত্নসম্পদকে সংরক্ষণ করতে হবে।আইন অনুযায়ী নান্দনিক কোনো স্থাপনার বয়স ৭০ বছর হলে তা প্রত্নসম্পদ হিসেবে বিবেচিত। আমাদের মনে রাখতে হবে, চট্টগ্রামের এই পরীর পাহাড় মহাকবি নবীন চন্দ্র সেন, মাস্টারদা সূর্যসেন, কল্পনা দত্তের স্মৃতিবিজড়িত স্থান। এই ভবনে মাস্টারদা সূর্যসেন ও তার সাথীদের বিচারকার্য সম্পন্ন হয়েছিল।

বক্তারা আরও বলেন, শত শত বছরের ইতিহাস পরিবর্তনের অধিকার কারো নেই। পরীর পাহাড় সংরক্ষণে তিন শতাধিক অবৈধ স্থাপনা সরানো জরুনি। পাহাড়ের কিনারায় স্থাপিত বহুতল ভবনগুলোর ভূতাত্ত্বিক জরিপ জরুরি। এই ভবনের যে কোনো একটি ধসে পড়লে বাংলাদেশ ব্যাংক, সিডিএ ভবন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হবে। পরীর পাহাড়কে প্রত্নসম্পদ হিসেবে সংরক্ষণ করা না হলে ২০০১ সালের মতো সর্বস্তরের জনগণকে নিয়ে আমরা আন্দোলনে নামবো।

লিখিত বক্তব্যে পরীর পাহাড় সংরক্ষণে পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন সংগঠনটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মনোজ কুমার দেব। দাবিগুলো হলো-

১. পরীর পাহাড়ের ১৩০ বছরের ঐতিহাসিক স্থাপনা প্রত্নসম্পদ হিসেবে সংরক্ষণ করা। পাহাড়ের চারপাশের স্থাপনা সরিয়ে পুরো শহর দেখা যাওয়ার মতো করে চট্টগ্রামের লাইট হাউজ ঘোষণা করা।

২. বর্তমান জেলা প্রশাসন থেকে প্রশাসনিক কার্যক্রম বাকলিয়া কর্ণফুলী তীরবর্তী এলাকায় নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।আমাদের দাবি হচ্ছে, শুধু প্রশাসনিক কার্যক্রম নয়, বিচারিক কার্যক্রমের জন্য ওই এলাকায় প্রয়োজনীয় অবকাঠামো তৈরি করে পরীর পাহাড়কে ঐতিহাসিক স্থান হিসেবে সংরক্ষণ করা হোক।

৩. পাহাড়ের ঢালে নির্মিত ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ভেঙে ফেলা অতি জরুরি। পাহাড়ের ঢালুতে তৈরি যে কোনো একটি ভবন ভেঙে পড়লে নিচের পুরো এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হবে। তখন পুরো পরীর পাহাড় ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

৪. ভূতাত্ত্বিক জরিপ করে পুরো এলাকার অবৈধ সরকারি-বেসরকারি সকল স্থাপনা সরিয়ে লাল ভবনটি সংরক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

৫. পুরো পরীর পাহাড়কে প্রত্নসম্পদ আইনে সংরক্ষণ করে বাংলাদেশের যে সমৃদ্ধ ইতিহাস-ঐতিহ্য রয়েছে, সেই আলোকে পরীর পাহাড়ের লাল দালান হেরিটেজ ঘোষণা করতে হবে। তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ইতিহাস জানতে পারবে।

সংবাদ সম্মেলনে টেলিকনফারেন্সে যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও কক্সবাজার বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. আবুল কাসেম। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন বিএফইউজের যুগ্ম-মহাসচিব মহসীন কাজী, চট্টগ্রাম ইতিহাস সংস্কৃতি গবেষণা কেন্দ্রের সভাপতি আলীউর রহমান, সংগঠক কায়সার আলী চৌধুরী ও সংগঠনের নির্বাহী সদস্য শ্যামল বিশ্বাস প্রমুখ।