2024-05-04 10:20:32 pm

দাম বেড়েছে সবজি, মুরগির

www.focusbd24.com

দাম বেড়েছে সবজি, মুরগির

২৪ এপ্রিল ২০২০, ১৫:০৫ মিঃ

দাম বেড়েছে সবজি, মুরগির

করোনা ভাইরাসের মধ্যেও বেশকিছু দিন স্থির থাকার পর রোজার আগে রাজধানীর বাজারে বেড়েছে বিভিন্ন সবজির দাম। সেই সঙ্গে বেড়েছে বয়লার ও দেশি মুরগির দামও। তবে মাছ ও অন্যান্য মাংসের দাম স্থির রয়েছে। চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজের পর সবজির দাম বাড়ায় নিম্ন আয়ের মুনুষের ওপর চাপ আরও বেড়েছে।

শুক্রবার (২৪ এপ্রিল) সকালে হাজীপাড়া বৌ-বাজারে সবজি কিনতে আসা রিকশা চালক আলম বলেন, করোনা আতঙ্কে মানুষ এখন ঘর থেকে কম বের হচ্ছে। কিন্তু আমাদের তো ঘরে থাকলে খাবার জুটবে না। তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রিকশা নিয়ে রাস্তায় নামি। কিন্তু সারাদিন রিকশা চালিয়ে একশ টাকাও থাকে না।

তিনি বলেন, যা আয় হয় তা দিয়েই কোনো রকমে সংসার চালানোর চেষ্টা করি। চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজের যে দাম তাতে সংসার চালাতে খুব কষ্ট হচ্ছে। প্রতিদিনই কোনো না কোনো সন্ধ্যা না খেয়ে থাকতে হয়। আজ বাজারে এসে দেখি সবজির দাম বেড়েছে। এতে আমাদের কষ্ট আরও বাড়বে।

রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহে ২০-২৫ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া গাজরের দাম বেড়ে হয়েছে ৩০-৪০ টাকা। ২০ টাকায় বিক্রি হওয়া শসার দাম বেড়ে হয়েছে ৩০ টাকা। ১৫-২০ টাকায় বিক্রি হওয়া বেগুনের দাম বেড়ে হয়েছে ৩০-৪০ টাকা।

গত কয়েক সপ্তাহের মতো এখনো বাজারে সব থেকে দামি সবজি সজনে ডাটা। বাজার ভেদে সজনের ডাটার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকা, যা গত সপ্তাহে কোথাও কোথাও ৬০ টাকা কেজিতে পাওয়া যাচ্ছিল। দাম বাড়ার এ তালিকায় রয়েছে পাকা টমেটোও। গত সপ্তাহে ১০-১৫ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া পাকা টমেটো এখন ২০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না।

রোজার আগে বেশকিছু সবজির দাম বাড়লেও করলা, পেঁপে, বরবটি, ঝিঙা, চিচিংগার দাম আগের মতোই স্থির রয়েছে। বাজার ও মান ভেদে করলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা। বরবটি পাওয়া যাচ্ছে ৪০-৫০ টাকা কেজি। পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা কেজি। এছাড়া পটল ৪০-৫০ টাকা, ঝিঙা ৪০-৫০ টাকা এবং চিচিংগা ২০-৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

সবজির দামের বিষয়ে রামপুরার ব্যবসায়ী খায়রুল বলেন, কারওয়ান বাজারের খুচরা ব্যবসা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আড়তেও সবজির সরবরাহ কম। এছাড়া আস্তে আস্তে গাজরের মৌসুম শেষ হয়ে আসছে। এ কারণে গাজারসহ কিছু সবজির দাম বেড়েছে।

এ ব্যবসায়ী বলেন, হিসাবে এখনো সবজির দাম যথেষ্ট কম রয়েছে। কারণ প্রতিবছর রোজার আগে সবজির দাম বেড়ে যায়। কিন্তু এবার তেমন দাম বাড়েনি। এর কারণ ঢাকার বাসিন্দাদের বড় অংশই এখন গ্রামের বাড়িতে রয়েছে। তাছাড়া যারা ঢাকায় আছেন, তারাও বাসা থেকে তেমন বের হচ্ছেন না।

