7 October 2024, 01:35:42 PM, অনলাইন সংস্করণ

প্রাণঘাতি করোনার কাছে জীবন বাজি রেখে শীর্ষ জনপ্রতিনিধির ভূমিকায় মসিক মেয়র টিটু

  শাহ মোহাম্মদ রনি

  প্রকাশ : 

প্রাণঘাতি করোনার কাছে জীবন বাজি রেখে শীর্ষ জনপ্রতিনিধির ভূমিকায় মসিক মেয়র টিটু
16px

প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাসের কাছে জীবন বাজি রেখে দেশের অন্যতম শীর্ষ জনপ্রতিনিধির ভূমিকা রাখছেন ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের মানবিক মেয়র মোঃ ইকরামুল হক টিটু। মহানুভব এ মানুষটি সকাল থেকে দিনব্যাপী নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান করে তদারকি করেন অর্ধশত টিমের কাজ। বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে (২০-০৪-২০২০) সোমবার পর্যন্ত মাঠে অবস্থান করেন মেয়র টিটু। সামাজিক (শারীরিক) দূরত্ব বজায় রেখে এখন পর্যন্ত নগরীর ৬০ হাজার হতদরিদ্র এবং অসহায় পরিবারের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ত্রাণের চাল ও আলু এবং মেয়রের ব্যক্তিগত উদ্যোগে খাদ্যপণ্য বিতরণ করা হয়েছে। অসহায় নাগরিকদের মধ্যে আরও ত্রাণ ও খাদ্যপণ্য বিতরণ, শিশু ও বস্তিবাসীদের মধ্যে খাবার বিতরণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। মেয়র টিটু তদারকি করছেন সড়ক ও অলিগলি জীবাণুমুক্ত করার কাজ। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছাড়া নাগরিকদের ঘরের বাইরে বের না হওয়ার জন্য তিনি প্রচারপত্র বিলি এবং হ্যান্ড মাইকে প্রচারণা চালান। আগে থেকেই মহানগর আওয়ামী লীগের এই নেতা নগরীর সর্বস্তরের মানুষের প্রিয়। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে কাজ শুরুর পর তিনি শুধু নগরবাসী নয় জেলা ও ময়মনসিংহ বিভাগবাসীর মনেও দাগ কেটেছেন। দেশের অধিকাংশ জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতা যখন স্বেচ্ছায় লকডাউনে তখন আক্রান্তের ঝুঁকি নিয়ে নাগরিক সেবা দিয়ে যাচ্ছেন মসিকের জননন্দিত মেয়র টিটু। বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার নাগরিকসহ প্রশাসন, গোয়েন্দা সংস্থা, রাজনৈতিক নেতা ও গণমাধ্যম কর্মীরা অকপটে স্বীকার করেন টিটুর মহানুভবতা।


জানা যায়, জনসমাগম ঠেকাতে নগরীর মেছুয়া বাজার থেকে কাচারীঘাটে কাঁচা বাজার স্থানান্তর করে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছেন মেয়র মোঃ ইকরামুল হক টিটু। সরকারের সামাজিক (শারীরিক) দূরত্ব বজায় রাখার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে ১০ এপ্রিল সকাল থেকে সিটি কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনায় কাঁচা বাজার স্থানান্তর করা হয়। ব্যবসায়ীদের ৩ দিনের সময় বেঁধে দিয়ে তিনি ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে অস্থায়ী বাজার বসানোর ব্যবস্থা করেন। এরপর থেকে মানুষের চাপ কমেছে নগরীর প্রধান মেছুয়া বাজারে। নাগরিকরা এখন নিরাপদে মেছুয়া বাজার থেকে মুদি মালামাল এবং কাচারীঘাটের অস্থায়ী কাঁচা বাজার থেকে সবজি কিনছেন। কাঁচা বাজার স্থানান্তরের বিষয়টি অনুকরণীয় হয়েছে বিভিন্ন মহানগর, জেলা এবং উপজেলা শহরে। এরই মধ্যে ৫টি বিভাগীয় এবং ৪৫টি জেলা শহরের মূল বাজার থেকে ফাঁকা মাঠে কাঁচা বাজার স্থানান্তর করা হয়েছে। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে জনসচেতনতার জন্য নগরীতে বিপুল পরিমাণের প্রচারপত্র বিলি ও মাইকিং, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সিভিল সার্জন অফিস ও স্বেচ্ছাসেবকদের মধ্যে পিপিই বিতরণ, নাগরিকদের মধ্যে মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজেশন ও সাবান বিতরণ, নগরীর বিভিন্ন পয়েন্ট, আবাসিক ও বস্তি এলাকায় হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করেছেন মেয়র টিটু। নিজে উপস্থিত থেকে জীবাণুনাশক ও ব্লিচিং পাউডার মেশানো পানি দিয়ে প্রধান সড়ক এবং ওয়ার্ডগুলোর মূল সড়কসহ অলিগলি ধুয়ে নগরীকে পরিচ্ছন্ন রাখছেন।


