2024-04-19 10:29:06 am

সোনা ৩১৭টি, স্বপ্ন দেখছে ৩০৮০ জোড়া চোখ

www.focusbd24.com

সোনা ৩১৭টি, স্বপ্ন দেখছে ৩০৮০ জোড়া চোখ

৩০ নভেম্বার ২০১৯, ২৩:৫৩ মিঃ

সোনা ৩১৭টি, স্বপ্ন দেখছে ৩০৮০ জোড়া চোখ

গেমসের জন্য প্রস্তুত বাংলাদেশ। ছবি: জাগ্রত বাংলা


শহরের অলিতে গলিতে চোখে পড়ছে এসএ গেমসের ব্যানার। ‘দক্ষিণ এশিয়ার অলিম্পিক’ নিয়ে যেন কৌতুহলের শেষ নেই কাঠমান্ডুর সাধারণ জনগনের। তাই তো দশরথ স্টেডিয়ামের সীমানা প্রাচীরের ফাঁক দিয়ে ভেতরের ‘রাশ উৎসব’ দেখার চেষ্টায় অনেকে। কাঠমান্ডুর পাহাড়ি ঢাল বেয়ে ছুটে চলা ব্যস্ত মানুষগুলোও মাঝে মাঝে থমকে দাঁড়াচ্ছে শহরের বিভিন্ন মোড়ে লাগানো বিলবোর্ড আর ব্যানার দেখে। শহরের প্রাণকেন্দ্রের দশরথ স্টেডিয়ামে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। শ্রমিকেরা ব্যস্ত গ্যালারি সংস্কারের কাজে। আগামীকাল এই স্টেডিয়ামে হবে ১৩তম এসএ গেমসের উদ্বোধন। বাংলাদেশ সময় বিকেল সোয়া পাঁচটায় আসরের উদ্বোধন করবেন নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভান্ডারী।

এবারের গেমসের ২৭টি খেলা হওয়ার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে আয়োজকেরা প্যারাগ্লাইডিং বাদ দিয়েছে। শুধু নেপাল ও পাকিস্তান নাম নিবন্ধন করায় বাদ দেওয়া হয় এই খেলা। এবার গেমসে সোনার পদকের লড়াই হবে ৩১৭টি ইভেন্টে। বাংলাদেশ অংশ নেবে ২৫টি খেলায়। এবারের গেমসে বাংলাদেশ থেকে অংশ নিচ্ছে ২৬৩ জন ছেলে ও ১৯৯ জন মেয়ে অ্যাথলেট। এর বাইরে নেপালের ৬৪৮ জন, ভারতের ৪৬১ জন, পাকিস্তানের ৪১৩ জন, মালদ্বীপের ৩৩২ জন, ভুটানের ১৪২ জন ও শ্রীলঙ্কার ৬২২ জন অ্যাথলেট অংশ নেবে গেমসে। ৩০৮০ জন অ্যাথলেট, স্বপ্নবিভোর ৩০৮০ জোড়া চোখ। যে চোখগুলোতে স্বপ্ন আঁকছে ৩১৭টি সোনার পদক।

১৯৮৪ সালে কাঠমান্ডুতে শুরু হয় এসএ গেমসের পথচলা। যদিও ওই সময় গেমসের কাগুজে নাম ছিল সাফ (দক্ষিণ এশিয়ান ফেডারেশন) গেমস। প্রায় ৩৫ বছর আগে শুরু হওয়া গেমস ১৯৯৯ সালে দ্বিতীয়বার আয়োজন করে নেপাল। সেবার শুধু কাঠমান্ডুতে খেলা হলেও এবারের ভেন্যু পোখারা ও জানকপুরে। ২৬টি খেলার মধ্যে ১৭টি হবে কাঠমান্ডুতে। পোখারায় ৮টি খেলা। জানকপুর হবে কুস্তি।

কাঠমান্ডু ও পোখারা দুই শহরেই লেগেছে গেমসের হাওয়া। ট্যাক্সি চালক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের মধ্যে বাড়তি আগ্রহ তৈরি করতে পেরেছে আয়োজকেরা। যদিও গেমসটা নেপালে হবে কিনা তা নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে ছিল বাকি দেশগুলো। শেষ পর্যন্ত মাস তিনেক আগে সরকার থেকে নিশ্চয়তা পাওয়ার পর নেপাল শুরু করে গেমসের আয়োজনের তৎপরতা।

