, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ অনলাইন সংস্করণ

সরকার ক্ষমতায় এসে যা করছে তা বিএনপির চেয়ে এক ডিগ্রি বেশি

  নিজস্ব প্রতিবেদক

  প্রকাশ : 

সরকার ক্ষমতায় এসে যা করছে তা বিএনপির চেয়ে এক ডিগ্রি বেশি

দেশের সার্বিক পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক উল্লেখ করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় উপনেতা জিএম কাদের বলেছেন, রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল। সামনে নির্বাচন। কিন্তু আমরা এখন পর্যন্ত কিছুই বুঝতে পারছি না। নির্বাচনে সব দল অংশ নেবে কি না, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে কি না তা বুঝতে পারছি না।

তিনি আরও বলেন, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা আরও বেশি নাজুক। প্রবাসী আয় কমে যাচ্ছে। আমদানি ব্যয় বাড়ছে, রিজার্ভ কমে আসছে; সেখানে বিভিন্ন মেগা প্রকল্পের যে ঋণ তার বোঝা দেশ কতটুকু বইতে পারবে তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছি। আগেও বলেছি দেশ দেউলিয়া হবার পথে। আমাদের অবস্থা শ্রীলঙ্কার মতো হতে পারে।

সোমবার (৩ অক্টোবর) বেলা ২টায় রংপুর সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি একথা বলেন। পাঁচ দিনের সফরে ঢাকা থেকে দুপুর সাড়ে ১১টায় সৈয়দপুর বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান জিএম কাদের। সেখান থেকে সড়কপথে রংপুর সার্কিট হাউজে পৌঁছালে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান নেতাকর্মীরা।

দলের একাধিক নেতাকে বহিষ্কার ও রওশন এরশাদের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়নে জাতীয় পার্টি ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে কিনা জানতে চাইলে জিএম কাদের বলেন, জাতীয় পার্টিতে কোনো ভাঙন নেই। জাতীয় পার্টি সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ দল। দেশে এবং বিদেশে এ বিষয়টি সবাই লক্ষ্য করছে। সমস্ত রাজনৈতিক দল এবং বিদেশি শক্তিও আমাদের দিকে খেয়াল রাখছে। আমরা যা কিছু করছি দেশ ও জনগণের স্বার্থে করছি।  

এসময় রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র প্রার্থীতা নিয়ে বলেন, একটা দলে থাকলে অনেকেই নির্বাচন করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। এরমধ্য থেকে আমরা একজনকে বেছে নিয়েছি। রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাকে আগেই সমর্থন দেওয়া হবে। তাকেই নির্বাচনে মনোনয়নও দেওয়া হবে।

নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে জিএম কাদের বলেন, আমাদের নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এটার ওপর আমাদের ভবিষ্যৎ রাজনীতির অস্তিত্ব নির্ভর করছে। তাই তৃণমূল থেকে দলের উচ্চপর্যায়ে নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এসময় তিনি আরও বলেন, বিএনপির সঙ্গে জাতীয় পার্টির কোনো গোপন আঁতাত চলছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে জিএম কাদের বলেন, বিএনপির সঙ্গে কোনো গোপন আঁতাত বা গোপন কোনো বিষয় নেই। আমি যা কিছু করি স্বচ্ছভাবেই করি। যা হবে প্রকাশ্যে করব। যখন কিছু করা হবে, তখন তো সবাই জানতে পারবেন।

সরকার দেশ পরিচালনায় ব্যর্থ দাবি করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, আমি সবসময়ই সংসদে এবং সংসদের বাইরে বলে আসছি এই সরকার দেশ পরিচালনায় ব্যর্থ। সরকার সুশাসন দিতে ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচন কমিশন নিয়ে আমরা আমাদের আপত্তি জানিয়েছি।
দেশে গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নেবে, দুর্নীতি দূর হবে, অন্যায়-অবিচার, জুলুম থাকবে না। এমনটা ভেবেই আমরা সরকারকে সমর্থন দিয়েছিলাম। কিন্তু, এই সরকার ক্ষমতায় এসে যা করছে তা বিএনপির চেয়ে এক ডিগ্রি বেশি। আমরা হতাশ, আমরা এর পরিবর্তন চাই।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও সংসদ সদস্য আহসান আদেলুর রহমান আদেল, রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি ও সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক এস.এম ইয়াসির, জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল মাসুদ চৌধুরী নান্টু, সদস্য সচিব হাজী আব্দুর রাজ্জাক প্রমুখ।

পরে সার্কিট হাউস থেকে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে সঙ্গে নিয়ে রংপুর নগরীর পল্লী নিবাসে যান জিএম কাদের। সেখানে দলের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের কবর জিয়ারত করেন। বিকেলে রংপুর জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের সঙ্গে দলীয় কার্যালয়ে তিনি মতবিনিময় সভা করবেন।

  • সর্বশেষ - মিডিয়া