২১ জুন ২০২২, ০৯:১৪ মিঃ
টানা ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ভারতের পাহাড়ি ঢলে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয় সিলেট ও সুনামগঞ্জে। এর ফলে সিলেটের শাহজালাল উপশহর বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র পানিতে তলিয়ে বন্ধ হয়ে যায় বিদ্যুৎ সরবরাহ। বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েন পানিবন্দি মানুষ।
বন্যার পানি বাড়তে থাকলে সিলেট থেকে জাতীয় গ্রিড লাইনের ৩৩ হাজার কেভির কুমারগাঁও বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রটিও পানিতে তলিয়ে যায়। বৈরী আবাহাওয়া, অতিবৃষ্টি আর উজানের ফলের পানি বাড়তে থাকলে এটিও বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। তবে সোমবার কুমারগাঁও বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র ঝুঁকিমুক্ত ঘোষণা করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
তাৎক্ষণিকভাবে কুমারগাঁও পরিদর্শন করে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী সিলেটের সর্বস্তরের প্রশাসনসহ সেনাবাহিনীকে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি রক্ষার আহ্বান জানান। দ্রুত সময়ের মধ্যে সিলেট জেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড, ফায়ার সার্ভিসসহ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি দল কুমারগাঁও পৌঁছায়।
বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করে তড়িৎ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণের। এতে উপকেন্দ্রে পানি প্রবেশ রোধ, আর উপকেন্দ্রের ভেতরের পানি সেচ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিরিবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। তবে পরদিন আরো পানি বাড়লে সংকটাপন্ন অবস্থায় পড়ে গোটা কেন্দ্রটি।
এ সময় পরিকল্পনায় পরিবর্তন এনে শুধুমাত্র উপ কেন্দ্রের সরবরাহ ইউনিটকে কেন্দ্র করে নতুন করে বাঁধ তৈরি করা হয়। তাতে ফলও আসে। বেড়ি বাঁধ নির্মাণকালীন ৭ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখলেও ভয়াল বন্যার মধ্যেও নগরের যে সকল এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে যায়নি সেসব এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। তবে এখনও নগরের অধিকাংশ বন্যাকবলিত এলাকা বিদ্যুৎবিহীন আছে।
সোমবার (২০ জুন) থেকে সিলেটের কুমারগাঁও বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রটি পুরোপুরি নিরাপদ বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সিলেট বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুল কাদির।
সোমবার (২০ জুন) বিকেলে কুমারগাঁওয়ে ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষে সিলেট সেনানিবাসের মেজর খন্দকার মো. মুক্তাদির ভয়াল বন্যায় পরিচালিত কর্মসূচীর বর্ণনা দেন। তিনি সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, বিদ্যুৎ বিভাগ, জেলা প্রশাসনসহ অন্য সকল সরকারি দপ্তর এবং সংস্থাসমূহকে ধন্যবাদ জানান।
ব্রিফিংয়ে সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, এই বিপদে যদি বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যেত তাহলে আমরা নগরবাসী আরেকটি মহা সংকটের মধ্যে পড়ে যেতাম। তাই অতিব জরুরি বিবেচনায় সিলেট সিটি কর্পোরেশন কুমারগাঁও কেন্দ্রটি সচল রাখার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালায়। এই চেষ্টায় সিলেটের সকল প্রশাসন, দপ্তর সংস্থাসহ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রসংশনীয় ভূমিকা পালন করে।
এদিকে সিলেট উপশহরের বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে অস্থায়ী বেড়িবাঁধ দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহের উপযোগী করা হয়েছে।
সোমবার সকালে বরইকান্দির বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র পরিদর্শন করেন সিসিক মেয়র এবং সেনাবাহিনীর একটি দল। তারা বন্যায় তলিয়ে থাকা বরইকান্দি কেন্দ্রটিও কুমারগাঁওয়ের মতো কৌশলে বাঁধ দিয়ে সেচের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ উপযোগী করতে কাজ শুরু করেছেন।
এ বিষয়ে সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, আশা করি মঙ্গলবার এটিও চালু করা যাবে। সেনাবাহিনীর সদস্যরাসহ সংশ্লিষ্ট সবাই এই উপকেন্দ্রটি সচল করতে একযোগে কাজ করছেন।
সর্বস্বত্ব: এমআরএল মিডিয়া লিমিটেড
ঢাকা অফিস: মডার্ণ ম্যানসন (১৫ তলা), ৫৩ মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা-১০০০
ময়মনসিংহ অফিস: হাসনাইন প্লাজা (দ্বিতীয় তলা), ৭ মদন বাবু রোড, ময়মনসিংহ-২২০০
সেলফোন: ০৯৬১১-৬৪৫২১৫, ০৯৬৯৭-৪৯৭০৯০
ই-মেইল: jagrota2041@gmail.com
ফোন :
ইমেইল :