, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ অনলাইন সংস্করণ

শেরপুরে ঘরবন্দি শহরবাসী, উল্টো চিত্র গ্রামে

  নিজস্ব প্রতিবেদক

  প্রকাশ : 

শেরপুরে ঘরবন্দি শহরবাসী, উল্টো চিত্র গ্রামে

শেরপুরে লকডাউন কার্যকর করতে প্রশাসনের সঙ্গে মাঠে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। অপ্রয়োজনে ঘর থেকে বের হলেই গুনতে হচ্ছে জরিমানা। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় শহরের মানুষ ঘরে থাকলেও পুরো উল্টো চিত্র শেরপুরের গ্রামগুলোতে।

শেরপুরে প্রতিদিনই বাড়ছে করোনা শনাক্তের সংখ্যা। সেই সঙ্গে বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও। সংক্রমণ ও মৃতের আশি শতাংশই শহরে। তাই লকডাউনের এ সময়ে মানুষকে ঘরে রাখতে কঠোর অবস্থানে প্রশাসন। অকারণে বাইরে বের হলেই ভ্রাম্যমাণ আদালতের সাজা, গুনতে হচ্ছে জরিমানাও। জেলার পাঁচ উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও মোড়ে বসানো হয়েছে পুলিশের চেকপোস্ট। বাড়ানো হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল।

শেরপুর পৌর শহরে করোনার সংক্রমণ রোধে পৌর কাউন্সিলরদের নেতৃত্বে নিজ-নিজ এলাকায় তৈরি করা হয়েছে রেসপন্স টিম। তাদের সঙ্গে কাজ করছে রেড ক্রিসেন্ট ও জেলা প্রশাসনের করোনা ইমার্জেন্সি স্বেচ্ছাসেবী সাপোর্ট টিমের সদস্যরাও। সবমিলিয়ে শহরের অবস্থা ভালো থাকলেও উল্টো চিত্র দেখা গেছে গ্রামে। জেলা প্রশাসন ও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে সাময়িক প্রচারণা থাকলেও লকডাউন মানাতে বা মানুষকে ঘরে ফেরাতে তেমন কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়েনি গ্রামগুলোতে।

জেলা শহরের বাইরে গ্রামে এখনো উপেক্ষিত স্বাস্থ্যবিধি। মাস্ক নেই বেশিরভাগ মানুষের মুখে। দোকান খোলা রাখার পাশাপাশি জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছেন অনেকে। শুধু গ্রাম নয় জেলা সদরের বাইরে শ্রীবরদী, ঝিনাইগাতী, নকলা ও নালিতাবাড়ী উপজেলাতেও তেমন স্বাস্থ্যবিধি চোখে পড়েনি গত ছয়দিনে। লকডাউন নির্দেশনার প্রথম দিনে কিছুটা কঠোরতা থাকলেও বাকি পাঁচদিনে তেমন কঠোরতা দেখা যায়নি প্রশাসনের।

jagonews24

স্থানীয় বাজিতখিলা বাজারের কলিম মিয়ার সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, এখনো বেশির ভাগ চায়ের দোকান খোলা। প্রথমদিন পুলিশ এসে চায়ের চুলায় পানি ঢাইলা দিয়া গেছিলো। হেরপর থেকে আর আহে নাই। এহন সব দুহান আটটা নয়টা পর্যন্ত খোলা থাহে।

ঝিনাইগাতীরর বাকাকুড়া বাজারের আকাশ মিয়া বলেন, ঝিনাইগাতী বাজারেও ম্যালা দুহান খুলা থাহে। তাই আমরাও খুলা রাখছি। গ্রামের দিকে করোনা নাই। আমরা গরীব মানুষরে করোনা ধরবো না।

শ্রীবরদীর ভায়াডাঙ্গা বাজারের নুরে আলম বলেন, শ্রীবরদী থেকে ভায়ডাঙ্গা পর্যন্ত পুলিশ করোনার কারণে টহল দেয়া কঠিন। এ সুযোগে মানুষ এহনো বাইরে আসে, দোকানে আড্ডা চলে।

শেরপুরের সিভিল সার্জন ডা. একেএম আনোয়ারুর রউফ বলেন, শেরপুরের এ ভয়াবহ অবস্থায় সবার সচেতন হওয়া ছাড়া বিকল্প কিছু নেই। সবাইকে সচেতন হতে হবে। নিজেদের প্রয়োজনেই ঘরে থাকতে হবে। নতুবা আমাদের অবস্থা আরও ভয়াবহ হতে পারে।

শেরপুরের পুলিশ সুপার হাসান নাহিদ চৌধুরী বলেন, শহরে সংক্রমণের আধিক্যের কারণে শহরে বেশি ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যদের নিয়েও আমরা সচেতনতা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।

জেলা প্রশাসক মোমিনুর রশীদ বলেন, মানুষকে ঘরে রাখতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের ১৬ টিম পুরো জেলায় কাজ করছে। এর বাইরে আমরা জনপ্রতিনিধি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়েও পুরো জেলায় কাজ করে যাচ্ছি।

  • সর্বশেষ - মহানগর