১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২১, ০৯:৪৪ মিঃ
উৎপাদন কারখানাগুলো চীন থেকে সরিয়ে বাংলাদেশে আনার জন্য জাপানি প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিশেষ প্রণোদনা দিচ্ছে জাপান সরকার। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিদেশি বিনিয়োগের জোয়ার আসতে চলছে বলে আশা করা হচ্ছে। মঙ্গলবার প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানি রাষ্ট্রদূত নাওকি ইতো এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, চীনে বৈশ্বিক মহামারি শুরুর সঙ্গে সঙ্গে জাপানি প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য সরবরাহ ব্যবস্থায় বৈচিত্র্য আনা জরুরি হয়ে ওঠে। এটা বাংলাদেশের জন্য একটা ভালো সুযোগ এনে দিচ্ছে।
জাপান এমন সময় প্রতিষ্ঠানগুলোকে কারখানা স্থানান্তরে উৎসাহিত করছে, যখন সেই দেশেরই প্রতিষ্ঠানগুলোকে টানতে বাংলাদেশে একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি হচ্ছে। এই শিল্প এলাকাটি গড়ে উঠছে রাজধানী ঢাকা থেকে মাত্র ৩২ কিলোমিটার দূরবর্তী (নারায়ণগঞ্জের) আড়াইহাজার উপজেলায় এক হাজার একর জমির ওপর। সেখানে ২০ বিলিয়ন ডলার জাপানি বিনিয়োগ আসবে বলে আশা করছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ।
একদিকে ভিয়েতনাম-বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতে অবকাঠামোর উন্নয়ন হয়েছে, অন্যদিকে চীনে বেড়েছে মজুরি ব্যয়। এ কারণে বেশ কয়েক বছর ধরেই জাপানি প্রস্তুতকারকরা স্বল্প মজুরি এবং সরবরাহ ব্যবস্থায় বৈচিত্র্য আনতে চীন থেকে কিছু ব্যবসা সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।
নাওকি ইতোর তথ্যমতে, গত ১০ বছরে বাংলাদেশে কার্যক্রম পরিচালনা করা জাপানি প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা তিনগুণ বেড়ে প্রায় ৩০০’তে দাঁড়িয়েছে।
তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশে প্রায় এক বিলিয়ন ডলারের শিল্পাঞ্চল তৈরিতে বিশেষ ঋণ হিসেবে ৩৫০ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করেছে জাপান। বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরিতে গোটা এশিয়ার মধ্যেই এত বড় সহযোগিতা আর হয়নি বলেও জানিয়েছেন বাংলাদেশ নিযুক্ত জাপানি রাষ্ট্রদূত।
ইতোর কথায়, ২০২২ সালে চালু হতে যাওয়া আড়াইহাজার শিল্প পার্কে নতুন করে বিনিয়োগ করতে পারে সুজুকি মোটর ও মিৎসুবিশি করপোরেশনের মতো জাপানি গাড়িনির্মাতারা। বাংলাদেশে বর্তমানে বৃহত্তম জাপানি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে রয়েছে জাপান টোব্যাকো এবং হোন্ডা মোটরের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো।
ব্লুমবার্গ বলছে, দক্ষিণ এবং দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভৌগলিক অবস্থান দখল করে রয়েছে বাংলাদেশ। এখানে দুই বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ জাপানিদের ভূরাজনৈতিক কৌশলের অন্যতম অংশ।
করোনাভাইরাস মহামারি সত্ত্বেও গত জুনে শেষ হওয়া অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার বেড়েছে ৫ দশমিক ২ শতাংশ, আর চলতি অর্থবছরে তা ৭ দশমিক ৪ শতাংশ বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও এটি আগের পূর্বাভাসে বলা ৮ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধির চেয়ে কম, তারপরও দেশটি আঞ্চলিক অন্য প্রতিযোগীদের তুলনায় অনেক এগিয়ে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
নাওকি ইতোর ভাষ্যমতে, ভারত এবং বঙ্গোপসাগরের মাঝামাঝি অবস্থান করা বাংলাদেশে জাপানি প্রতিষ্ঠানগুলোর গন্তব্য হিসেবে ‘ভালো ও শক্তিশালী’ সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিবেশীদের তুলনায় বাংলাদেশে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের গতিও দ্রুততর।
সর্বস্বত্ব: এমআরএল মিডিয়া লিমিটেড
ঢাকা অফিস: মডার্ণ ম্যানসন (১৫ তলা), ৫৩ মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা-১০০০
ময়মনসিংহ অফিস: হাসনাইন প্লাজা (দ্বিতীয় তলা), ৭ মদন বাবু রোড, ময়মনসিংহ-২২০০
সেলফোন: ০৯৬১১-৬৪৫২১৫, ০৯৬৯৭-৪৯৭০৯০
ই-মেইল: jagrota2041@gmail.com
ফোন :
ইমেইল :