12 October 2024, 05:59:44 AM, অনলাইন সংস্করণ

পর্যটনে বদলে যাবে সিলেট

  নিজস্ব প্রতিবেদক

  প্রকাশ : 

পর্যটনে বদলে যাবে সিলেট
16px

সারি সারি পাহাড়, বিস্তীর্ণ হাওর-বাঁওড়, বিশাল বিশাল ঝরনা, পাথরের ওপর দিয়ে বয়ে চলা স্রোতস্বিনী নদী, চোখজুড়ানো চা বাগান, নৃগোষ্ঠীদের বর্ণাঢ্য জীবনধারা- কী নেই সিলেটে। পুরো সিলেট বিভাগই যেন প্রকৃতি সাজিয়েছে নিজ হাতে। যে কারণে প্রকৃতিপ্রেমী পর্যটকদের কাছে সিলেটের গুরুত্ব আলাদা। সুযোগ পেলেই তারা ছুটে আসেন পুণ্যভূমিখ্যাত সিলেটে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পর্যটন সম্ভাবনা কাজে লাগালে বদলে যাবে সিলেট। এ ছাড়া পর্যটনে সুন্দরবনে রয়েছে অপার সম্ভাবনা। হরিণের ছোটাছুটি, বানরের খুনসুঁটি আর অপরূপ নৈসর্গিক সৌন্দর্যে ভরপুর সুন্দরবন বিশ্বের একক বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন। কোলাহলমুক্ত নির্মল পরিবেশ, সমৃদ্ধ জীববৈচিত্র্য, জেলে-বাওয়ালির জীবনসংস্কৃতি দেখতে প্রতি বছর সুন্দরবনে আসেন কয়েক লাখ দেশি-বিদেশি পর্যটক।

সিলেটের প্রধান পর্যটনকেন্দ্রগুলোর মধ্যে রয়েছে জাফলং, লালাখাল, শ্রীপুর, উৎমাছড়া, বিছানাকান্দি, রাতারগুল, ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর ও বিভিন্ন চা বাগান। এ ছাড়া বিভাগের মধ্যে শ্রীমঙ্গল, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, সাতছড়ি, মাধবকুণ্ড, হামহাম, হাকালুকি, টাঙ্গুয়ার হাওর, নিলাদ্রী লেক, বারেকের টিলা, শিমুলবাগানসহ অসংখ্য পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে। হযরত শাহজালাল (রহ.) ও শাহপরান (রহ.)-এর মাজার জিয়ারতের জন্যও প্রতিদিন হাজারও পর্যটক আসেন সিলেটে। বেসরকারি উদ্যোগে পর্যটন খাতে অন্তত হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হলেও সরকারি উদ্যোগ নেই বললেই চলে। জাফলংয়ের পিয়াইন নদীতে নামার সিঁড়ি নির্মাণ, ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর ও জৈন্তাপুরের লালাখালে ওয়াসব্লক নির্মাণেই সীমাবদ্ধ সরকারি উদ্যোগ।

শীত ও বর্ষায় রূপ বদলায় সিলেটের প্রকৃতি। শীতকালে পানি কমে যাওয়ায় জাফলং, সাদাপাথর, বিছানাকান্দিসহ নদীভিত্তিক স্পটগুলোর সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়। আবার বর্ষায় টাঙ্গুয়া ও হাকালুকির হাওর, রাতারগুলসহ বিভিন্ন স্থানের ঝরনাগুলো যৌবন ফিরে পায়। এতে শীত, বর্ষা উভয় মৌসুমই পর্যটকদের আকর্ষণ করে সিলেট। সম্ভাবনাকে কাজে লাগালে পর্যটনে পাল্টে যাবে সিলেট। সুন্দরবন বন বিভাগের উদ্যোগে করমজল, হারবাড়িয়া, আন্ধারমানিক, কটকা, কচিখালী, আলিবান্দা, দুবলা, নীলকমল, শেখেরটেক, কলাগাছিয়া, দোবেকী ও কালাবগীতে আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে।

এখানে বন্যপ্রাণীর পদচারণা, পাখি পর্যবেক্ষণ, বনের নির্জনতা উপভোগ করতে ফুট ট্রেইল, ওয়াচ টাওয়ার, ঝুলন্ত ব্রিজ, গোলঘর, ইন্টারপ্রিটেশন সেন্টার (তথ্য কেন্দ্র) ও স্যুভেনির শপ রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি পর্যটন কেন্দ্রে গেলে রাতে থাকার প্রয়োজন হয়। কিন্তু ইকোট্যুরিজম কেন্দ্রে থাকার ব্যবস্থা নেই। তবে সম্প্রতি সুন্দরবনের আশপাশ এলাকায় কমিউনিটিভিত্তিক ইকো-কটেজ গড়ে উঠেছে। সেখানে কাছাকাছি থেকে রাতের বেলায় বনের সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়।

বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, সুুন্দরবন যেহেতু জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ এলাকা ও এখানে অনেক বিরল বিপন্ন প্রাণী আছে। কাজেই পর্যটকদের রাতে থাকার জন্য বনের অভ্যন্তরে কটেজ নির্মাণ করা হচ্ছে না। যারা লঞ্চে বিভিন্ন কেন্দ্রে যাবেন, তারা রাতের বেলা বনে অবস্থান করতে পারবেন না, তবে লঞ্চে থাকতে পারবেন। তিনি বলেন, সার্বিকভাবে ইকোট্যুরিজম পর্যটকবান্ধব অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। ভবিষ্যতে আরও নতুন কয়েকটি ইকোট্যুরিজম কেন্দ্র গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে।

পর্যটকরা যেন সুন্দরবনে দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসতে পারেন- এ জন্য মোংলা চাঁদপাই রেঞ্জের কাছে আন্ধারমানিক ইকোট্যুরিজম কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। শরণখোলা থেকে সরাসরি সুন্দরবনে প্রবেশ করতে আলিবান্দা নতুন পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। যা শিগগিরই উন্মুক্ত করা হবে। এ ছাড়া কয়রা দিয়ে অনেক লোক সুন্দরবনে যায়। ভবিষ্যতে মাস্টার প্লানে সেখানে ইকোট্যুরিজম কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে।

  • সর্বশেষ - সারাদেশ