গাঁজা বিক্রির টাকার ভাগ নিয়ে বাবাকে হত্যা, দায় স্বীকার ছেলের
প্রকাশ :
মাদক বিক্রির টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দ্বে বাবাকে পিটিয়ে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন ছেলে মো. রাসেল (২৩)। রাসেল কিশোরগঞ্জ শহরের নগুয়া বটতলা এলাকার আব্দুল আউয়ালের ছেলে। বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকালে কিশোরগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রফিকুল বারীর আদালতে তিনি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। জবানবন্দিতে তিনি এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত অপর আসামিদের নামও উল্লেখ করেন।
এর আগে, মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানাধীন শিবু মার্কেট সংলগ্ন বটতলা রেইলগেইট এলাকা থেকে রাসেলকে গ্রেফতার করে কিশোরগঞ্জ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সদস্যরা। পিবিআই কিশোরগঞ্জের পুলিশ পরিদর্শক মো. সাখরুল হক খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, আব্দুল আউয়ালের (৪৮) পরিবার দীর্ঘদিন যাবত মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। চার কেজি গাঁজার ব্যবসার টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে আব্দুল আউয়ালের সঙ্গে তার স্ত্রী রেহেনা আক্তার, একমাত্র ছেলে রাসেল ও মেয়ের জামাই তামিমের মনোমালিন্য হয়। এর জের ধরে রাসেল স্ত্রী-সন্তানসেহ অন্যত্র বাসা ভাড়া করে চলে যান। গত ১০ সেপ্টেম্বর রাত আড়াইটার দিকে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ছেলে রাসেল, জামাতা তামিম, স্ত্রী রেহেনা আক্তার ও অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জন লোহার রড ও বাঁশের লাঠি নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আব্দুল আউয়ালের দোকানের সামনে যায়। তারা দোকানের সাটারে জোরে আওয়াজ করতে থাকে। শব্দ শুনে ঘর থেকে বের হওয়া মাত্রই আব্দুল আউয়ালের চোখে মরিচের গুড়া ছুড়ে মারেন জামাতা তামিম। পরে শাবল দিয়ে মাথায় আঘাত করেন।
তিনি আরও জানান, এসময় ছেলে রাসেল শাবল দিয়ে মাথায় ঘা দেন। অজ্ঞাতনামা আসামিরা লোহার রড ও লাঠি দিয়ে আব্দুল আউয়ালকে বেদম মারধর করেন। তার ডাক চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে এসে আব্দুল আউয়ালকে উদ্ধার করে অটোরিকশায় তুলে হাসপাতালে নেওয়ার সময় আবারও হামলা চালিয়ে বেদম মারপিট করে। পরে মৃত্যু হয়েছে ভেবে চলে যায়। এ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে কিশোরগঞ্জ-২৫০ শয্যা জেনারেল নিয়ে গেলে চিকিৎসকে ময়মনসিংহে রেফার্ড করেন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আব্দুল আউয়ালের মৃত্যু হয়।
পুলিশ পরিদর্শক মো. সাখরুল হক খান বলেন, এ ঘটনায় গত ১৪ সেপ্টেম্বর নিহতের বাবা আবু সাহেদ বাদী হয়ে কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় তিনজনের নামোল্লেখ ও অজ্ঞাত চারজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। গত ১৯ সেপ্টেম্বর কিশোরগঞ্জ পিবিআই মামলাটি গ্রহণ করে তদন্ত শুরু করে এবং ওইদিন রাতেই আসামি রাসেলকে গ্রেফতার করে।