2024-03-29 08:28:56 pm

মানুষকে উন্নত জীবন দিয়েছে আওয়ামী লীগ ময়মনসিংহের বিশাল জনসভায় শেখ হাসিনা

www.focusbd24.com

মানুষকে উন্নত জীবন দিয়েছে আওয়ামী লীগ ময়মনসিংহের বিশাল জনসভায় শেখ হাসিনা

১১ মার্চ ২০২৩, ২২:২৮ মিঃ

মানুষকে উন্নত জীবন দিয়েছে আওয়ামী লীগ ময়মনসিংহের বিশাল জনসভায় শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আন্তর্জাতিকভাবে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছিলো বিএনপি-জামায়াত জোট। দেশের মানুষকে উন্নত জীবন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। বিএনপিসহ তথাকথিত বিরোধীদলগুলো বলে আওয়ামী লীগ সরকার নাকি কিছুই করেনি। আমাদের সময়ে গড়া ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধা নিয়ে ঠিকইতো তারা সরকারের সমালোচনা করে। ডিজিটাল বাংলাদেশ ও ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ না দিলে সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা করতেন কীভাবে। আমাদের করে দেওয়া সুবিধায় আমাদের বিরুদ্ধেই কথা বলে তারা। তিনি বলেন, উন্নয়নের গতি ধরে রেখে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা ধরে রাখতে হবে। এ জন্য নতুন লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি। ২০৪১ সালে আমাদের হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। আমাদের গ্রাম, কৃষি, সবকিছুই স্মার্ট হবে। আর ২১০০ সালের মধ্যে ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়ন করে এই ভূখণ্ড আরও উন্নত করবো। ময়মনসিংহ নগরীর ঐতিহাসিক সার্কিট হাউজ মাঠে আওয়ামী লীগের বিভাগীয় জনসভায় প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এ সব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, বিএনপির এক নেতা সারাদিন মাইকে বলেন, আমরা নাকি দেশ ধ্বংস করেছি। এখানে উদ্বোধন করা প্রকল্পগুলো কি ধ্বংসের জন্য। আসলে লুটপাট, চুরি ও মিথ্যা বলা বিএনপির অভ্যাস। বিদ্যুৎ উৎপাদন আমরা বাড়াই, বিএনপি কমায়। এখন বিদ্যুতের ব্যবহার বাড়ছে। আমরা চাই সব ঘর আলোকিত হোক। বিভিন্ন দাবির প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ময়মনসিংহে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়সহ আরও কিছু প্রকল্প উপহার দেওয়ার ঘোষণা দেন। এর আগে ২০১৫ সালের ১৩ অক্টোবর ময়মনসিংহ বিভাগ ঘোষণার পর ২০১৮ সালের ২ নভেম্বর সার্কিট হাউজ মাঠের জনসভায় ১০৩টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ৯৩টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের এক ইঞ্চি জমিও খালি রাখা যাবে না। অনাবাদি জমিকে চাষের আওতায় আনতে হবে। মোট কথা উৎপাদন আরও বাড়াতে হবে। কারণ আমরা কারও কাছে হাত পাততে চাই না। আর ভিক্ষা করতে চাই না। আমার নিজের আওতায় যত জমি আছে তাতে চাষ করেছি। আপনারাও এক ইঞ্চি জমি খালি রাখবেন না। আমরা যদি উৎপাদন বাড়াতে পারি তাহলে অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ হলেও খাওয়া-পরা চলবে। আমরা আর কখনও সমস্যায় পড়বো না। তিনি বলেন, আমিষের উৎপাদন বাড়াতে হবে। আবাদি জমির পাশাপাশি আমাদের জলাভূমিকেও ব্যবহার করতে হবে। মাছ চাষের মাধ্যমে জলাভূমিরও সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। কৃষি ও কৃষকের জন্য বঙ্গবন্ধুর অকৃত্রিম ভালোবাসার কথা আমরা ভুলি নাই। যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনের সময় বিদেশী সাংবাদিকরা বঙ্গবন্ধুকে প্রশ্ন করেছিলেন আপনি কীভাবে কী করবেন। তখন বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন আমার দেশের উর্বর মাটি ও মানুষ দিয়েই আমরা ঘুরে দাঁড়াবো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুব সমাজকে উদ্যোক্তা হিসেবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, দেশের যুব সমাজকে উন্নয়নের অংশীদার হতে হবে। আমরা যুবকদের আত্মকর্মসংস্থানের জন্য বিভিন্ন ধরণের প্রশিক্ষণ ও ঋণের ব্যবস্থা করেছি। যুবকরা এসব সুযোগ নেওয়ার মাধ্যমে উদ্যোক্তা হিসেবে নিজের কর্মস্থলের পাশাপাশি আরও মানুষের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে পারবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার দুপুর সোয়া ২ টায় হেলিকপ্টারে রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামে আসেন। সার্কিট হাউজে গিয়ে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেওয়ার পর দুপুর ২ টা ৫২ মিনিটে জনসভাস্থলের কাছে ৫৭০ দশমিক ০৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ৭৩টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ২৭৬২ দশমিক ২৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩০টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। পরে তিনি জনসভা মঞ্চে যান।


ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলমের সভাপতিত্বে জনসভা পরিচালনা করেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মসিক মেয়র মোঃ ইকরামুল হক টিটু এবং মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহিত উর রহমান শান্ত। স্মরণকালের বৃহৎ জনসভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, সাংগঠনকি সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ এমপি, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান, সমাজ কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা উপাধ্যক্ষ রেমন্ড আরেং ও মারুফা আক্তার পপি প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। অন্যান্যের মধ্যে জাতীয় সংসদের হুইপ আতিউর রহমান আতিক এমপি, নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ এমপি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী মঞ্চে আসার পর ময়মনসিংহ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা এবং প্রতীকী নৌকা উপহার দেওয়া হয়। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে সার্কিট হাউজ মাঠে আয়োজিত জনসভায় স্মরণকালের বৃহৎ লোক সমাগম ঘটে। সকাল থেকেই ময়মনসিংহ বিভাগের বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা আসতে থাকেন সার্কিট হাউজ মাঠের জনসভাস্থলে। মহিলাদের উপস্থিতি ছিলো উল্লেখ করার মতো। সহস্রাধিক যানবাহনে বিভিন্ন জেলা থেকে লোকসমাগম ঘটানোর ব্যবস্থা করেন নেতারা। বিভিন্ন স্টেশন থেকে ময়মনসিংহ জংশন রেলওয়ে স্টেশনে ৮টি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়। মিছিল ও শ্লোগানের নগরীতে পরিণত হয় ময়মনসিংহের রাজপথ। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা পিভিসি, ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টার ও তোরণে প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান। বসে ছিলেন না দলটির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরাও। দিনরাত পরিশ্রম করেন প্রিয়ে নেত্রীকে বরণ করার জন্য। প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষ্যে আলাদা বর্ধিত সভা করেছে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছিলো ময়মনসিংহ নগরীকে।