এদিকে সবজির পাশাপাশি বেড়েছে বয়লার ও দেশি মুরগির দাম। গত সপ্তাহে ১০০-১১০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া বয়লার মুরগির দাম বেড়ে ১২০-১৩০ টাকা হয়েছে। দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৪৫০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩৫০-৪০০ টাকা।

মুরগির দাম বাড়লেও অপরিবর্তিত রয়েছে ডিম এবং গরু ও খাসির মাংসের দাম। ডিমের ডজন আগের মতোই ৭৫-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংসের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৫০-৬০০ টাকা। আর খাসির মাংসের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০০-৯০০ টাকা।

মুরগির দাম বাড়ার কারণ হিসেবে রামপুরা মোল্লাবাড়ির ব্যবসায়ী ফিরোজ বলেন, রোজার কারণে বয়লার মুরগির চাহিদা কিছুটা বেড়েছে। এ কারণেই মনে হয় দাম কিছুটা বেড়েছে। আমাদের ধারণা সপ্তাহখানেক পরে বয়লার মুরগির দাম আবার কিছুটা কমে যাবে।

মাছ বাজার ঘুরে দেখা যায়, আগের মতোই রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০-৫০০ টাকা। নলা (ছোট রুই) মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৬০-২০০ টাকা কেজি। তেলাপিয়া ১৩০-১৭০ টাকা, পাঙাশ ১৪০-১৮০ টাকা কেজি, শিং ৩০০-৪৫০ টাকা, শোল মাছ ৪০০-৭৫০ টাকা, পাবদা ৪৫০-৬০০ টাকা, বোয়াল ৫০০-৮০০ টাকা, টেংরা ৪৫০-৬০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে মিনিকেট ও নাজিরশাল চাল বিক্রি হচ্ছে ৬২-৬৮ টাকা কেজি, মাঝারি মানের পইজাম ও লতা চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫২-৬০ টাকা, গরিবের মোটা চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৪-৫০ টাকা। পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকা। লুজ সয়াবিন তেল ৯৫-১০০ টাকা, ভালো মানের পাম অয়েল ৮৫-৯০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। বড় দানার মশুরের ডাল ৯০-১০০ টাকা, ছেট দানার মশুরের ডাল ১৩০-১৪০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

বেসরকারি এক কোম্পানিতে চাকরি করা রামপুরার বাসিন্দা জুয়েল বলেন, বাজারে সবকিছুর দাম বাড়তি। এভাবে একের পর এক পণ্যের দাম বাড়লে আমরা চলবো কিভাবে? ছুটির আগেই অফিস মার্চ মাসের বেতন দিয়ে দেয়। কিন্তু এপ্রিলের বেতন এখনো পায়নি। কবে পাবো তারও কোনো ঠিক নেই। অফিস কবে খুলবে তা বলা যাচ্ছে না। হাতে যে টাকা ছিল, তা প্রায় শেষ। এভাবে চললে কিছুদিন পর না খেয়ে থাকতে হবে।


উপদেষ্টা সম্পাদক: ডি. মজুমদার
সম্পাদক: মীর আক্তারুজ্জামান

সর্বস্বত্ব: এমআরএল মিডিয়া লিমিটেড
ঢাকা অফিস: মডার্ণ ম্যানসন (১৫ তলা), ৫৩ মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা-১০০০
ময়মনসিংহ অফিস: হাসনাইন প্লাজা (দ্বিতীয় তলা), ৭ মদন বাবু রোড, ময়মনসিংহ-২২০০
সেলফোন: ০৯৬১১-৬৪৫২১৫, ০৯৬৯৭-৪৯৭০৯০ ই-মেইল: jagrota2041@gmail.com
ফোন :
ইমেইল :