ময়মনসিংহে শহীদদের স্মরণে রাতে রেকর্ড মোমবাতি প্রজ্বালন : বাঁধ ভাঙা জোয়ার
প্রকাশ :
কোটা সংস্কার আন্দোলনে ময়মনসিংহসহ সারা দেশে শহীদদের স্মরণে শুক্রবার সন্ধ্যার পর ঐতিহাসিক সার্কিট হাউজ মাঠে মোমবাতি প্রজ্বালন কর্মসূচি পালন করা হয়। বিপুল সংখ্যক ছাত্র-জনতার উপস্থিতিতে সেখানে অভূতপূর্ব পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিলো। গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে সন্ধ্যার পর থেকে বাঁধ ভাঙা জোয়ারের মতো ছাত্র-জনতা আসতে থাকেন সার্কিট হাউজ মাঠে। সোয়া ৭ টায় একযোগে শুরু হয় মোমবাতি প্রজ্বালন। যোগ দিয়েছিলেন সব বয়সের ছাত্র-জনতা। ৭ টা ৫০ মিনিটে শুরু হয় বৃষ্টি। বৃষ্টি উপেক্ষা করে তখনও অপেক্ষা করতে থাকেন বিপুল সংখ্যক ছাত্র-জনতা। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের ডাকে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক এতে অংশ নিয়েছিলেন। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন অভিভাবক, বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষসহ সর্বস্তরের বিপুল সংখ্যক জনতা।
জানা যায়, কম সময়ের নোটিশ ও ডাকে সাড়া দিয়ে শুক্রবার সন্ধ্যার পর হাজার হাজার ছাত্র-জনতার ঢল নামে ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক সার্কিট হাউজ মাঠে। এর আগে দীর্ঘ ৫ দিন বিজয় উল্লাস করে ময়মনসিংহের সর্বস্তরের বিপুল সংখ্যক ছাত্র-জনতা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সিদ্ধান্ত হয় শহীদদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্বালন কর্মসূচি পালনের। বৃষ্টি না থাকলে এ কর্মসূচি আরো দীর্ঘ হতো বলে অংশ নেওয়া অনেকেই রাতে দৈনিক খোলা কাগজকে জানিয়েছেন। অন্যদিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেওয়া একদল শিক্ষার্থী শুক্রবার বিকাল থেকে রাতে এ খবর লেখা পর্যন্ত সময়ে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন ফাঁকা প্রাচীরে দেওয়াল লিখনে মেতে ছিলেন। শোভা পাচ্ছে বৈষম্য বিরোধী বিভিন্ন ধরণের স্লোগান।
কোটা সংস্কার আন্দোলনে ময়মনসিংহ জেলায় একজন কৃষকসহ ৫ ছাত্র নিহত হন। আহত হয়েছেন শতাধিক। ১৯ জুলাই শুক্রবার রাতে ময়মনসিংহ নগরীর সিকে ঘোষ রোড এলাকায় গুলিতে নিহত হন কলেজ ছাত্র রেদোয়ান হোসেন সাগর (২০)। পরের দিন ২০ জুলাই শনিবার দুপুরে ফুলপুর উপজেলা সদরে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান ধান বিক্রি করতে আসা কৃষক সাইফুল ইসলাম (৪০)। ওই দিন দুপুরে গৌরীপুরের কলতাপাড়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন কলেজ ছাত্র জোবায়ের হোসেন (২০) ও বিপ্লব হাসান (২০) এবং মাদ্রাসা ছাত্র নূরে আলম সিদ্দিকী রাকিব (১৮)। ১৯ ও ২০ জুলাই আহতদের অনেকেই চিকিৎসা নিয়ে পালিয়ে যান। অনেকেই আবার পালিয়ে চিকিৎসা নেন। আন্দোলনের শুরু থেকে ২৭ জুলাই পর্যন্ত ময়মনসিংহের বিভিন্ন থানায় ১৫টির অধিক মামলায় ৪ হাজারের বেশি বিএনপি-জামায়াত নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়। গ্রেফতার হন ২ শতাধিক নেতাকর্মী। তাদের সবাই এখন কারামুক্ত।