এমনিতেই পর্যটকের দেশ নেপাল। তাই আয়োজকেরা বাড়তি গেমস ভিলেজ তৈরি করেনি। স্থানীয় হোটেলগুলোতেই খেলোয়াড়, কোচ ও কমকর্তাদের আবাসনের ব্যবস্থা করেছে। গেমস ঘিরে উত্তেজনার শেষ নেই ট্যাক্সি চালক বিনোদ তামাংয়ের, ‘অনেকদিন পর আবারও আমাদের দেশে একটা বড় আন্তর্জাতিক গেমস হচ্ছে ভেবে ভালো লাগছে। ভূমিকম্পের পর নেপালে পর্যটকের সংখ্যা কমে গিয়েছে। এই গেমস দিয়ে আশা করি আবারও নতুন নেপালকে চিনবে সবাই।’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান জমকালো করতে আয়োজকদের পক্ষ থেকে চেষ্টার কমতি রাখা হয়নি। প্রায় তিন ঘন্টার অনুষ্ঠানে তুলে আনা হবে নেপালের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। গতকাল দশরথ স্টেডিয়ামে হয়েছে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মহড়া। আজ বিকেলে স্টেডিয়ামের বাইরে হয়েছে সাত দেশের পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠান। এবারের গেমসে বাংলাদেশের পতাকা বইবেন গত এসএ গেমসে জোড়া সোনাজয়ী সাঁতারু মাহফুজা খাতুন।

স্থানীয় গণমাধ্যমে স্বাভাবিকভাবেই বেশিরভাগ শিরোনামেই এসএ গেমসের খবর। ভলিবলে নেপাল সোনা জিতবে কিনা তা নিয়ে চলছে জল্পনা কল্পনা। কেন এসএ গেমসের শেষ মুহূর্তে ক্যাম্প ছেড়ে পালিয়ে কাতার চলে গেলেন সোনাজয়ী অ্যাথলেট তুলশা কেসি, এ নিয়ে প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতে জেরবার নেপালি সংগঠকেরা। মেয়েদের ক্রিকেটে বাংলাদেশকে রুখে দেওয়ার চ্যালেঞ্জ দিয়েছেন নেপাল কোচ জগৎ তামাতা। পোখারা থেকে এরই মধ্যে গেমস মশাল চলে এসেছে কাঠমান্ডুতে। আজ এই গেমসের মশাল জ্বালাবেন তায়কোয়ান্দোতে চারবারের সোনাজয়ী দীপক বিষ্ঠা। একেবারে শেষ মুহূর্তে সংবাদ সম্মেলন করে আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব রমেশ কুমার সিলওয়াল জানালেন, ‘আমরা প্রস্তুত।’

এবার ভারত ও পাকিস্তান ১০টি খেলায় অংশ নিচ্ছে না। আর এতেই বাংলাদেশের সম্ভাবনা বেড়েছে অনেক। আর্চারিতে আশা দেখাচ্ছেন রোমান সানা। ভারোত্তোলনে মাবিয়া আক্তার সীমান্ত। ফুটবলে ১৯৯৯ সালের পর আবারও সোনা জয়ের স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ। ক্রিকেটেও ভালো কিছু করার আশা রয়েছে। কারাতেতে হাসান খান ও হোসেন খান যমজ ভাইদের ওপর তাকিয়ে থাকবে বাংলাদেশ। সাঁতারেও সোনা জিততে মুখিয়ে আরিফুল ইসলাম, মাহফিজুর রহমান, জোনায়না আহমেদরা। বাংলাদেশ দলের শেফ দ্য মিশন আসাদুজ্জামান কোহিনুর তো বলেই ফেললেন, ‘আমরা এবার সোনার পদকের সংখ্যাটা দুই অঙ্কে তুলে নিতে চাই।’


উপদেষ্টা সম্পাদক: ডি. মজুমদার
সম্পাদক: মীর আক্তারুজ্জামান

সর্বস্বত্ব: এমআরএল মিডিয়া লিমিটেড
ঢাকা অফিস: মডার্ণ ম্যানসন (১৫ তলা), ৫৩ মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা-১০০০
ময়মনসিংহ অফিস: হাসনাইন প্লাজা (দ্বিতীয় তলা), ৭ মদন বাবু রোড, ময়মনসিংহ-২২০০
সেলফোন: ০৯৬১১-৬৪৫২১৫, ০৯৬৯৭-৪৯৭০৯০ ই-মেইল: jagrota2041@gmail.com
ফোন :
ইমেইল :