, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ অনলাইন সংস্করণ

যেখানে চাঁদ-সূর্যের দৃশ্য মন কেড়ে নেবে

  ভ্রমন ডেস্ক

  প্রকাশ : 

যেখানে চাঁদ-সূর্যের দৃশ্য মন কেড়ে নেবে

আবু আফজাল সালেহ

দিনের বেলা সূর্য আর রাতের বেলা চাঁদ। প্রতাপশালী সূর্যের পড়ন্ত বেলা ও আগমনের সময় কোমল রূপ থাকে। এ রূপ আমাদের জন্য খুবই উপভোগ্য। সূর্য ওঠার পূর্ব মুহূর্তকে সূর্যোদয় বা ঊষা বলি। সূর্য ডুবে যাওয়ার সময়কে সূর্যাস্ত বা গোধূলি বলি। চন্দ্র আলোকিত সময়কে জোৎস্না বা পূর্ণিমা বলা হয়। সম্পূর্ণ চাঁদের আলোর সময়কে ভরাপূর্ণিমা বলি। এ সময় এক মোহনীয় দৃশ্যের অবতারণা হয়।

jagonews24

বিভিন্ন দেশে এসব দৃশ্য দেখার জন্য মানুষের প্রবল আগ্রহ থাকে। বাংলাদেশেও ব্যতিক্রম নয়। বাংলাদেশের প্রথম সূর্যোদয় দেখা যায় কুয়াকাটায়। নির্দিষ্ট করে বললে, গঙ্গামতীর তীরে। প্রতিদিন ভোরে বিপুল পরিমাণ পর্যটকে মুখরিত থাকে গঙ্গামতীর তীর। অস্পষ্ট আলো ও কালোবালুর তীরে প্রথম সুর্যোদয়ের দৃশ্য বড়ই মনোহর।

jagonews24

বাংলাদেশের দারুচিনির দ্বীপ বলা হয় সেন্টমার্টিনকে। শীতকালে এখান থেকে টেকনাফ আসার পথে সূর্যাস্তের অনুপম দৃশ্য দেখা যায়। জাহাজ থেকে পাহাড়ের কোলের সূর্য আর সমুদ্র-নাফের জলের প্রতিচ্ছবি যে কত সুন্দর, তা লিখে বলা যায় না! কক্সবাজার সীবিচও বিশ্বের লম্বা সমুদ্রতীর। এখানকার পূর্ণিমা চাঁদ দেখতে কবিতা মনে হবেই। প্রিয়জনকে মনে পড়বে। যদি কাছেই থাকে, তাহলে দ্বিগুণ উপভোগ্য হবে। ভোরের পরেই আবার দেখবেন সূর্যোদয়ের অনুপম দৃশ্য!

jagonews24

উত্তরের তিস্তা নদী। রংপুর থেকে লালমনিরহাটের দিকে যেতে কাউনিয়া রেলব্রিজের সূর্যাস্তের দৃশ্য কারো চোখ থেকে যায় না! বন্দরনগরী চট্টগ্রামের প্রাণ বা ভরকেন্দ্র হচ্ছে কর্ণফুলী নদী। কক্সবাজার থেকে ঢাকায় আসার পথে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর ওপর এক ব্রিজ থেকে সূর্যাস্তের যে দৃশ্য তা কখনো ভোলা যাবে না! জাহাজ, জল আর শহরের কোলে থালার ন্যায় রক্তিম সূর্য! কী, মনকাড়া!

jagonews24

রূপের রানি খাগড়াছড়ি। নীলাচল যেন নীল আঁচলে মোড়া। টাইগারপাড়ায় এখানকার ন্যাড়া (জুম চাষ) পাহাড়ের গায়ে সূর্যাস্তের দৃশ্য দেখতে বেশ লাগে! দিনাজপুরের রামসাগর ঐতিহাসিক জায়গা। ছোট্ট এ জায়গায় জলাশয়। সূর্যাস্ত দেখতে খারাপ লাগে না কিন্তু। রাঙ্গামাটির সাজেক। খাগড়াছড়ি থেকে যাওয়া তুলনামূলকভাবে সহজ। আসার পথে পাহাড়গায়ের দৃশ্য মনোরম। সাজেকে সুন্দর দৃশ্য দেখতে পাবেন।

jagonews24

তিস্তা ব্যারেজ। ঘুরে বেড়ানোর এক ভালো জায়গা। এটি লালমনিরহাট ও নীলফামারী জেলার সীমান্তে অবস্থিত। এখান থেকে কুচবিহারের দৃশ্য বা সূর্যাস্তের সময়ের দৃশ্য স্মরণীয় হয়ে থাকতে পারে। আর যদি থাকে সূর্যের নিচে নৌকায় মাছধরার দৃশ্য! তাহলে তো কথাই নেই। ওপারে মিজোরামের লুসাই পাহাড়শ্রেণি আর এপাশে সাজেকের রুইলুইপাড়ার আবাসিক এলাকা। এমন দৃশ্যের ফাঁকগলে গোধূলি। কেমন লাগে বলুন তো!

jagonews24

সাজেকের হ্যালিপ্যাড থেকে পূর্ণিমার চাঁদ, এটি কিন্তু সুকান্তের ‘পূর্ণিমা চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি’র মতো হবে না! না গেলে মিস করবেন। উত্তরের ধরলা-তিস্তা বেষ্টিত কুড়িগ্রাম জেলা। লালমনিরহাট থেকে ফুলবাড়ি যাওয়ার পথের সূর্যাস্তের দৃশ্য ভুলে যেতে পারি? দারুচিনি দ্বীপ থেকে সূর্যাস্তের দৃশ্য উপভোগ করতে পারেন। হোটেলে থাকার পয়সা উসুল হয়ে যাবে।

jagonews24

কিশোরগঞ্জের নিকলি হাওর। দু’পাশে জল থইথই। আর চোখের ওপর সূর্য। আসার পথেই সূর্যাস্তের দৃশ্য কিন্তু ভ্রমণক্লান্তি মুছিয়ে দিতে সক্ষম। তাই কবি রুদ্রের কবিতা দিয়েই শেষ করি, ‘তোমায় নিয়ে একদিন সূর্যাস্ত দেখতে যাবো/ দেখতে যাবো সমুদ্রের বিশালতা।/ হাতে হাত রেখে দেখব সূর্য আর সমুদ্রের ডুবে যাওয়া প্রেম।’

লেখক: কবি, প্রাবন্ধিক ও ভ্রমণলেখক।

  • সর্বশেষ - ভ্রমণ