১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২০, ২০:৫৪ মিঃ
রাজধানীর মাতুয়াইলে একটি বেসরকারি হাসপাতালের পরিচালকের কক্ষের জানালা থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় এক ফার্মাসিস্টের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই ফার্মাসিস্টের নাম মোবারক করিম (২৬)।
শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে 'ফ্রেন্ডশিপ স্পেশালাইজড হসপিটালস এন্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার'-এ এ ঘটনা ঘটে। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক জামাল হোসেনের কক্ষ থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশ বলছে, মরদেহের গলায় তোয়ালে পেঁচানো ছিল, আর পা ছিল মেঝেতে। গলায় ও পায়ে আঘাতের চিহ্ন আছে।
মোবারকের স্বজনদের অভিযোগ, জামাল বৃহস্পতিবার দুপুরে তাকে (মোবারক) হাসপাতালে নেন। নিজের কক্ষে ডেকে নিয়ে তিনি মোবারককে হত্যা করেছেন।
মোবারকের স্বজন ও পুলিশ জানিয়েছে, মোবারকের বাবার নাম সোলাইমান। গ্রামের বাড়ি ভোলার লালমহন থানার নজরআলী বেপারী বাড়ি এলাকায়। বর্তমানে কদমতলীর দনিয়ার নতুন রাস্তার ১৪/৬০ নম্বর বাসায় স্ত্রী সাবিকুন্নাহার রিতুকে বসবাস করতেন। আট মাস আগে তারা বিয়ে করেছেন। মোবারক সাইনবোর্ড এলাকার প্রো-একটিভ মেডিকেল কলেজের মেডিসিন স্টোরে কর্মরত ছিলেন। গত বৃহস্পতিবার তিনি সকালে কর্মস্থলে যান। এর পর বাসায় ফেরেননি।
প্রো-একটিভ
মেডিকেল কলেজের তার সহকর্মী বেলাল হোসেন সমকালকে বলেন, জামাল বৃহস্পতিবার
দুপুর আড়াইটায় মোবারকের অফিসে যান এবং তার কাজ শেষ কিনা জিজ্ঞাসা করেন।
আনুমানিক তিন মিনিট পর জামাল ও মোবারক অফিস থেকে বেরিয়ে যান।
মোবারকের
বন্ধু নাহিদ হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে স্ত্রী সাবিকুন্নাহার রিতুর
সঙ্গে মোবাইল ফোনে মোবারকের শেষ কথা হয়। রাত ৮টায় তিনি বাসায় না ফেরায় রিতু
স্বামীর মোবাইল ফোনে কল করে বন্ধ পান। একাধিকবার কল করেও ফোন বন্ধ পাওয়ায়
বিষয়টি স্বজনদের জানান। খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে
জানতে পারেন, ফ্রেন্ডশিপ স্পেশালাইজড হসপিটালসে জামালের কক্ষে মোবারকের
মৃতদেহ পাওয়া গেছে। এরপরই স্বজনরা ছুটে যান সেখানে।
ডেমরা
থানার এসআই শাহ আলম জানান, শুক্রবার সকালে তিনি খবর পান, ফ্রেন্ডশিপ
হাসপাতালের তৃতীয় তলার পরিচালক জামালের ৭ নম্বর কক্ষ ভেতর থেকে আটকানো।
ডাকাডাকি করে ভেতর থেকে কারো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। এর পরই তিনি সকাল সাড়ে
১০টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে কক্ষের দরজা ভেঙে মোবারকের মৃতদেহ দেখতে পান।
জানালার সঙ্গে মোবারকের গলা তোয়ালে দিয়ে পেঁচানো ছিল। পা ছিল মেঝেতে। গলায় ও
পায়ে আঘাতের চিহ্ন আছে। এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
তবে একজনের কক্ষে এভাবে ঝুলে থাকা রহস্যজনক। জামাল পলাতক রয়েছে। তার মোবাইল
ফোনও বন্ধ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে রহস্য বেরিয়ে আসতে পারে।
মোবারকের
ভাই রুহুল আমিনসহ স্বজনদের অভিযোগ, মোবারককে হাসপাতালে ডেকে নিয়ে রাতে
পিটিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। পরে আত্মহত্যা বলে চালানোর জন্য জানালার
গ্রিলের সঙ্গে মৃতদেহ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।
হাসপাতালটির মালিক ডা. এমজি ফেরদৌস সমকালকে বলেন, বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে তিনতলায় তার কক্ষে কর্মচারি আব্দুল জলিলের সঙ্গে মোবারক প্রবেশ করেন। তখন মোবারকের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। বেশ কিছু সময় তারা বসে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন। পরে মোবারক ও জলিল বেরিয়ে যান। পরিচালক জামালের কক্ষ তার কক্ষ থেকে তিনটি কক্ষের পরে।
তবে জামালের সঙ্গে তার দেখা হয়নি বলে দাবি করেন ফেরদৌস। সকালে তিনি জানতে পারেন, জামালের কক্ষে মোবারকের মৃতদেহ পাওয়া গেছে। এর পর থেকে জামালের মোবাইল নম্বর বন্ধ পান।
সর্বস্বত্ব: এমআরএল মিডিয়া লিমিটেড
ঢাকা অফিস: মডার্ণ ম্যানসন (১৫ তলা), ৫৩ মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা-১০০০
ময়মনসিংহ অফিস: হাসনাইন প্লাজা (দ্বিতীয় তলা), ৭ মদন বাবু রোড, ময়মনসিংহ-২২০০
সেলফোন: ০৯৬১১-৬৪৫২১৫, ০৯৬৯৭-৪৯৭০৯০
ই-মেইল: jagrota2041@gmail.com
ফোন :
ইমেইল :