কম দামে ফ্ল্যাট কেনা যাবে যেসব এলাকায়
প্রকাশ :

মধ্যবিত্ত বা উচ্চবিত্ত, সঞ্চয় যার যেমনই হোক না কেন, বাড়ির স্বপ্ন কে না দেখেন? কিন্তু ফ্ল্যাটের চড়া মূল্যের এই সময়ে ঢাকার মাঝে কয়েক কোটি টাকা খরচ করে ফ্ল্যাট কেনা অনেকের পক্ষেই সম্ভব হয় না। তাদের বাজেটের সাথে সামঞ্জস্য রেখেই নিতে হয় ফ্ল্যাট কেনার সিদ্ধান্ত। এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হয়ে ওঠে, ঢাকার মাঝে কম দামে ফ্ল্যাট কেনা যায় কোন এলাকায়?
বিপ্রপার্টির তথ্য অনুযায়ী, এখনো ঢাকার মাঝে কিছু এলাকায় ফ্ল্যাটের মূল্য তুলনামূলক কম। এলাকাগুলোর ফ্ল্যাটের মূল্যের পার্থক্য বুঝতে পারলে যে কারো জন্য ফ্ল্যাট কেনার সিদ্ধান্তটি সহজ হতে পারে। দেখে নেওয়া যাক, কম বাজেটের মধ্যে ফ্ল্যাট কেনার জন্য ঢাকার সেরা ৫টি এলাকা—
মিরপুর
কম বাজেটের মধ্যে ফ্ল্যাট পাওয়া যায়, এমন
এলাকার তালিকা করতে গেলে শুরুতেই থাকবে মিরপুর। এলাকাটি যেমন ব্যস্ততায়
ভরপুর, ঠিক তেমনই সম্ভাবনায় পরিপূর্ণ। এখানেই গড়ে উঠছে সম্ভাবনাময়
মেট্রোরেলসহ কিছু মেগা প্রজেক্ট। তাই এলাকাটিতে কম দামে ফ্ল্যাট কিনতে
পারলে ভবিষ্যতে সেই ফ্ল্যাটের দাম নিশ্চিতভাবেই বাড়বে।
মিরপুরের সুবিধাজনক দিক হলো—এখানে প্রচুর রেডি ফ্ল্যাট এবং হাউজিং আছে, যা বিক্রিও হচ্ছে বেশ সুলভ মূল্যে। মিরপুরের পল্লবী, পীরেরবাগ, রূপনগর আবাসিক, সেকশন ১, সেকশন ১০, সেকশন ১১, সেকশন ১২, সেকশন ১৫, সেকশন ২, পশ্চিম কাজীপাড়া, পশ্চিম মনিপুর এবং পশ্চিম শেওড়াপাড়ার মতো এলাকায় গড়ে প্রতি বর্গফুট ফ্ল্যাটের দাম মাত্র ৪ হাজার টাকা। অর্থাৎ এলাকাটিতে ১,০০০ থেকে ১,২০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট ৪০-৬০ লাখ টাকায় কিনতে পারবেন। এলাকাকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, শপিংমলসহ প্রয়োজনীয় সবই আছে। যে কারণে লোকেশন ও সুবিধাজনক যাতায়াত বিবেচনা করে বাজেটের মধ্যে ফ্ল্যাট কেনার জন্য মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তরা এ এলাকায় ফ্ল্যাটের মালিক হতে পারেন।
বাড্ডা
পরিবারকে ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা দিতে কম দামে
ফ্ল্যাট কেনার জন্য আরেকটি জনপ্রিয় এলাকা বাড্ডা। কেউ যাদি ব্যাংক বা
আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে হোমলোন না নিয়ে নিজের সঞ্চিত অর্থ দিয়ে খুব কম
বাজেটে ফ্ল্যাট কেনার কথা ভাবেন, তাহলে উত্তর বাড্ডা, মধ্য বাড্ডা,
শাহজাদপুর, দক্ষিণ বাড্ডা, নূরের চালা ও ভাটারার মত এলাকা বেছে নিতে পারেন।
