, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ অনলাইন সংস্করণ

তারেকের ৯ ও জুবাইদার ৩ বছরের কারাদণ্ড

  নিজস্ব প্রতিবেদক

  প্রকাশ : 

তারেকের ৯ ও জুবাইদার ৩ বছরের কারাদণ্ড

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে। এতে তারেক রহমানকে নয় বছরের এবং তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানকে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। বুধবার (২ আগস্ট) বেলা ৪টার দিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মো: আসাদুজ্জামানের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মোশাররফ হোসেন কাজল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে রায় ঘিরে আদালত প্রাঙ্গণে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। সকাল থেকেই ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের হাজতখানার তদারকি অফিসার পুলিশ পরিদর্শক ফারুকুল ইসলাম বলেছেন, ‘আদালত প্রাঙ্গণে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। রায় ঘিরে যেকোনো বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি এড়াতে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে আছে।’এর আগে গত ২৭ জুলাই যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার এ দিন ধার্য করেন আদালত।

দুদক আইনজীবীদের মতে তারা আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে পেরেছেন। তবে বিএনপি সমর্থক আইনজীবী ও তারেক-জুবাইদার পক্ষে আইনি লড়াই করতে আবেদন জমা দেয়া আইনজীবীদের দাবি, এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে নজিরবিহীন দ্রুততম সময়ে। সাক্ষ্য গ্রহণ রাত ৮টা পর্যন্তও হয়েছে। কোর্ট পরিচালনার একটি সময়সূচি দেয়া আছে। আদালতের সময় সূচির বাইরে কোর্ট পরিচালনা করতে হলে নোটিশ দিতে হয়। এমন কোনো নোটিশ তারা কখনো পাননি। এমনকি এই মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের দিন তাদের আইনজীবীরা যাতে এজলাসে থাকতে না পারে- এজন্য পিপির নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীরা মারধর করে বের করে দিয়েছে।

তবে বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের অভিযোগ অসত্য বলে মন্তব্য করেছেন মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আবু। তিনি বলেন, যথাযথ বিধিবিধান অনুসরণ করেই মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। এক্ষেত্রে আইনের কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি। এজলাসে তাদের আইনজীবীদের থাকতে না দেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই মামলার শুনানিতে তাদের অনেক আইনজীবীই পর্যবেক্ষক হিসেবে এজলাসে উপস্থিত ছিলেন। আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের পক্ষে আইনি লড়াই করতে পারেননি। আমরা এই মামলার অভিযোগ প্রমাণে সক্ষম হয়েছি। আমরা আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রত্যাশা করছি।

এ বিষয়ে বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, বর্তমান এই ফ্যাসিস্ট সরকার তারেক রহমানের কাছে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত হয়ে আদালতের মাধ্যমে তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে। ২০০৭ সালের মামলা ২০২৩ সালে এসে রায় দিচ্ছে, কেন? কারণ বিএনপির নেতাকর্মীরা তারেক রহমানের নেতেৃতে সংগঠিত হয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন-সংগ্রামে রাস্তায় নেমে এসেছে। এই অবস্থায় রাজননৈতিকভাবে তারেক রহমানকে আরেকটু প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য এই মামলাটা এনে হাজির করা হয়েছে।

অত্যন্ত তড়িঘড়ি করে মামলাটির বিচার শেষ করা হয়েছে। এমনকি রাত ৮টা-৯টা পর্যন্ত এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে। সাক্ষ্যগ্রহণের সময় পর্যবেক্ষক হিসেবেও আমাদের আইনজীবীদের থাকতে দেয়নি। এ বিষয়ে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের ঢাকা ইউনিটের সভাপতি ও তারেক-জুবাইদার পক্ষে আইনি লড়াই করতে আবেদন জমা দেয়া আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, এ মামলায় মোট ৫৭ জন সাক্ষী ছিল। মাত্র ১৬ কার্য দিবসে ৪২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন আদালত। যা আদালত অঙ্গনে নজিরবিহীন।

  • সর্বশেষ - রাজনীতি