০১ জুন ২০২০, ০৯:২৮ মিঃ
প্রাণঘাতী মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে সমগ্র বিশ্ব এখন আতঙ্কিত। এ বিষয়ে আমাদেরকে আতঙ্কিত না হয়ে সচতেনতা অবলম্বন করতে হবে আর আল্লাহর কাছে নতজানু হয়ে সবিনয় প্রার্থনা অব্যাহত রাখতে হবে।
যদিও বিশ্বময় এ মহামারির কারণে স্বাভাবিক জীবন যাপন কিছুটা কঠিন, তারপরও আমাদেরকে ধৈর্যধারণ করতে হবে। সবে মাত্র আমরা পবিত্র রমজান মাস শেষ করে শাওয়াল মাস অতিবাহিত করছি। অনেকে শাওয়াল মাসের রোজা রাখছেন।
বর্তমান উদ্ভূত পরিস্থিতে স্বাভাবিক জীবনযাপন যদিও কষ্টকর তারপরও একজন মুমিন কখনও তার ইবাদত-বন্দেগিতে কমতি করেন না। সে পুরো রমজানে যেভাবে ইবাদত-বন্দেগিতে রত থেকে কাটিয়েছেন ঠিক সেভাবেই বছরের অন্যান্য দিনগুলো অতিবাহিত করার চেষ্টা করেন।
বর্তমান উদ্ভূত পরিস্থিতিকে আমরা কি অনেক কষ্টকর মনে করছি? আমরা কি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সময়ের দুঃখ-কষ্টকে ভুলে গেছি? তারা ধর্মের জন্য কতই না কষ্ট করেছেন, সব প্রকার ত্যাগ স্বীকার করেছেন, দিনের পর দিন অনাহারে থেকেছেন, তারপরও তারা নামাজ, রোজা ও অন্যান্য পুণ্যকাজ পরিত্যাগ করেননি।
ওহুদের যুদ্ধে মুসলমানদের ওপর আক্রমণকারীরা কতই না জুলুম, অত্যাচার, নির্যাতন করেছে, যা বর্ণনাতীত। আর অপর দিকে আমরা কি দেখতে পাই, মুসলমানদের ক্ষুদ্র দলটি হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি পরম শ্রদ্ধায় অনুপ্রাণিত হয়ে অতুলনীয় বীরত্ব প্রদর্শন করেছেন।
ওহুদের ময়দানে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পবিত্র শরীর আঘাতে জর্জরিত হয়েছিল, তার পবিত্র দাঁতও এতে শহিদ হয়। তারপরও তিনি তাদের জন্য পরম দয়াময় আল্লাহর কাছে হেদায়াত কামনা করেছেন। ওহুদের ময়দানে তার পবিত্র সাহাবাদেরকে এমন নির্দয়ভাবে আঘাত করে শহিদ করা হয়েছে যে, তাদের মৃতদেহ পর্যন্ত সনাক্ত করা যায়নি।
তা সত্বেও কোনো সাহাবা ইসলাম এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ত্যাগ করে চলে যাননি বরং তাদের মনোবল আরো দৃঢ় থেকে দৃঢ়তর হয়েছিল। তারা এটা বলেন নি যে, আমরা এই দুঃখ-কষ্ট সহ্য করতে পারছি না, তাই ইসলাম ত্যাগ করছি।
বরং তাদের মনোবল এমন পাহাড়ের ন্যায় ছিল যে, এ পথে নিজ প্রাণ কুরবান করতে সদা প্রস্তুত ছিল। এত কষ্ট সহ্য করা সত্বেও তারা ঠিকমত নামাজ আদায় করেছেন, রমজানের রোজা রেখেছেন। আবার নফল নামাজেও অতিবাহিত করেছেন রাত।
এরপর শিবে আবু তালিব উপত্যকায় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তার সাহাবায়ে কেরামের বন্দী জীবনের দুর্বিসহ দিনগুলোর ইতিহাসও আমাদের সামনে রয়েছে। সেই দিনগুলোতে তাদের কাছে না ছিল মাল-সামান আর মজুদ খাদ্য সামগ্রী। অবরুদ্ধ অবস্থায় কী যে নিদারুন দুঃখ-কষ্টের মধ্যে তারা কালাতিপাত করেছিলেন তা কেবল ভুক্তভোগী ছাড়া অন্য কারো পক্ষে কল্পনা করাও দুঃসাধ্য।
এই দুঃসহ অবস্থা চলেছিল প্রায় তিন বছর। খাদ্য-সামগ্রী সরবরাহের পথ বন্ধ করে দেয়া হলে গাছের পাতা আর চামড়া খেয়েই সাহাবাদের জীবনধারণ করতে হয়। নারী শিশুদের কান্নার আওয়াজে বাতাস ভারি হয়ে যেত আবু তালিবের উপত্যকায়। এমন ভয়াবহ সময়ে কেমন কেটেছিল রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তার সাহাবায়ে কেরামের দিনগুলো?
একটু ভেবে দেখুন! ইসলামের জন্য, আল্লাহর একত্ববাদের জন্য আমাদের প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং তার সাহাবারা কতই না কষ্ট সহ্য করেছেন। সেই তুলনায় আমরা কি এর সামান্য পরিমাণও কষ্ট সহ্য করছি?
বিপদাপদ যাই হোক না কেন একজন মুমিন তার ইবাদতে কখনই কমতি করে না বরং কঠিন পরিস্থিতিতে ইবাদত-বন্দেগিতে আরো গতি সৃষ্টি করে।
আসুন, সকাতরে আল্লাহর দরবারে দোয়া করি, হে দয়াময় প্রভু! সব বিপদাপদ থেকে আমাদের রক্ষা করুন আর আমাদের তাওবা কবুল করে তোমার দয়ার চাদরে আবৃত করে নিন। আমিন।
সর্বস্বত্ব: এমআরএল মিডিয়া লিমিটেড
ঢাকা অফিস: মডার্ণ ম্যানসন (১৫ তলা), ৫৩ মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা-১০০০
ময়মনসিংহ অফিস: হাসনাইন প্লাজা (দ্বিতীয় তলা), ৭ মদন বাবু রোড, ময়মনসিংহ-২২০০
সেলফোন: ০৯৬১১-৬৪৫২১৫, ০৯৬৯৭-৪৯৭০৯০
ই-মেইল: jagrota2041@gmail.com
ফোন :
ইমেইল :