১৭ নভেম্বার ২০২১, ১৯:০৯ মিঃ
ময়মনসিংহের ত্রিশালের রামপুর ইউনিয়নে অবস্থিত চেচুয়া বিল। প্রকৃতির অপরূপ রূপে সজ্জিত এই বিলে ফুটেছে লাল শাপলা। যতদূর চোখ যায় শুধু লাল শাপলার রক্তিম রাজত্ব ছাড়া আর কিছুই চোখে পড়ে না। প্রায় ২০ একর আয়তনের এই বিলের প্রায় পুরোটা জুড়েই শাপলা ফুটেছে। সাদা ও বেগুনি শাপলারও দেখা মেলে মাঝেমধ্যে।
ভাসমান কচু ফুলের সাদা আভা বিলের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণ। সম্প্রতি ভ্রমণপিয়াসী মানুষের মেলা বসেছে সেখানে। বন্ধুর পথ পাড়ি দিয়ে সৌন্দর্য উপভোগ করতে হাজার মানুষের ঢল নামে প্রতিদিন।
শাপলার সংস্পর্শে আসতে পর্যটকদের বেশ বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় পায়ে হেঁটে অনেক পথ পাড়ি দিতে হয়। কাছ থেকে শাপলা দেখতে কিংবা শাপলা তুলতে চাইলে নেমে যেতে হয় পানিতে। অথবা ছোট ডিঙি নৌকায় চেপে বহু কষ্টে যেতে হয় শাপলার এই বিস্তীর্ণ জলাশয়ে।
সারাদেশের মানুষ অবশ্য এ বিলকে প্রথমে চিনেছে একটি গুজবকে কেন্দ্র করে। একদিন সকাল হতেই কিছু লোক দেখতে পান সেখানে থাকা জমাটবাঁধা কচু হঠাৎ সরে গিয়ে অনেকটা জায়গা ফাঁকা হয়েছে। এটাকে অলৌকিক ভেবে কয়েকজন এখানে গোসল করে ও এর পানি খেয়ে রোগ থেকে মুক্ত হয়েছেন বলে দাবি করেন। পরে এটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর সারাদেশের হাজার হাজার মানুষ বন্ধুর পথ পেরিয়ে কাঁদামাখা পানিতে গোসল, গড়াগড়ি ও কাদাযুক্ত পানি সংগ্রহ করতে এখানে ভিড় করেন। এনিয়ে ২০১৮ সালের ৬ অক্টোবর ‘অলৌকিক’ পানি পান করতে মানুষের ঢল শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করে জাগোনিউজ২৪.কম। তবে এবার গুজবে নয়, বিলের সৌন্দর্যের টানে ছুটে আসছেন পর্যটকরা।
একসঙ্গে ঘুরতে এসেছেন কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাত শিক্ষক। বিলের পানিতে নেমে রীতিমতো সাঁতারও কেটেছেন নৃবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান আসিফ ইকবাল আরিফ। তাদের মধ্যে একজন হলেন ড. শেখ সুজন আলী। কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এ অধ্যাপক জাগো নিউজকে বলেন, ‘প্রকৃতির এই রূপে বিমোহিত হয়েছি। একসঙ্গে এতো লাল শাপলা দেখে সত্যিই মুগ্ধ হয়েছি। তবে বিলের মধ্যে না নেমে যদি এর আশপাশের আইল দিয়ে ফুলের সৌন্দর্য দেখার সুযোগ থাকতো তাহলে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পেতো অনেক ফুল।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘ত্রিশালে আসার পরই শুনেছি এই বিলের গুজব রহস্যের কথা। কিন্তু এই বিল এবার পরিচিতি পেয়েছে লাল শাপলার অপার সৌন্দর্যের জন্য। চেচুয়া বিলের সৌন্দর্য রক্ষায় এবং দর্শনার্থীদের প্রকৃতি উপভোগে সব ধরণের সহযোগিতা ও পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
চেচুয়া বিল ভ্রমণে যাবেন যেভাবে
প্রথমে ত্রিশাল বাসস্ট্যান্ড থেকে বালিপাড়া রোডে অটোভ্যানে করে দশ টাকা ভাড়া দিয়ে ঠাকুর বাড়ি মোড়ে এসে নামতে হবে। এরপর চেচুয়া বিল পর্যন্ত ভ্যান কিংবা পায়ে হেঁটে দুভাবে যেতে পারবেন। ভ্যানে যেতে সময় লাগবে পাঁচ মিনিটের মতো। এরপর সাত-আটটি ধানক্ষেতের আইল বেয়ে হেঁটে যেতে হবে শাপলার দেখা পেতে।
সর্বস্বত্ব: এমআরএল মিডিয়া লিমিটেড
ঢাকা অফিস: মডার্ণ ম্যানসন (১৫ তলা), ৫৩ মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা-১০০০
ময়মনসিংহ অফিস: হাসনাইন প্লাজা (দ্বিতীয় তলা), ৭ মদন বাবু রোড, ময়মনসিংহ-২২০০
সেলফোন: ০৯৬১১-৬৪৫২১৫, ০৯৬৯৭-৪৯৭০৯০
ই-মেইল: jagrota2041@gmail.com
ফোন :
ইমেইল :