সূত্র জানায়, ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন ৪৫ হাজার ৪০০ হতদরিদ্র পরিবারের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ত্রাণের চাল ও আলু বিতরণ করেছে। তবে বরাদ্দ না থাকার কারণে প্রথম দিকে ১৭ হাজার ৪০০ পরিবার আলু সরবরাহ পাননি। সূত্র মতে, প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে পাওয়া ২২৭ মেট্রিক টন চাল ও ৪২ টন আলু সমহারে প্যাকেট করে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে হতদরিদ্র নাগরিকদের মধ্যে বিতরণ করা হয়। অপরদিকে মেয়র টিটু ব্যক্তিগত উদ্যোগে এখন পর্যন্ত ১৫ হাজার অসহায় পরিবারের মধ্যে খাদ্যপণ্য বিতরণ করেন। প্রথম দিকে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী ফুলপুর-তারাকান্দা আসনের এমপি শরীফ আহমেদ-এর কাছ থেকে পাওয়া ১ হাজার ৫০০ প্যাকেট খাদ্যপণ্য অসহায় পরিবারের মধ্যে বিতরণ করা হয়। প্রতিমন্ত্রী মেয়র টিটুকে সাথে নিয়ে টাউন হল প্রাঙ্গণে খাদ্যপণ্য বিতরণ করেন। এ সময় জেলা প্রশাসক মোঃ মিজানুর রহমান, পুলিশ সুপার মোহাঃ আহমার উজ্জামান এবং প্রশাসনের পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সূত্র মতে, ৩ দফায় মেয়র, পুরুষ ও নারী কাউন্সিলররা নগরীর ৩৩টি ওয়ার্ডে ২২৭ মেট্রিক টন ত্রাণের চাল ও ৪২ টন আলু বিতরণ করেন। ৪৫ হাজার ৪০০ হতদরিদ্র পরিবার ৫ কেজি করে ত্রাণের চাল ও ২৮ হাজার পরিবার দেড় কেজি করে আলু পেয়েছেন বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে। সূত্র মতে, কোনো কোনো পয়েন্ট এবং ওয়ার্ডে মেয়র নিজে উপস্থিত থেকে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ত্রাণের চাল ও আলু বিতরণ কার্যক্রম তদারকি করেন। ত্রাণের চাল ও আলু এবং খাদ্যপণ্য বিতরণ অব্যাহত থাকবে বলে সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা গেছে।


জানা যায়, ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোঃ ইকরামুল হক টিটু সকাল থেকে রাত পর্যন্ত নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান করেন। দাঁড়িয়ে থেকে সড়ক এবং অলিগলি জীবাণুমুক্ত করতে জীবাণুনাশক ও ব্লিচিং পাউডার মেশানো পানি ছিটানোর নির্দেশনা দেন। করোনা ভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কার তৃতীয় ধাপে মানুষ যখন অজানা আশঙ্কায় নিমজ্জিত তখনও সড়কে অবস্থান করছেন মেয়র টিটু। জীবন বিপন্ন হতে পারে জেনেও মানুষের জন্য কাজ করে যাওয়ার বিষয়টিকে মহানুভবতার সর্বোচ্চ স্বীকৃতি দিয়েছেন ময়মনসিংহবাসী। একদিনও তিনি দিনের বেলা বাড়িতে অবস্থান করেন নি। গোয়েন্দাদের সাবধানতার বিষয়টিকেও মাথায় নেননি টিটু। নাগরিকদের কল্যাণে জীবন বাজি রেখে নগরী ঘুরে সিটি কর্পোরেশন ও স্বেচ্ছাসেবীদের অর্ধশত টিমের কাজ তদারকি করেন। মন্ত্রণালয়, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, র‌্যাব এবং বিভিন্ন এজেন্সির সাথে যোগাযোগ রেখে সমন্বয় করছেন করোনা পরিস্থিতিতে করণীয়। মসিকের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও স্বেচ্ছাসেবকদের সমন্বয়ে গঠন করেছেন একাধিক কমিটি। সার্বক্ষণিক খোলা রেখেছেন কন্ট্রোল রুম। বস্তির পরিবারগুলোর জন্য কাজ করছে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্প। মসিকের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও পরিচ্ছন্ন কর্মীদের সুরক্ষার জন্য বিতরণ করা হয়েছে পর্যাপ্ত সুরক্ষা সামগ্রী। ১১ বছরের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এবং করোনা পরিস্থিতিতে জীবন বাজি রাখার কারণে মেয়র টিটুকে দেশের অন্যতম ‘শীর্ষ জনপ্রতিনিধি’ উপাধি দিয়েছেন নগরবাসী।


