, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ অনলাইন সংস্করণ

জাহিদ নয়নের দুটি কবিতা

  সাহিত্য ডেস্ক

  প্রকাশ : 

জাহিদ নয়নের দুটি কবিতা

ঐশ্বর্য পূজারিণী

এরপর কোনো এক বিকেলে;
অস্তমিত সূর্যের ঘ্রাণ বুকে নিয়ে
চোখ বুজেছিলে, কিছু খুঁজেছিলে
বিড়বিড় করে আওড়ালে এক মন্ত্র!
অধিবিদ্যক কোনো স্বপ্নের কথন
কাকডাকা সন্ধ্যা ছেদ করেনি ধ্যানের লগন।
নিয়তির মতো বিশ্বাসঘাতক সময়ের লাগাম
ধরতে চাইনি ব্যর্থ আপ্রাণ।

তবু সেই চোখ বুজেছিলে
কিছু খুঁজেছিলে
খুঁজে পাওনি আমায়
ধ্যানমগ্ন বিলাসী স্বপ্নে তোমার!
যে চোখ স্বপ্নজাল বোনে না
আটকা পড়ে ঐশ্বর্যের জালে।
যে চোখ সমুদ্র ধরে না
স্রোতহীন শৈবালের আধার!
ধ্যান ভেঙে যে চোখ দেখে না
অব্যর্থ নিশ্চুপ চিৎকার !

চোখ মেলে ধ্যান ভাঙো ঐশ্বর্য পূজারিণী
বেলা শেষের সূর্য যে অস্তমিত প্রায়
তবু ও কি মোহ ভাঙেনি!
তোমার নীলাভ রক্ত এখন লাল হয়েছে
আমি জানি, তুমি বোঝনি অথবা বুঝতে চাওনি,
আমার না থাকার নাম যে ভালোবাসা
তুমি জেনেছো আমি জানি,
তবু জানতে দাওনি...

**

অভিশপ্ত জাতিস্মর

এক হাতে অন্ধকার, এক হাতে পূর্ণিমা
দু’চোখে এক সহস্রাব্দের রোমন্থন
তৃষ্ণার্ত প্রাণ মৃত্যু সুধার খোঁজে;
দিগ্বিদিক ছোটে ছায়াপথ থেকে ছায়াপথ।
অভিশপ্ত এক আত্মার মতো অমর আমি
পুনর্জন্ম নিয়ে বারবার ফিরছি পৃথিবীর বুকে।
তন্দ্রার ভেতর জেগে থাকা এক অসীম সত্তা
অবিরাম বাড়তে থাকা মহাবিশ্বের মতো।

ধূসর আমার চোখে ধরা দেয় ট্রয়ের ধ্বংসলীলা,
ধরা দেয় ওয়াটারলু, পলাশীর প্রান্তর!
সাক্ষাৎ আমার চোখে বসে একাত্তর,
পঁচাত্তরের অন্ধকার, পৈশাচিক প্রলয়।
শেয়াল শকুনের যৌথ খামার বেড়ে ওঠে
অন্ধকার ভোজের মহোৎসব তুঙ্গে!

মরুভূমির মতো বিস্তীর্ণ রাত ধরা দেয় আমার চোখে
তার বুক বিদীর্ণ করি না বলেই
আমি দুঃস্বপ্নচারী নিশাচর!
রাতের বুকজুড়ে জেগে থাকা এক অতন্দ্র জাতিস্মর।

শতাব্দী থেকে শতাব্দীর বাঁকে অন্ধ রাতকে ফেরাই
নতুন অন্ধকারের টানে!
অন্ধ রাত ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে যায়
আমি জেগে থাকি
কিছু দুর্বোধ্য অন্ধকারের অপেক্ষায়...

  • সর্বশেষ - সাহিত্য