ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে না দাঁড়িয়ে দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য দিচ্ছে বিএনপি: কাদের
প্রকাশ :
ফাইল ফটো
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বঙ্গবাজারে স্মরণকালের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়িয়ে মালামাল রক্ষায় প্রাণপণ চেষ্টা করেছেন। অথচ বিএনপি তাদের পাশে না দাঁড়িয়ে এ ধরনের কোনো উদ্যোগ না নিয়ে দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য দিচ্ছে। বিষয়টিকে চিরাচরিত অপরাজনীতির বহিঃপ্রকাশ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বুধবার (৫ এপ্রিল) মির্জা ফখরুলের বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ এবং ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের প্রতি সহমর্মিতা জ্ঞাপন করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এ ধরনের মর্মান্তিক দুর্ঘটনা অত্যন্ত বেদনাদায়ক।
তিনি বলেন, অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিষয়টি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ, তদারকি ও নির্দেশনা দিচ্ছেন। তারই নির্দেশে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তারা আগুন নিয়ন্ত্রণে সরকারি সংস্থাগুলোকে সহযোগিতা করছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, অগ্নিকাণ্ডে ৫ হাজার দোকান ভস্মীভূত করার পাশাপাশি পুড়িয়ে ছাই করেছে ব্যবসায়ীদের স্বপ্ন ও জীবিকার অবলম্বন। আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের ৪৮টি ইউনিটের পাশাপাশি সশস্ত্র বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটসহ সরকারের ছয়টি সংস্থা সরাসরি অংশগ্রহণ করে এবং তাদের সর্বোচ্চ সক্ষমতা দিয়ে চেষ্টা করে। সরকারি সংস্থাসমূহের সদস্যবৃন্দ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের মালামাল রক্ষায় প্রাণপণ চেষ্টা করেন।
তিনি আরও বলেন, অথচ এ রকম ভয়াবহ একটি দুর্ঘটনায় সেখানে গিয়ে উদ্ধার তৎপরতায় সাহায্য করা বা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের মালামাল রক্ষায় এগিয়ে আসা, এ ধরনের কোনো উদ্যোগ বিএনপি গ্রহণ করেনি। বিএনপি আসলে মানুষের জন্য রাজনীতি করে না, জনগণের প্রতি তাদের কোনো দায়বদ্ধতা নেই। তারা মানুষের দুঃখ-দুর্দশা লাঘব না করে শুধু ঘরে বসে থেকে বিবৃতি প্রদান করে। এ রকম ভয়াবহ দুর্ঘটনা নিয়েও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য তাদের চিরাচরিত অপরাজনীতির বহিঃপ্রকাশ।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন- ‘বিএনপি তামাশার নির্বাচনে বিশ্বাস করে না’। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘অগণতান্ত্রিক রাজনৈতিক শক্তির প্রতিভূ বিএনপি দেশে বার বার তামাশার নির্বাচন করেছে। সামরিক শাসন জারি রেখে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ১৯৭৭ সালে হ্যাঁ/না ভোট, সেনাপ্রধানের দায়িত্বে থেকে ১৯৭৮ সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন এবং ১৯৭৯ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান করেছিল। তারই পদাঙ্ক অনুসরণ করে খালেদা জিয়া রাষ্ট্রক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য ১৯৯৬ সালে ১৫ই ফেব্রুয়ারি ভোটারবিহীন প্রহসনের নির্বাচন করেছিল। অনুরূপভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য ২০০৭ সালে বিএনপি যে নির্বাচনের আয়োজন করে গণআন্দোলনের মুখে তা বন্ধ করতে বাধ্য হয়।
গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে এদেশে সরকার পরিবর্তন হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশে জনগণের ভোটের মাধ্যমেই ক্ষমতার পরিবর্তন হবে। দেশে অগণতান্ত্রিক রাজনীতির প্রবর্তক বিএনপির ওপর জনগণ আর আস্থা রাখতে চায় না।
ওবায়দুল কাদের বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলামের দাবি খালেদা জিয়াকে নাকি সরকার গৃহবন্দী করে রেখেছে এবং তারেক জিয়াকে নির্বাসনে পাঠিয়েছে। খালেদা জিয়াকে গৃহবন্দী ও তারেক রহমানকে নির্বাসনে আওয়ামী লীগ সরকার পাঠায়নি। বিএনপি যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য চিৎকার করে ওয়ান-ইলেভেনে সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারই তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। সেই মামলায় তারা দুজন আদালত কর্তৃক দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। আদালতের রায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে খালেদা জিয়া সাজা ভোগ করছেন। অন্যদিকে দুর্নীতির দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি তারেক রহমান রাজনীতি করবে না বলে মুচলেকা দিয়ে বিদেশে পালিয়েছিল।
তিনি বলেন, বিএনপি মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য দিয়ে দেশের জনগণকে বিভ্রান্ত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। বিএনপির আমলে লুটপাটের মাধ্যমে দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া হয়েছে। দুর্নীতিই ছিল তাদের রাজনীতির একমাত্র নীতি। দেশের জনগণ বিএনপির সেই অপশাসনের দুঃসময়ে ফিরে যেতে চায় না।