, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ অনলাইন সংস্করণ

ঈমানের নুর তৈরিতে জুমআর দিনের বিশেষ আমল

  ধর্ম ডেস্ক

  প্রকাশ : 

ঈমানের নুর তৈরিতে জুমআর দিনের বিশেষ আমল

সপ্তাহিক বিশেষ ইবাদত ও আমলের দিন ইয়াওমুল জুমআ। দিনটি ইবাদতের বিশেষ দিন। দরূদের বিশেষ আমলের দিন। বিশেষ নামাজের আমলের দিন। দোয়া কবুলের বিশেষ দিন। এমনকি কুরআন তেলাওয়াতের বিশেষ আমলের দিনও এটি।


এ দিনের কুরআন তেলাওয়াতের বিশেষ আমল সম্পর্কে রয়েছে হাদিসের একাধিক বর্ণনা ও ফজিলত। এ কারণেই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ দিন কুরআন তেলাওয়াত করার কথা বলেছেন। হাদিসে এসেছে-


- হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুআর দিন সুরা কাহফ তেলাওয়াত করবে, কেয়মাতের দিন তার পায়ের নিচ থেকে আসমানের মেঘমালা পর্য ন্পাত নূরে পরিণত হবে। ্আর দুই জুমআর মধ্যবর্তী গোনাহ ক্ষমা করা হবে।’ (আত-তারগিব ওয়াত-তারহিব)


- হজরত সাহাল ইবনে মুআয রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি সুরা কাহাফের প্রথম ও শেষ আয়াতগুলো পাঠ করে তার পা থেকে মাথা পর্যন্ত একটি নূর হয়ে যায়। আর যে পূর্ণ সুরা তেলাওয়াত করে তার জন্য জমিন থেকে আসমান পর্যন্ত নূর হয়ে যায়।’ (মুসনাদে আহমদ)


- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমআর রাতে সুরা কাহফ তেলাওয়াত করবে, তার জন্য স্বীয় অবস্থানের জায়গা হতে পবিত্র মক্কা পর্যন্ত একটি নূর হবে।’ (আত-তারগিব ওয়াত-তারহিব)


- হজরত আবু দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, যে ব্যক্তি সূরা কাহফের প্রথম ১০ আয়াত মুখস্ত করে সে দাজ্জালের ফেতনা থেকে নিরাপদ থাকবে। অন্য রেওয়ায়েতে তিনি বলেন, শেষ ১০ আয়াতের ব্যাপারেও উল্লেখিত ফজিলতের বর্ণনা রয়েছে।’ (মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিজি, নাসাঈ ও মুসনাদে আহমদ)


হাদিসের আলোকে বুঝা যায়, জুমআর দিনের বিশেষ আমলগুলো মধ্যে সুরা কাহফ তেলাওয়াত অন্যতম একটি। এটি কুরআনুল কারিমের তাৎপর্যপূর্ণ সুরা। এ সুরাটিকে আল্লাহর সাকিনা বা প্রশান্তি বলা হয়ে থাকে। হাদিসের এক বর্ণনায় এসেছে-

হজরত বারা ইবনে আজেব বর্ণনা করেন, এক ব্যক্তি সুরা কাহফ তেলাওয়াত করছিল। সে সময় একখণ্ড মেঘমালা তাকে পরিবেষ্টন করে রেখেছে। ওই ব্যক্তি বিষয়টি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে বর্ণনা করেন। বিশ্বনবি তাকে বললেন, ওহে... তুমি সুরাটি পড়তে থাক। কারণ এটি ছিল আল্লাহর রহমত বা প্রশান্তি। যা কুরআন তেলাওয়াতের কারণে বা কুরআন তেলাওয়াতের জন্য নাজিল হয়েছিল।’ (মুসলিম) আর এটিই মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে সাকিনা বা প্রশান্তি।


সুরা কাহফের অন্যতম একটি ফজিলত হলো, দাজ্জালের ফেতনা থেকে মুক্তি। হাদিসের বর্ণনায় বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি সুরা কাহফ পাঠ করবে, কেয়ামতের দিন তার জন্য এমন একটি নূর হবে, যা তার অবস্থানের জায়গা থেকে মক্কা পর্যন্ত আলোকিত করে দেবে। আর যে ব্যক্তি এ সুরার শেষ দশ আয়াত পাঠ করবে, তার জীবদ্দশায় দাজ্জাল বের হলেও তার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।’ (সিলসিলা সহিহা)


সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত নিজেদের দুনিয়া ও পরকালের জীবনকে ঈমানের নুরে আলোকিত করতে জুমআর দিন সুরা কাহফের আমলে নিয়োজিত থাকা। আর তা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে শুরু করে জুমআর দিন সন্ধ্যার আগেই এক সঙ্গে কিংবা একাধিক ভাগে ভাগ করে হলে এর তেলাওয়াত সম্পন্ন করা।


আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জুমআর দিনটি বিশেষ আমল ও ইবাদত-বন্দেগিতে অতিবাহিত করার তাওফিক দান করুন। নিজেদের ঈমানকে নুর দ্বারা আলোকিত করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

  • সর্বশেষ - অতিথি কলাম