সূত্র জানায়, দেশের সিটি কর্পোরেশন এবং পৌরসভাগুলোর মেয়রদের মধ্যে যেক’জন ব্যাপকভাবে আলোচিত তাদের একজন মোঃ ইকরামুল হক টিটু। নগরীতে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড, সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্প, ক্লিন ইমেজ, বিচক্ষণতা, গ্রহণযোগ্যতা, বলিষ্ঠ নেতৃত্ব এবং সাংগঠনিক দক্ষতার জন্য প্রধানমন্ত্রীর গুডবুকে রয়েছেন মেয়র টিটু। করোনা পরিস্থিতিতে নতুন করে যোগ হয়েছে জীবন বাজি রেখে নাগরিকদের জন্য কাজ করার বিষয়টি। মেয়র মোঃ ইকরামুল হক টিটু সোমবার দৈনিক জাগ্রত বাংলা’কে বলেন, ময়মনসিংহ নগরীর ৮ লাখ মানুষ যদি ভালো না থাকেন- আমি একা ভালো থাকি কিভাবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছি। তিনি বলেন, নাগরিকদের সুরক্ষা দিতে করোনা সঙ্কটের শেষ সময় পর্যন্ত পাশে থাকবো ইনশাআল্লাহ। নাগরিক সুরক্ষার বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল সোমবার দৈনিক জাগ্রত বাংলা’কে জানান, ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন যেসব কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে তা খুবই প্রশংসার দাবি রাখছে। নগরবাসীর প্রিয় মানুষ টিটু প্রাণপ্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী জীবন বাজি রেখে সড়কে অবস্থান করে আমাদের নিরাপত্তার জন্য কাজ করছেন। নিঃসন্দেহে তিনি মানবিক এবং মহানুভব মানুষ। মসিক মেয়রের গৃহীত কর্মসূচি দেশের প্রতিটি জেলার জন্য অনুকরণীয় হতে পারে। করোনা পরিস্থিতিতে বিষয়টি অন্যরকম এক দৃষ্টান্ত।


জানা যায়, গত ১১ বছর ময়মনসিংহ নগরীতে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এবং ইতিহাস সমৃদ্ধ সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্পগুলো নাগরিকদের কাছে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত। সেবার গল্প এখন রূপকথা নয়- বাস্তব। বিশ্লেষকদের মতে, মেয়র টিটু ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন করে আন্দোলিত করেছেন নগরীর লাখ লাখ মানুষকে। তিনি বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছেন। আমূল পরিবর্তন করায় দেশব্যাপী অনুকরণীয় জনপ্রতিনিধিতে পরিণত হয়েছেন। সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভার মেয়ররা এখন তার ব্যবস্থাপনাকে অনুসরণ করেন। পর্যবেক্ষকদের মতে, মেয়র টিটু একজন স্বাপ্নিক মানুষ। সেবার মানসিকতা ও নতুন নতুন কনসেপ্ট বাস্তবায়ন করে নগরীর দৃশ্যপট বদলে দিয়েছেন। শক্তিশালী টিমওয়ার্ক, নিজের কর্ম এবং সাহসিকতায় দেড়শ’ বছরেরও আগে প্রতিষ্ঠিত ময়মনসিংহ (২০১৮ সালে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া পৌরসভা) সিটি কর্পোরেশনকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। নগরবাসীর মতে, মেয়র মোঃ ইকরামুল হক টিটু ময়মনসিংহবাসীর জন্য নিঃসন্দেহে মহান ব্যক্তি। যিনি নিজের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে নগরবাসীর পাশে দাঁড়িয়েছেন।

সম্পাদনায়: নাসিমুল গনি ইশরাক

ছবি কৃতজ্ঞতা: রবিউল ইসলাম ও ইয়াসিন আলী

  • সর্বশেষ - জাতীয়