, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ অনলাইন সংস্করণ

হলি আর্টিজান মামলা: পেপারবুক প্রস্তুত, দ্রুত আপিল শুনানির উদ্যোগ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

  প্রকাশ : 

হলি আর্টিজান মামলা: পেপারবুক প্রস্তুত, দ্রুত আপিল শুনানির উদ্যোগ

বহুল আলোচিত রাজধানীর হলি আর্টিজানে হামলা ৭ বছর পেরিয়ে গেছে। উচ্চ আদালতে আপিল ঝুলে থাকায় আসামিদের ফাঁসির রায় কার্যকর করা এখনও সম্ভব হয়নি। তবে আশার কথা হলি আর্টিজানে হামলা মামলার আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানির জন্য পেপারবুক প্রস্তুত হয়েছে। দ্রুতই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এ মামলার আপিল শুনানির উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ।

এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, হলি আর্টিজানে হামলা মামলার আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানির জন্য পেপারবুক প্রস্তুত হয়েছে। মামলাটি শুনানির জন্য আরও কতগুলো বিষয় আছে, যেমন আসামিদের মধ্যে যারা আপিল করেননি, শুধু ডেথ রেফারেন্স এসেছে তাদের জন্য আদালত কর্তৃক একজন আইনজীবী নিয়োগ করা হবে। এসব কাজ শেষে জন্য মামলাটি শুনানির জন্য প্রস্তুত হবে তখনই আমি মাননীয় প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন করব। যেহেতু এটা একটা সেনসেটিভ মামলা তাই দ্রুত শুনানির জন্য আবেদন করব। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মামলা শুনানির জন্য  হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ নির্ধারণ করতে আবেদন জানাব।

এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা বলেন, আর্টিজান হামলা মামলায় বিচারিক আদালত ২০২০ সালে রায় দিয়েছেন। এখন হাইকোর্টে ২০১৬ সালের ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিলের শুনানি চলছে। কিন্তু যেহেতু হলি আর্টিজান হামলা মামলা একটি সেনসেটিভ মামলা। হলি আর্টিজান হামলা মাধ্যমে দেশের ভাবমূর্তি বিনষ্টের অপচেষ্টা ছিল। তাই এ মামলা উচ্চ আদালতে দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য আমি মাননীয় প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন জানাব।

পেপারবুক প্রস্তুত হওয়ার কথা জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার ও মুখপাত্র মুহাম্মদ সাইফুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আর্টিজানে হামলা মামলার আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানির জন্য পেপারবুক প্রস্তুত হয়েছে। এখন আনুষঙ্গিক কাজ চলছে। কাজ শেষে হলে শুনানির জন্য পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর হলি আর্টিজানে হামলার মামলায় ৭ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও এক আসামিকে খালাস দেন বিচারিক আদালত। ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ মজিবুর রহমান এ রায় দেন।

মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামিরা হলো- হামলার মূল সমন্বয়ক তামিম চৌধুরীর সহযোগী আসলাম হোসেন ওরফে রাশেদ, ঘটনায় অস্ত্র ও বিস্ফোরক সরবরাহকারী নব্য জেএমবি নেতা হাদিসুর রহমান সাগর, জঙ্গি রাকিবুল হাসান রিগ্যান, জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব ওরফে রাজীব গান্ধী, হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী আব্দুস সবুর খান (হাসান) ওরফে সোহেল মাহফুজ, শরিফুল ইসলাম ও মামুনুর রশিদ। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশও দেন আদালত। রায়ে মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান নামে এক আসামিকে খালাস দেওয়া হয়।
 
একই বছরের ৩০ নভেম্বর মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত ৭ আসামির ডেথরেফারেন্স ও মামলার যাবতীয় নথি হাইকোর্টে আসে। এর পরেই ওই সময়ের প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এ মামলার পেপারবুক প্রস্তুতের নির্দেশ দেন।

২০১৬ সালের ১ জুলাই রাজধানীর গুলশান এলাকার কূটনীতিকপাড়ায় হলি আর্টিজান বেকারিতে নজিরবিহীন জঙ্গি হামলা চালিয়ে ২২ জনকে হত্যা করে জঙ্গিরা। ওই হামলায় দুই পুলিশ কর্মকর্তা— সহকারী কমিশনার রবিউল ইসলাম ও ওসি সালাউদ্দিনসহ ২২ জন নিহত হন। নিহতদের মধ্যে ৯ জন ইতালির নাগরিক, ৭ জন জাপানি, একজন ভারতীয় এবং একজন বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দ্বৈত নাগরিক। বাকি দুজন ইশরাত আকন্দ ও ফারাজ আইয়াজ হোসেন বাংলাদেশি নাগরিক।

  • সর্বশেষ - অন্যান্য