, ২২ বৈশাখ ১৪৩১ অনলাইন সংস্করণ

পাকিস্তানে ইফতারে বাহারি আয়োজন

  ধর্ম ডেস্ক

  প্রকাশ : 

পাকিস্তানে ইফতারে বাহারি আয়োজন

মুসলিম বিশ্বের জন্য এক মহিমান্বিত মাস রমজান। এ মাসকে ঘিরে তাই রয়েছে নানা অনুষ্ঠান আর রীতি-রেওয়াজ। রোজা রাখা, ইফতারের পর তারাবির নামাজ পড়া ইত্যাদি ছাড়াও আনন্দ-উৎসব করার মাধ্যমেও সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া হয় খুশির আমেজ। ধর্মীয় আচার–অনুষ্ঠানের চেয়েও এসব রীতি সাংস্কৃতিক উদযাপন হিসেবে বেশ জনপ্রিয়। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠের অন্যতম একটি দেশ পাকিস্তান। সেখানে রমজান কীভাবে পালিত হয়, তা নিয়ে লিখেছেন—মুনশি মুহাম্মদ উবাইদুল্লাহ

ইফতারে বাহারি আয়োজন
রমজান শুরু হওয়ার পর থেকেই পাকিস্তানে তৈরি হয় ভিন্ন আবহ। বিশেষ করে, পাকিস্তানি ইফতার আয়োজন উল্লেখ করার মতো একটি বিষয়। পুরুষরা সারাদিন রোজা রেখে ইফতারে সবাই একত্রিত হন মসজিদে মসজিদে। আর নারীরা ঘরোয়া পরিবেশে এক হয়ে বাহারি আয়োজনে নানা পদের খাবারের পসরা খুলে বসেন। পবিত্র এই রমজান মাসে ইফতার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চিকেন স্যুপ, আলুর পাকোড়া, ফলের কাস্টার্ড পাকিস্তানের প্রচলিত স্বাস্থ্যসম্মত ইফতারের উল্লেখযোগ্য উপকরণ। ছোট-বড় সবাই মিলে বেশ আনন্দ-ফূর্তিতে যাপন করেন ইফতার-মুহূর্ত।

চাঁদ রাতের উৎসবে ব্যতিক্রম
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর রমজান ও ঈদের ঐতিহ্যের মধ্যে মিল দেখা যায়। ভারত-পাকিস্তান-বাংলাদেশ—এই তিন দেশেই রমজানের শেষে শাওয়ালের ঈদসূচক চাঁদ দেখা গেলে চাঁদ রাতের উৎসব শুরু হয়ে যায়। কিন্তু পাকিস্তানের চাঁদ রাতের উৎসবে কিছুটা ব্যতিক্রম লক্ষ্য করা যায়।

চাঁদের জন্য অপেক্ষা
২৯ রমজান শেষেই মূলত চাঁদের জন্য অপেক্ষা শুরু হয়। মাগরিবের নামাজ শেষ হতে না হতে জানা যায়, চাঁদ দেখা গেছে কিনা। যদি ২৯ রমজান শেষে চাঁদ দেখা না যায়, তাহলে সে বছর রমজান মাস ৩০ দিনের হয়ে থাকে। রোজাও ৩০টি হয়ে থাকে। হিজরি সনমতে চন্দ্র মাস ২৯ বা ৩০ দিনে হয়ে থাকে। তাই ২৯ রমজানের শেষে যদি শাওয়ালের চাঁদ দেখা না যায়, তাহলে ৩০ রমজানের পর শাওয়াল মাস শুরু হয়ে গেছে বলে ধরে নেওয়া হয়। এর সঙ্গে শুরু হয়ে যায় চাঁদরাত।

মেহেদি রাঙা হাত
রমজানের শেষ ইফতার করে পাকিস্তানের কিশোরী, তরুণী, যুবতী, নারী—সবাই বাজারে ছোটে ঈদের কেনাকাটা করতে। চুড়ি, মালা, ফিতা, সালোয়ার-কামিজ আর অবশ্যই মেহেদি। মেহেদিতে হাত রাঙানো পাকিস্তানি নারীদের প্রিয় কাজ। বাড়িতে ফিরে রয়েছে ঈদের বিশেষ রান্নার ব্যস্ততা। এসব কারণে পাকিস্তানি নারীরা বাজার করতে করতেই হাতে মেহেদির নকশা করে থাকে। এই একটি ব্যাপারই পাকিস্তানের চাঁদ রাতকে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের চাঁদ রাত থেকে আলাদা করেছে।

পাকিস্তানি নারীদের ঈদ
মেহেদি রাঙানোর জন্য আছে পেশাজীবি নারীরা। তারা তাদের সরঞ্জাম নিয়ে বাজার, মল, এমনকি রাস্তায়ও বসে থাকে। নারীরা তাদের প্রয়োজনীয় বা সাজসজ্জার সরঞ্জাম কেনাকাটার বিরতিতে হাত মেহেদি রঞ্জিত করতে পারেন সহজেই। আকাশে এক ফালি রুপালি চাঁদ এবং হাতে রাঙা নকশা নিয়ে পাকিস্তানের নারীদের ঈদ শুরু হয়।

বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে পুনর্মিলন
চাঁদরাতে দোকানগুলো সারারাত খোলা থাকে। ভোরের আলো ফুটলে দোকানিরা তাদের দোকান বন্ধ করেন। দীর্ঘদিন রোজা রাখা ও সংযম পালনের পর চাঁদরাত হলো, বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে পুনর্মিলনের উপযুক্ত স্থান।