০৬ জুলাই ২০২১, ২১:২৯ মিঃ
থরথর করে কাঁপছে শরীর। এই শরীর নিয়েই চার মাইল হেঁটে কলা বিক্রি করতে এসেছিলেন নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার প্রেমনগর ছালিপুরা গ্রামের বৃদ্ধা রেনু আক্তার (৭০)।
স্থানীয় গ্রামের বাজারে মানুষ নেই। তাই প্রায় চার মাইল সড়ক পাড়ি দিয়ে কলা বিক্রির আশায় শেষ পর্যন্ত যাচ্ছিলেন বারহাট্টার গোপালপুর বাজার। সেখানেও বাধা। পথে পুলিশের চেকপোস্ট। বারহাট্টা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমানের প্রশ্নের মুখোমুখি হন বৃদ্ধা রেনু।
রেনু বেগম ওসিকে বলেন, লকডাউনে ঘর থেকে বের হতে পারছিলেন না। কাজকর্ম না থাকায় পেটের খাবার জুটছিল না। শেষ পর্যন্ত কোনো উপায় না পেয়ে বাড়ির গাছ থেকে কলা পেড়ে বিক্রি করে বাজার করতে চাচ্ছিলেন।
সংসার জীবনের দারিদ্র্যতার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। কিন্তু তারা নিজেরাই চলতে পারে না, অভুক্ত থাকে। ওদের জীবনইতো দুর্বিষহ। ওরা যদি নিজেরা চলতে পারত আর আমার ভরণপোষণ না করত তবে মনে কষ্ট থাকত। কিন্তু এখন তা নেই। তারা নিজেরাইতো চলতে পারছে না।’
ওসি মিজানুর রহমান সব শুনে বলেন, ‘মা, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনা মধ্যে আপনার বাইরে থাকা বা কলা বিক্রির দরকার নেই। আমি টাকা দিচ্ছি। কী দরকার তা কিনে আপনি ঘরে চলে যান।’
ওসির কথা শুনে এবং তার দেয়া টাকা হাতে পেয়ে বেজায় খুশি হন সত্তরোর্ধ্ব রেনু বেগম। এসময় তিনি অন্যদের কাছে জানতে চান, সব পুলিশই কি এমন?
বারহাট্টা থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, ‘লকডাউনে টহলের সময় সড়কের পাশে ওই বৃদ্ধাকে দেখে গাড়ি থামালাম। উনি আমাদের দেখে ভয় পাচ্ছিলেন। আশ্বস্ত করলাম, কথা বললাম। তিনি নিজের গাছের কলা কয়েক মাইল হেঁটে বিক্রি করতে যাচ্ছিলেন। এটা শুনে খুব খারাপ লেগেছে। তাই বাজার করার জন্য কিছু টাকা দিলাম। টাকা দিয়ে বাড়িতে চলে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করলাম।’
সর্বস্বত্ব: এমআরএল মিডিয়া লিমিটেড
ঢাকা অফিস: মডার্ণ ম্যানসন (১৫ তলা), ৫৩ মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা-১০০০
ময়মনসিংহ অফিস: হাসনাইন প্লাজা (দ্বিতীয় তলা), ৭ মদন বাবু রোড, ময়মনসিংহ-২২০০
সেলফোন: ০৯৬১১-৬৪৫২১৫, ০৯৬৯৭-৪৯৭০৯০
ই-মেইল: jagrota2041@gmail.com
ফোন :
ইমেইল :