, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ অনলাইন সংস্করণ

‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ কখন পড়বেন?

  ধর্ম ডেস্ক

  প্রকাশ : 

‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ কখন পড়বেন?

‘লা হাওলা ওয়া লা কুওয়াতা ইল্লাবিল্লাহ‘। এর অর্থ ‘আল্লাহ ছাড়া কোনো ভরসা নেই; কোনো ক্ষমতা বা শক্তি নেই।’ অর্থাৎ মানুষের ব্যক্তিগত শক্তি, সামর্থ্য, ক্ষমতা ও সাহস যত বেশিই থাকুক না কেন আল্লাহ তায়ালা তাওফিক না দিলে তা কোনো ধরনের উপকারে আসবে না। এবং আল্লাহ তায়ালার সত্ত্বা সব কিছুর ঊর্ধ্বে, সব শক্তিধর বস্তু আল্লাহ তায়ালার সামনে একেবারে তুচ্ছ ও ছোট। -এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ একটি বাক্য। এর ফজিলত ও সওয়াব অনেক বেশি। 

‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ কখন পড়তে হয়...

যখন মানুষ নিজের সক্ষমতার বাইরে কোনো পরিস্থিতি ও কাজের মুখোমুখি হয়, যা সম্পাদন করা তার ওপর কষ্ট-সাধ্য হয়ে পড়ে তখন এই ব্যাকটি পড়তে হয়। এছাড়াও শয়তানের কোনো প্রতারণা ও আক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য এই দোয়াটি পড়া হয়।

উবাদা বিন সামেত রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি এই দোয়া পড়ে আল্লাহ তায়ালার কাছে নিজের গুনাহ থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করবে অথবা যেকোনো দোয়া করবে, আল্লাহ তায়ালা তার দোয়া কবুল করবেন। দোয়াটি হলো-

আরবি :

لا إِلَهَ إِلا اللَّهُ وَحْدَهُ لا شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ الْحَمْدُ لِلَّهِ وَسُبْحَانَ اللَّهِ وَلا إِلَهَ إِلا اللَّهُ وَاللَّهُ أَكْبَرُ وَلا حَوْلَ وَلا قُوَّةَ إِلا بِاللَّهِ 

উচ্চারণ : লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারিকালাহু-লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া আলা কুল্লু শাইয়িন কাদির, আলহামদুলিল্লাহি ওয়া সুবহানাল্লাহি ওয়ালা ইলাহা ইল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার, ওয়ালা হাওলা ওয়া লা কুওয়াতা ইল্লাবিল্লাহ। -(বুখারি, ১০৮৯)

আবু জর (রা.) থেকে বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) আমাকে একবার বললেন‘আমি কি তোমাকে জান্নাতের গুপ্তধনগুলোর একটির সন্ধান দেবো না? আমি বললাম, হ্যাঁ, আল্লাহর রাসুল। তিনি বলেন, ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ।

মুয়াজ্জিন আজানের সময় যখন লা-হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লাবিল্লাহ বলে তখন ‘লা হাওলা ওয়া লা কুওয়াতা ইল্লাবিল্লাহ‘ বলতে হয়। (মুসলিম, ৫৭৮, সুনানে আবু দাউদ, ৪৪৩)

হজরত আনাস ইবনে মালেক রা. বলেন, যে ব্যক্তি ঘর থেকে বের হওয়ার সময় এই দোয়াটি পড়বে আল্লাহ তায়ালা তার জন্য যথেষ্ট হয়ে যাবেন এবং শয়তানও তার থেকে দূর হয়ে যাবে। দোয়াটি হলো-

আরবি :

بِسْمِ اللَّهِ تَوَكَّلْتُ عَلَى اللَّهِ لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللَّهِ

উচ্চারণ : বিসমিল্লাহি তাওয়াক্কালতু আলালাহ, লা-হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লাবিল্লাহ। -( সুনানে আবু দাউদ, ৪৪৩১)

এই বাক্যের ফজিলত সম্পর্কে হাজিম ইবনে হারমালা (রা.) বর্ণিত হাদিসে বলা হয়েছে, তিনি বলেন, আমি নবী (সা.)-এর কাছ দিয়ে যাচ্ছিলাম। তিনি আমাকে বলেন, ‘হে হাজিম! তুমি অধিক সংখ্যায় ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’’ বাক্যটি পড়ো। কেননা তা হলো জান্নাতের গুপ্তধন। (বুখারি, হাদিস ৪২০৪, ৬৩৮৪, ৬৪০৯, ৭৩৮৬, মুসলিম ৫৮৯,)

আবু জর (রা.) থেকে বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) আমাকে একবার বললেন—

‘আমি কি তোমাকে জান্নাতের গুপ্তধনগুলোর একটির সন্ধান দেবো না? আমি বললাম, হ্যাঁ, আল্লাহর রাসুল। তিনি বলেন, ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ। (আহমাদ, হাদিস : ২০৮২৯)

হজরত আবু মুসা আশআরি (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) একবার আমাকে বললেন, ‘তোমাকে জান্নাতের অন্যতম ধনভাণ্ডারের কথা কি বলে দেব?’ আমি বললাম, অবশ্যই বলে দিন, হে আল্লাহর রাসুল! তিনি বললেন,

 لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللهِ 

(লা হাওলা অলা ক্বুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ)। -(বুখারি, হাদিস : ২৯৯২; মুসলিম, হাদিস : ২৭০৪, তিরমিজি, হাদিস : ৩৩৭৪; আবু দাউদ, হাদিস : ১৫২৬)

  • সর্বশেষ - অতিথি কলাম