ডুসেনের দাপটে আফগানিস্তানকে হারাল দক্ষিণ আফ্রিকা
প্রকাশ :
ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে অসাধারণ এক ইনিংসে আফগানিস্তানকে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দিলেন আজমাতউল্লাহ ওমারজাই। পরে বোলাররাও লড়াই করল বটে, কিন্তু পেরে উঠল না। রাসি ফন ডার ডাসেনের দায়িত্বশীল ইনিংসে জিতল দক্ষিণ আফ্রিকা।বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ডে দুই দলের শেষ ম্যাচে শুক্রবার (১০ নভেম্বর) আফগানিস্তানের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার জয় ৫ উইকেটে। ২৪৫ রানের লক্ষ্য ১৫ বল বাকি থাকতে ছুঁয়ে ফেলে প্রোটিয়ারা। পয়েন্ট টেবিলে নিউ জিল্যান্ডকে টপকে সেমি-ফাইনালের আশা জিইয়ে রাখতে এই ম্যাচে আফগানিস্তানকে জিততে হতো ৪৩৮ রানে, যা ছিল একরকম অসম্ভব। আফগানদের ব্যাটিং ইনিংসের পরই আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের বিদায় নিশ্চিত হয়ে যায়।
শেষটা ভালো না হলেও পুরো আসরটা আফগানিস্তানের কেটেছে স্বপ্নের মতো। বিশ্বকাপে তাদের প্রথম দুই আসরে ১৫ ম্যাচে যেখানে জয় ছিল মাত্র একটি, সেখানে এবার ৯ ম্যাচে জিতেছে চারটি। সবগুলিই ৫ ম্যাচের মধ্যে। প্রথম দুই ম্যাচে বাংলাদেশ ও ভারতের বিপক্ষে হারে শুরুর পর অবিশ্বাস্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড, সাবেক দুই চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার মতো দলকে হারিয়ে দেয় আফগানরা। রেকর্ড পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেও স্মরণীয় এক জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়ে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের মহাকাব্যিক ইনিংসের কাছে হেরে যায় মুজিব-রাশিদরা। ১০ দলের মধ্যে ছয় নম্বরে থেকে আসর শেষ করা আফগানিস্তান। শীর্ষ আট দল খেলবে ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে। আগেই সেমি-ফাইনালের টিকেট নিশ্চিত করা দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম রাউন্ড শেষ করল ৯ ম্যাচের ৭টি জিতে। শেষ চারে তারা খেলবে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে।
এই ম্যাচে সাউথ আফ্রিকাকে ২৪৫ রানের লক্ষ্য দিয়েছিল আফগানিস্তান। লক্ষ্য নাগালের মধ্যে পেয়ে প্রোটিয়াদের উড়ন্ত সূচনা এনে দিয়েছিলেন টেম্বা বাভুমা ও কুইন্টন ডি কক। বাভুমা আউট হন ২৩ রান করে। এরপর ডি কক আউট হন ৪১ করে। ফলে কিছুটা চাপে পড়ে সাউথ আফ্রিকা। এইডেন মার্করাম ২৫ রানের বেশি করতে পারেননি। ১০ করে ফিরে যান মারকুটে ব্যাটার হ্যানরিখ ক্লাসেন। ফলে প্রোটিয়াদের জয় নিয়ে জাগে শঙ্কা। পঞ্চম উইকেটে ডেভিড মিলারকে নিয়ে ৪১ রান যোগ করেন ডাসেন। ফলে জয়ের পথ কিছুটা সুগম হয়। মিলার ২৪ করে ফিরে গেলে ফেলুকোয়োকে নিয়ে অবিচ্ছিন্ন ৬৫ রানের জুটি গড়ে প্রোটিয়াদের জয় এনে দিয়েছেন ডাসেন। এই ব্যাটার অপরাজিত ছিলেন ৯৫ বলে ৭৬ রান করে। আর ফেলুকায়ো ৩৭ বলে ৩৯ রান নিয়ে অপরাজিত থেকেছেন। আফগানিস্তানের হয়ে ২টি করে উইকেট নেন রশিদ খান ও মোহাম্মদ নবি। একটি উইকেট যায় মুজিব উর রহমানের ঝুলিতে।
এর আগে এই ম্যাচে টসে জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ওপেনিং জুটিতে ৪১ রান তুললেও। ৪ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়েছিল আফগানিস্তান। তৃতীয় উইকেটে আজমত ও রহমত শাহ মিলে যোগ করেন ৪৫ রান। রহমত ফিরেছেন ৪৬ বলে ২৬ রান করে। এরপর ইকরাম আলী খিল বেশিক্ষণ থিতু হতে পারেননি। তার ব্যাট থেকে এসেছে মাত্র ১২ রান। ২ রান করে আউট হয়েছেন মোহাম্মদ নবি। রশিদ খান ভালো শুরু পেলেও ১৪ রানের বেশি করতে পারেননি। আজমতকে সঙ্গ দিতে এসে ৩২ বল ২৬ রানের দারুণ একটি ইনিংস খেলেছেন নূর আহমেদ।
অষ্টম উইকেটে এই জুটি থেকে এসেছে ৪৪ রান। মুজিব আউট হয়েছেন ৮ রান করে। শেষ পর্যন্ত নাভিন উল হককে নিয়ে ইনিংস শেষ করে এসেছেন আজমত। তিনি শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ১০৬ বলে ৯৭ রান করে। ইনিংস জুড়ে ৩টি ছক্কা ও ৭টি চারের মার মেরেছেন আজমত। ইনিংসের শেষ বলে নাভিন উল হক ২ রান করে রান আউট হয়েছেন। সাউথ আফ্রিকার হয়ে একাই ৪ উইকেট নিয়েছেন জেরাল্ড কোয়েতজি। ২টি করে উইকেট পেয়েছেন লুঙ্গি এনগিদি ও কেশভ মহারাজ। একটি উইকেট গেছে আন্দিলে ফেহলুকায়োর ঝুলিতে।