শপথ নিলেন মেয়র টিটু ও ৪৪ কাউন্সিলর নগরবাসীর সেবায় আবারো পথচলা শুরু
প্রকাশ :
ময়মনসিংহ নগরবাসীর সেবায় আবারো পথচলা শুরু করতে যাচ্ছেন সিটি কর্পোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলররা। বৃহস্পতিবার তারা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে শপথ নেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেয়র ইকরামুল হক টিটুকে শপথ করান। এ সময় কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ছাড়াও ৫ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানদেরও শপথ করানো হয়। এর পর স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম মসিকের ৪৪ পুরুষ ও নারী কাউন্সিলরকে শপথ করান। মেয়র টিটু পরে কাউন্সিলরদের নিয়ে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
সূত্র জানায়, মসিকের নতুন পরিষদ শিগগিরই দায়িত্ব নিয়ে কাজ শুরু করবে। ইকরামুল হক টিটু ময়মনসিংহ নগরবাসীর সেবায় জড়িয়ে আছেন সুদীর্ঘ ২৫ বছর। সর্বস্তরের নাগরিকদের সুখে-দুঃখে পাশে থাকেন দিনরাত। নিজের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে মেতে থাকেন মানুষের সেবায়। গত ১৫ বছর ময়মনসিংহ নগরীতে দৃশ্যমান ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড টিটুকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে গেছে। যা স্বাধীনতার পরের ৩৭ বছরকে ছাড়িয়ে গেছে। করোনা মহামারীর সময় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে জীবন বাজি রেখে নগরবাসীর পাশে দাঁড়িয়ে তিনি ‘শীর্ষ জনপ্রতিনিধি’র উপাধি পেয়েছেন। দেশের যেক’জন জনপ্রতিনিধি প্রধানমন্ত্রীর সু-নজরে আছেন তাদের মধ্যে ইকরামুল হক টিটু অন্যতম। গত ৯ মার্চ ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সকল রেকর্ড ভেঙে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেন। ইকরামুল হক টিটু ময়মনসিংহে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে আরেকদফা তার অবস্থান পাকাপোক্ত করেছেন। তার অনুসারী ও সমর্থকদের মধ্যে দীর্ঘ ১৫ দিন চলে বিজয় উল্লাস। সর্বস্তরের মানুষের সাথে তিনি শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। মানুষের উপস্থিতি ছিলো বাঁধভাঙা জোয়ারের মতো।
ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ইকরামুল হক টিটু রেকর্ড পরিমাণ ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। ‘টেবিল ঘড়ি’ প্রতীক নিয়ে তিনি পেয়েছিলেন ১ লাখ ৩৯ হাজার ৬০৪ ভোট। ‘হাতি’ প্রতীকের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সাদেকুল হক খান মিল্কী টজু পান ৩৫ হাজার ৭৬৩ ভোট। ভোট ব্যবধান ১ লাখ ৩ হাজার ৮৪১। ‘ঘোড়া’ প্রতীকের অপর প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব এহতেসামুল আলম পান ১০ হাজার ৭৭৩ ভোট। এছাড়া ‘হরিণ’ প্রতীকে কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সাবেক সদস্য মো. রেজাউল হক পান ১ হাজার ৪৮৭ ভোট এবং ‘লাঙ্গল’ প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী শহিদুল ইসলাম স্বপন মন্ডল পান ১ হাজার ৩২১ ভোট। জামানত হারান আলহাজ্ব এহতেসামুল আলম, রেজাউল হক ও শহিদুল ইসলাম স্বপন মন্ডল। ৫৬.৩০ ভাগ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। আওয়ামী লীগের ডাক সাইটে ২ নেতার শোচনীয় পরাজয়ে ময়মনসিংহের রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ সৃষ্টি হওয়ার পথ সুগম হয়।
ইকরামুল হক টিটু মসিক নির্বাচনে ১২৮ কেন্দ্রের সব ক’টিতে রেকর্ড পরিমাণ ভোট পান। বিলুপ্ত ময়মনসিংহ পৌরসভার ইতিহাসে এটি রেকর্ড। সূত্র মতে, ২০১৮ সালের ২ এপ্রিল সিটি করপোরেশন ঘোষণার পর ৯ মার্চ ছিলো দ্বিতীয় নির্বাচন। এর আগে ০৫-০৫-২০১৯ তারিখে প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। টিটু ২০১১ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বিলুপ্ত ময়মনসিংহ পৌরসভার মেয়র ছিলেন। এর আগে দীর্ঘদিন ভারপ্রাপ্ত মেয়র ছিলেন। এছাড়া তিনি মসিকের প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৯৯ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ২ মেয়াদে ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কমিশনার ছিলেন। টিটু ছাত্র জীবনেই নিজের জমানো টাকায় ব্যবসা শুরু করেন। সব সময় সফলতার শীর্ষে অবস্থান করতে থাকেন। কোনো বিষয়েই তিনি পেছনে ফিরে তাকান নি। নিজের ব্যবসা ছেড়ে টিটু পারিবারিক ব্যবসায় যুক্ত হন। এক পর্যায়ে জনসেবা করার জন্য জনপ্রতিনিধি হওয়ার স্বপ্ন দেখেন।
ইকরামুল হক টিটু ১৯৯৯ সালে ময়মনসিংহ পৌরসভায় সর্বকনিষ্ঠ কমিশনার নির্বাচিত হন। সেই থেকে নাগরিকদের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন। এভাবেই কাটিয়ে দিচ্ছেন বছরের পর বছর। তিনি ৪৬ বছর বয়সে ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি নিযুক্ত হন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৮টি ইউনিটের মধ্যে এটি দৃষ্টান্ত। এর আগে ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি একাধারে রাজনীতিবিদ ও জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে অনেক আগেই রেকর্ড সৃষ্টি করেন। মেয়র টিটু ময়মনসিংহ নগরবাসীর আস্থার প্রতীক।