শনিবারের জনসভাকে ঘিরে বার বার সামনে আসছিলো আওয়ামী লীগ সরকারের দীর্ঘ ১৪ বছর ময়মনসিংহ নগরীকে ঢেলে সাজানোর বিষয়টি। যা আগের ৩৭ বছরকে ছাড়িয়ে গেছে। ২০১৮ সালে পৌরসভাকে বিলুপ্ত করে সিটি কর্পোরেশনের কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর ৪ বছরে নগরীতে রেকর্ড পরিমাণ উন্নয়ন হয়েছে। মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ ইকরামুল হক টিটু’র নেতৃত্বে দেশের নবীন নগরীর প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডের প্রধান সড়ক এবং অলিগলিতে চলছে সড়ক ও ড্রেন নির্মাণ। নগরজুড়ে চলছে ১ হাজার ৫৭৫ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প। এর মধ্যে সড়ক, ড্রেনেজ, অবকাঠামো নির্মাণ ও সেবা উন্নতকরণ প্রকল্প রয়েছে। আগামী বছর প্রকল্পগুলোর কাজ শেষ হবে। নির্মাণ করা হচ্ছে ৯৭ কিলোমিটার আরসিসি সড়ক, ৭৮ কিলোমিটার বিসি ও ২ কিলোমিটার সিসি সড়ক, ৮৫ কিলোমিটার ড্রেন এবং ৭ কিলোমিটার ফুটপাত। এছাড়া অন্যান্য প্রকল্পের আওতায় ৮০ কিলোমিটার নতুন সড়ক ও ৪৩ কিলোমিটার ড্রেনের কাজ সম্পন্ন করেছে সিটি কর্পোরেশন। চোখে পড়ার মতো উন্নয়ন হয়েছে নগরীর নবসৃষ্ট ২২ থেকে ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সিটিতে যুক্ত হওয়া এলাকাগুলোতে প্রশস্ত সড়ক ও ড্রেন পাল্টে দিয়েছে মানুষের জীবনমান। এসব ওয়ার্ডের কোথাও শতভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কোথাও প্রকল্প চলমান রয়েছে। একই সাথে এতো উন্নয়ন কাজ আর কখনও হয়নি প্রাচীন এই নগরীতে। সূত্র মতে, ময়মনসিংহ নগরীর অন্যতম সমস্যা জলাবদ্ধতা নিরসনে ড্রেনেজ অবকাঠামোকে ঢেলে সাজাচ্ছে সিটি কর্পোরেশন। জলাবদ্ধতা নিরসনে আন্ডারগ্রাউন্ড পাইপ ড্রেনসহ বিভিন্ন এলাকায় ড্রেনেজ নেটওয়ার্ক নির্মাণ করায় মূল সড়কে জলাবদ্ধতার সমস্যা মিটে গেছে। ড্র্রেনেজ নেটওয়ার্ক উন্নত করায় নগরীর ভেতর দিয়ে বয়ে চলা খালগুলো থেকে সহজে পানি বের হবে। ইতিমধ্যে নগরীর বাজারসহ বিভিন্ন এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসন হয়েছে। নতুন বাজার রেল ক্রসিং থেকে ব্রহ্মপুত্র নদীর পাড় ব্যাট-বল চত্বর পর্যন্ত আন্ডারগ্রাউন্ড পাইপ ড্রেন নির্মাণ শেষ হলে নগরবাসী জলাবদ্ধতা থেকে অনেকটাই রক্ষা পাবেন। নগরীর খালগুলো থেকে পানি বের হয়ে যাওয়াটা আরও সহজ হবে। যা সামগ্রিক জলাবদ্ধতা পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটাবে। বিভিন্ন ওয়ার্ডের ১৬৫ কিলোমিটার এলাকা পোলসহ (খুটি) নৌকা সাদৃশ্য আধুনিক এলইডি বাতি স্থাপন করা হয়েছে। প্রায় ৪৯ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়নের পর এখন রাতের নগরী হয়ে উঠে মোহনীয়। বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ঘটেছে বড় পরিবর্তন। শম্ভুগঞ্জের ডাম্পিং স্টেশনের পাশ দিয়ে মানুষ আগে দুর্ভোগ নিয়ে চলাচল করলেও এখন তা বদলে গেছে। রাতের বেলা বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য দৈনিক অন্তত: ৫০০ টন বর্জ্য সংগ্রহে ক্লিন সিটি এবং মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় প্রিজম ওয়েস্ট কোম্পানিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য একটি প্রকল্প।




উপদেষ্টা সম্পাদক: ডি. মজুমদার
সম্পাদক: মীর আক্তারুজ্জামান

সর্বস্বত্ব: এমআরএল মিডিয়া লিমিটেড
ঢাকা অফিস: মডার্ণ ম্যানসন (১৫ তলা), ৫৩ মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা-১০০০
ময়মনসিংহ অফিস: হাসনাইন প্লাজা (দ্বিতীয় তলা), ৭ মদন বাবু রোড, ময়মনসিংহ-২২০০
সেলফোন: ০৯৬১১-৬৪৫২১৫, ০৯৬৯৭-৪৯৭০৯০ ই-মেইল: jagrota2041@gmail.com
ফোন :
ইমেইল :