০৬ জুন ২০২০, ০৮:২৫ মিঃ
ছবি সংগৃহীত
প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে শুধু ঢাকাতেই এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন সাড়ে ৭ লাখের বেশি জন। ব্রিটেনের প্রভাবশালী সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্টকে এমনটি জানিয়েছেন আইসিডিডিআর,বি’র কর্মকর্তা জন ক্লেমেনস।
প্রতিবেদনে জন ক্লেমেনস জানান, তার ধারণা বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতেই করোনা সংক্রমণের সংখ্যা ইতোমধ্যে সাড়ে সাত লাখ ছাড়িয়ে গেছে।
এদিকে বাংলাদেশের সরকারের দেওয়া তথ্যমতে, এখন পর্যন্ত করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৮১১ জনের, মোট আক্রান্ত ৬০ হাজার ৩৯১ জন। সেইসঙ্গে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১২ হাজার ৮০৪ জন।
'বাংলাদেশ, ভারত এবং পাকিস্তানে দ্রুত সংক্রমণ বাড়ছে' শিরোনামে ইকোনমিস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব অঞ্চলে গত সপ্তাহে জারি করা লকডাউন তুলে নেওয়া শুরু হয়। এতে বিপর্যস্ত অর্থনীতিতে স্বস্তি ফিরবে এমন আশায়। কিন্তু এতে করে করোনায় সংক্রমণ আবারো দ্রুত বাড়বে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত সাড়ে ৩ লাখের বেশি এবং প্রায় ৯ হাজার মানুষের মৃত্যুর পরিসংখ্যান অপেক্ষাকৃত পরিমিত দেখাচ্ছে। তবে অনেকে আক্রান্ত হলেও গণনার বাইরে।
বর্তমানে প্রতি দুই সপ্তাহে আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হারে বাড়ছে। কিছু মডেলের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য বলা হয়েছে, এই অঞ্চলে আগামী জুলাইয়ের শেষের দিকে করোনা সর্বোচ্চ চূড়ায় পৌঁছাবে। সেসময় সরকারি হিসেবে আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ লাখ এবং মৃত্যু দেড় লাখ হতে পারে।
কম হারে করোনা টেস্ট করার অর্থ প্রকৃত পরিসংখ্যান আরও ভয়াবহ হতে পারে। পাকিস্তানে এক বিদেশি স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেন, সরকারের দেওয়া করোনায় মৃত্যুর পরিসংখ্যান বাস্তবে দুই থেকে তিন গুণ বেশি।
এছাড়া পাকিস্তানের চিকিৎসকদের ভাষ্য, দেশটির সরকার হাসপাতালগুলো পর্যাপ্তসংখ্যক বেড আছে বলে যে দাবি করছেন তা ভিত্তিহীন।
এদিকে মুম্বাইয়ের ৪ বছর বয়সী এক নার্স বলেন, এপ্রিলের শুরু থেকে কোন ধরণের ছুটি ছাড়া ১২ ঘণ্টার ডিউটি পালন করে যাচ্ছেন। মে মাসে তিনিও করোনায় আক্রান্ত হন।
ইতোমধ্যে দেশটির রাজধানীর কমপক্ষে ৬০০ জন স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এদের ৩২৯ জনই দেশটির শীর্ষ মেডিক্যাল গবেষণা প্রতিষ্ঠান অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেসের।
ঢাকার বেসরকারি হাসপাতালের এক চিকিৎসক ইকোনমিস্টকে বলেন, একটু বেশি হাঁচি হলেই তারা (ধনীরা) চিকিৎসা নিতে থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর অথবা ভারতে যেতেন। কিন্তু বর্তমানে করোনার চিকিৎসা বা অন্যান্য অসুস্থতা নিয়েও দেশের অভিজাত হাসপাতালগুলোতেও ভর্তি হওয়া প্রায় অসম্ভব।
ইকোনোমিস্টের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, মর্গ, কবর স্থান এবং শ্মশানঘাটে জায়গা খুঁজে পাওয়াও কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। নারায়ণগঞ্জের এক পৌরসভার কবরস্থানে অন্য স্বাভাবিক সময়ে ২৫০ জনের মতো মানুষকে দাফন করা হয়।
কিন্তু গত মাসে ওই কবরস্থানে ৫৭৫ জনকে দাফন করা হয়। তবে সরকারি হিসেবে এদের মধ্যে কেবল ৭০ জন করোনা আক্রান্ত ছিলেন বলে হিসেবে ধরা হয়।
বাংলাদের চট্টগ্রামে কবরস্থানে খননের কাজ করা ফরিদ উদ্দিন বলেন, তিনি ও তার দলের সদস্যরা গত চার দিন ধরে তেমন ঘুমের একটা সময় পাচ্ছেন না। তিনি বলেন, অনেক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। আমাদের জন্য দোয়া করবেন যেন আল্লাহ আমাদের মাফ করে দেন এবং এই রোগ তুলে নেন।
সর্বস্বত্ব: এমআরএল মিডিয়া লিমিটেড
ঢাকা অফিস: মডার্ণ ম্যানসন (১৫ তলা), ৫৩ মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা-১০০০
ময়মনসিংহ অফিস: হাসনাইন প্লাজা (দ্বিতীয় তলা), ৭ মদন বাবু রোড, ময়মনসিংহ-২২০০
সেলফোন: ০৯৬১১-৬৪৫২১৫, ০৯৬৯৭-৪৯৭০৯০
ই-মেইল: jagrota2041@gmail.com
ফোন :
ইমেইল :