, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ অনলাইন সংস্করণ

ময়মনসিংহে জমেছে ঈদের কেনাকাটা, দাম নিয়ে বিপাকে ক্রেতা

  নিজস্ব প্রতিবেদক

  প্রকাশ : 

ময়মনসিংহে জমেছে ঈদের কেনাকাটা, দাম নিয়ে বিপাকে ক্রেতা

করোনা সংক্রমণের কারণে গত দুই বছর মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ম্লান হয়ে যায় ঈদের আনন্দও। তবে এ বছর করোনা প্রাদুর্ভাব কমে যাওয়ায় জীবনযাত্রায় ফিরেছে স্বাভাবিক ছন্দ। আর বিধিনিষেধ না থাকায় জমে উঠতে শুরু করেছে ময়মনসিংহের ঈদ বাজার। তবে অন্যবারের চেয়ে দাম বেশি হওয়ায় বিপাকে ক্রেতারা।

ময়মনসিংহ নগরীর স্টেশনরোড, গাঙিনারপাড়, নতুনবাজার, রামবাবু রোড ও চরপাড়ায় সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, ছোট-বড় সব ধরনের শপিংমল, কাপড়ের দোকান, খ্যাতনামা ফ্যাশন হাউজ, ব্র্যান্ডশপ, শো-রুম, এমনকী ফুটপাতেও জমে উঠেছে ঈদের বেচাকেনা। নগরীর প্রধান প্রধান বিপণিবিতান, শপিংমল ও শো-রুমগুলোতে পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। এছাড়া ক্রেতারাও পছন্দের পোশাক কিনতে ছুটছেন এক মার্কেট থেকে আরেক মার্কেটে।

তবে ক্রেতারা বলছেন, করোনার বিধিনিষেধের কারণে গত দুই বছর কেনাকাটা করতে না পারলেও এবার সুযোগ পেয়ে কেনাকাটা করছেন। তবে, দাম বেড়ে যাওয়ায় অনেকেই চাহিদা অনুযায়ী কেনাকাটা করতে পারছেন না।

আর বিক্রেতারা বলছেন, করোনার কারণে গত দুই বছরের ক্ষতি পুষিয়ে নিতেই এবার বড় বিনিয়োগ করেছেন তারা। তবে, পণ্যের দাম বাড়া ও করোনার প্রভাব পুরোপুরি না কাটায় ক্রেতা কম। যেহেতু ঈদের আরও বেশ কয়েকদিন বাকি তাই শেষের দিকে ক্রেতা বাড়তে পারে বলেও আশা করছেন তারা।

আজাদ বাজারের বিক্রেতা শফিকুল আলম বলেন, করোনার প্রভাব এখনো কাটেনি। বাজারে ক্রেতার সংখ্যা কম। আমরা যেমন আশা করেছিলাম তেমন না। তবে ঈদের আগে ক্রেতা কিছু বাড়তে পারে।

আজাদ বাজারে আসা ফারজানা মৌ নামে এক ক্রেতা বলেন, শপিংমলগুলোতে ক্রেতার চাহিদা মতো সব ধরনের পোশাক আছে। তবে সবকিছুরই দাম একটু বেশি মনে হচ্ছে। আমি একটা ইন্ডিয়ান সারারা থ্রি-পিস কিনেছি। দাম নিয়েছে সাড়ে ৪ হাজার টাকা।

নগরীর বারীপ্লাজার বিক্রেতা মাহবুবুর রহমান বলেন, আমার শো-রুমে ছেলেদের সব ধরনের পোশাক রয়েছে। তবে ছেলেরা এবার কেনাকাটা একটু কম করছে বলে মনে হচ্ছে। যাই হোক এখনো ঈদের বেশ কিছুদিন বাকি রয়েছে। আশা করছি, প্রত্যাশা পূরণ হবে।

নগরীর শম্ভুগঞ্জ থেকে কাজী টাওয়ারে কেনাকাটা করতে আসা সেলিনা বলেন, দুই মেয়েকে নিয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে মার্কেটে ঘুরে একজনের থ্রি-পিস কিনতে পেরেছি। এখনো একজনের জন্য কেনা বাকি। প্রতিবারের চেয়ে দাম বেশি মনে হচ্ছে। বাজেটের মধ্যে মেলানো যাচ্ছে না।

গাঙ্গিনাপাড় খাদি স্টোরের মালিক এমদাদুল হক বলেন, গত দুই বছর করোনার কারণে আমরা ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত। এই বছর করোনার প্রকোপ অনেকটা কমেছে। আমরা খুবই আশাবাদী এই ঈদে ভালো বিক্রি হবে। এতে আমরা ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নিতে পারবো।

নগরীর কাজী টাওয়ারের শাকিরা ফ্যাশন হাউজে কথা হয় নাসরিন সুলতানা নামে এক গৃহিণীর সঙ্গে। তিনি বলেন, দুই বছর পর পরিবারের সবাইকে নিয়ে মার্কেটে এসে কেনাকাটা করছি। ভিড় ও ভোগান্তি এড়াতে একটু আগেভাগে মার্কেটে এসেছি। নিজের পাশাপাশি পরিবারের সবার জন্য কেনাকাটা করেছি। তবে, প্রত্যেকবারের চেয়ে দাম কিছুটা বেশি মনে হচ্ছে।

ত্রিশাল থেকে শাড়ি কিনতে আসা ফাতেমা নাসরিন বলেন, প্রতিবারের চেয়ে এবার শাড়ি ও লেহেঙ্গার দাম অনেক বেশি মনে হচ্ছে। একটা লেহেঙ্গা পছন্দ করেছি। কিন্তু ৪ হাজার টাকার নিচে দিচ্ছে না। এদিকে, বাজেটের মাঝে শাড়িও মেলাতে পারছি না।

ফুটপাতের ব্যবসায়ী হরিদাস ঠাকুর বলেন, গরমের বিষয়টি মাথায় রেখে আমরা পোশাক তুলেছি দোকানে। মেয়েদের সারারা, গারারা, লেহেঙ্গা, কুর্তি ও ডিভাইডার জামা বেশি বিক্রি হচ্ছে। সামনে আশা রাখছি আরও ভালো হবে।

নগরীর কাঁচিঝুলি থেকে খাদি স্টোরে কেনাকাটা করতে আসা দুই তরুণী বলেন, চাহিদা অনুযায়ী সব ধরনের পোশাক আছে। অনেকক্ষণ থেকে দেখছি কিন্তু দাম বেশি হওয়ায় এখনো কিনতে পারিনি। দেখা যাক, শেষ পর্যন্ত কিনতে পারি কি না।

এ বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ কামাল আকন্দ বলেন, মানুষজন যাতে স্বাচ্ছন্দ্যে কেনাকাটা করতে পারে এবং যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে।

  • সর্বশেষ - ময়মনসিংহ অঞ্চল