বর্তমানে বাড্ডায় গড়ে প্রতি বর্গফুট ফ্ল্যাটের দাম মাত্র ৪,১০০ টাকা।
অর্থাৎ লোকেশনটিতে ৮০০ থেকে ১,১o০ বর্গফুটের ২ বা ৩ বেডের ফ্ল্যাট পাওয়া
যাবে ৩২ লাখ থেকে ৪৫ লাখ টাকার মধ্যেই। যা বর্তমানে ফ্ল্যাটের দামের
তারতম্য হিসেব করলে নিঃসন্দেহে একটি ভালো সুযোগ। তা ছাড়া কম বাজেটের মাঝে
থেকেও এখান থেকে উপভোগ করা যাবে গুলশান-বনানীর সব নাগরিক সুবিধা।
আফতাবনগর
বাড্ডার খুব কাছেই আরেকটি বড় প্রজেক্ট
আফতাবনগর। কোলাহলহীন এ এলাকায় প্রপার্টির চাহিদা বাড়লেও এখন পর্যন্ত এখানে
ফ্ল্যাটের দাম মধ্যবিত্তের হাতের নাগালেই আছে। বর্তমানে আফতাবনগরে গড়ে
প্রতি বর্গফুট ফ্ল্যাটের দাম ৫,৮০০ টাকা। অর্থাৎ এ এলাকায় ৮০০ থেকে ১,২০০
বর্গফুটের মধ্যে ফ্ল্যাট কিনতে খরচ হবে ৪০ লাখ থেকে ৬০ লাখ টাকা। তাই যারা
সবুজের মাঝে নির্মল পরিবেশে থাকতে চান, বাজেটের মধ্যে ফ্ল্যাট কিনতে এ
এলাকাকে রাখতে পারেন পছন্দের তালিকায়।
দক্ষিণখান
উত্তরার পাশ ঘেঁষে গড়ে ওঠা আরেকটি
সম্ভাবনাময় এলাকা দক্ষিণখান। যেখানে এখনো পর্যন্ত ফ্ল্যাটের দাম বেশ কম। এ
কারণেই মধ্যবিত্তের কাছে ফ্ল্যাট কেনার জন্য দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে
এলাকাটি। তা ছাড়া পুরো দক্ষিণখানই বসবাস উপযোগী। আবাসিকভাবে গড়ে ওঠা রিয়েল
এস্টেট প্রজেক্ট ও নিজস্ব উদ্যোগে নির্মিত অসংখ্য আবাসিক ভবন আছে এখানে।
ফলে কেনা কিংবা বিনিয়োগের জন্য বাজেটের মধ্যে দারুণ সব অ্যাপার্টমেন্ট
পাওয়া যায় এখানে। এ এলাকায় ফ্ল্যাট পাওয়া যায় সবচেয়ে কম দামে। যা শুরু
হচ্ছে মাত্র ২৫ লাখ টাকা থেকে। এ দামে ৮০০-১,০০০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট
সহজেই কেনা যাবে। গড় মূল্যের হিসেবেও এ এলাকায় প্রতি বর্গফুট ফ্ল্যাটের দাম
৩,০০০ টাকা। সুতরাং বাজেট যেমনই হোক, এখানে ৮০০ বর্গফুট থেকে ২,০০০
বর্গফুট, যে কোনো ফ্ল্যাটই কিনে নিতে পারবেন পছন্দমতো।
বসুন্ধরা
বাজেটের মধ্যে ফ্ল্যাট কেনায় বসুন্ধরার
মতো অভিজাত এলাকার নাম কী করে আসে! এটি ভেবেই হয়তো অবাক হচ্ছেন।
আপাতদৃষ্টিতে বসুন্ধরার ফ্ল্যাটগুলো উচ্চমূল্যের মনে হলেও ব্লক জে থেকে
শুরু করে আরেকটু ভেতরের দিকে ফ্ল্যাট পাওয়া যায় বেশ কম দামে। এ জন্যই
বসুন্ধরার ব্লক এ, বি, সি, ডি ও ই’র মতো লোকেশনে ফ্ল্যাটের দাম কোটি
ছাড়ালেও গড়মূল্যে এ এলাকার ফ্ল্যাটের প্রতি বর্গফুটের দাম পড়ছে ৬ হাজার
টাকা। অর্থাৎ বসুন্ধরার মতো এলাকায় ১,০০০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট কিনতে
আপনার খরচ হবে ৬০ লাখ টাকা।