, ২২ বৈশাখ ১৪৩১ অনলাইন সংস্করণ

‘নার্সরা সুরক্ষিত থাকলে রোগীরাও পর্যাপ্ত নার্সিং সেবা পাবেন’

  অনলাইন ডেস্ক

  প্রকাশ : 

‘নার্সরা সুরক্ষিত থাকলে রোগীরাও পর্যাপ্ত নার্সিং সেবা পাবেন’
মো. কামাল হোসেন পাটওয়ারি, সভাপতি বাংলাদেশ নার্সেস এসোসিয়েশন (বিএনএ), ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল শাখা

বর্তমানে করোনা ভাইরাস নামক মহাদুর্যোগে বিপর্যস্ত গোটা বিশ্ব। বাংলাদেশও এই দুর্যোগের বাইরে নেই। বরং জনসংখ্যার দিকে তাকালে এই ভাইরাস সর্বাধিক হারে ছড়িয়ে পড়ার আশংকা রয়েছে বলে অনুমান করছে অনেক বিশেষজ্ঞ মহল।

এ নিয়ে কথা হয় বাংলাদেশ নার্সেস এসোসিয়েশন (বিএনএ) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল শাখার সভাপতি কামাল পাটওয়ারির সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘যে কোনো পরিস্থিতিতে অসুস্থ মানুষকে সেবা দেওয়ার প্রত্যয় নিয়ে আমরা নার্সিং পেশায় এসেছি। সুতরাং দেশে যত বড় দুর্যোগই ঘটুক, আমরা রোগীদের সেবা করেই যাবো। কিন্তু এক্ষেত্রে সবার আগে ভাবতে হবে আমাদের সুরক্ষার কথা। কেননা একজন নার্সকেই অসংখ্য রোগীর কাছে যেতে হয়। ইনজেকশন দেওয়া, ওষুধ সরবরাহ করাসহ স্বাস্থ্য সেবা দিতে নার্সদেরই সবচেয়ে বেশি রোগীর সংস্পর্শে যেতে হয়। তাই নার্সদের সুস্থ থাকা অনিবার্য। কেননা আমরা অসুস্থ হয়ে পড়লে রোগীদের সেবা দেবে কে? তাই চিকিৎসা সেবা দেওয়ার সময় আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের ব্যাপারটা সবার আগে ভাবতে হবে।,

তিনি আরও বলেন, স্বাস্থ্যগত এই দুর্যোগে নার্সরা তাদের সর্ব্বোচ্চ সেবার হাত বাড়িয়ে দিয়ে জাতির পাশে দাঁড়াবে। হাসপাতাল-স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে স্বাস্থ্য বিভাগের সর্বোচ্চ মহলে চিকিৎসক-নার্সদের জন্য সুরক্ষা পোশাক পিপিইর চাহিদা দেওয়া হয়েছে এবং পর্যাপ্ত পরিমান পিপিই সরবরাহ পাওয়ার কথা শুনা যাচ্ছে। এ বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা তার সর্ব্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন।

কামাল পাটোয়ারি বলেন, আশার কথা হচ্ছে নার্সদরদী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা গত ৩১ মার্চ দেশের ৬৪টি জেলার জেলা প্রশাসকদের সাথে যে মিটিং করেছেন সেই মিটিং এ নার্সদের নিরাপত্তার বিষয়টি বারবার নিশ্চিত করার জন্য নির্দেশ প্রধান করেছেন।

‘করোনা ভাইরাসের সংক্রমন ঠেকাতে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু আমরা স্বাস্থ্য সেক্টরে কেউ ছুটি পাচ্ছি না। আমরা ছুটি চাইও না। কারণ আমাদের সবার সম্মিলিত প্রচেষ্ঠায় এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতেই হবে।

এই বিএনএ নেতা বলেন, ‘করোনা ভাইরাস রোগীকে সেবা দিতে গিয়ে একজন নার্স আক্রান্ত হওয়া মানে অন্তত কয়েকশ’ রোগীর একজন সেবককে হারিয়ে ফেলা। তাই নার্সরা সুরক্ষিত থাকলে রোগীরাও পর্যাপ্ত সেবা পাবেন।’

কামাল পাটোয়ারি বলেন, করোনা ভাইরাস সামাল দিতে অনেক উন্নত রাষ্ট্রও হিমশিম খাচ্ছে। কিন্তু আমরা সৃষ্টিকর্তার ওপর ভরসা রেখে রোগীদের সেবা দিতে প্রস্তুত। তাই আমাদের নিরাপত্তার বিষয়টিও সংশ্লিষ্ট সকলে গুরুত্ব সহকারে দেখবেন বলে আশা করি।’ তিনি আরও বলেন" নার্সদের ঝুঁকি ভাতা এখন সময় উপযোগী ও বাস্তবসম্মত দাবি যা নার্সদেরকে আরও বেশি পরিমাণে ঝুকি নিয়ে কাজ করতে মানষিক ভাবে অনুপ্রেরণা যোগাবে।

নার্সদের এই নেতা বিশেষভাবে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় এবং নার্সিং ও মিডওয়াইফারী অধিদপ্তরকে ধন্যবাদ জানান। করোনা মোকাবেলায় এই জটিল পরিস্থিতিতে নার্সদের সার্বক্ষনিক খুজ খবর নিয়ে নার্সিং ও মিডওয়াইফারী অধিদপ্তর বর্তমানে প্রকৃত অভিভাবক এর মতই আচরন করছে বলে তিনি জানান। ভবিষ্যতে ও এই ধারাবাহিকতা অব্যহত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

তিনি আরো বলেন, ‘এই দুর্যোগের সময়ে আমরা যে শুধু সরকারের দিকেই তাকিয়ে থাকবো তেমনটাও না। দেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের নিজ নিজ স্থান থেকেও এই দুর্যোগ থেকে উত্তরণ করতে চেষ্টা এবং উদার সহযোগীতা করে যেতে হবে।’

কামাল পাটোয়ারি সকল নার্সদের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি নার্স দরদী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকার যতদিন ক্ষমতায় আছেন ততদিন আমাদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে না। দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে নিজেদের সুরক্ষিত রেখে স্বাস্থ্য সেবা দিতে আমরা নার্সরাও যেন কার্যকর ভূমিকা রাখি।’