গুণগত বোরো চাল ক্রয়ে ব্যর্থ হলে কঠোর ব্যবস্থা ময়মনসিংহে খাদ্য ও ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম

গুণগত বোরো চাল ক্রয়ে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন খাদ্য ও ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার। এ জন্য তিনি জেলা থেকে মাঠ পর্যায় পর্যন্ত সার্বক্ষণিক মনিটরিং করতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন। চালের পাশাপাশি তিনি কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের তাগিদ দিয়েছেন। তিনি বলেন, গুণগত মান ঠিক রেখে বোরো চাল ও ধান সংগ্রহ করতে হবে। সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে না পারলে ব্যর্থদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বুধবার (২৮-০৫-২০২৫) দুপুরে ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনার, ৪ জেলার জেলা প্রশাসক ও খাদ্য অধিদফতরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করার সময় এ সব কথা বলেন।
সূত্র জানায়, খাদ্য উপদেষ্টা সরকারের নীতিমালা অনুযায়ী গুণগত মানের চাল ও ধান সংগ্রহ, মজুদ ও বিতরণের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে কঠোর নির্দেশ দেন। এর ব্যত্যয় ঘটলে দায়ীদের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। চাল ও ধানের আদ্রতা এবং গুণগত মান যাচাই করে সংগ্রহ কার্যক্রম চালানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। এ সময় তিনি ময়মনসিংহ বিভাগের ৪ জেলায় চাল সংগ্রহ কার্যক্রম নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। উপদেষ্টা মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। ধানের আদ্রতার বিষয়ে কিছুটা ছাড় দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, পরবর্তীতে বিষয়টি দেখা যাবে। আপাতত কোনো ছাড় নয়।
মতবিনিময় সভায় খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. আবুল হাছানাত হুমায়ুন কবীর, ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনার মো. মোখতার আহমেদ, ময়মনসিংহের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবু নঈম মোহাম্মদ সফিউল আলম, ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম, নেত্রকোণার জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস, জামালপুরের জেলা প্রশাসক হাছিনা বেগম, ময়মনসিংহের জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. আব্দুল কাদের, শেরপুরের জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান, শেরপুরের জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. নাজমুল হক ভূঁইয়া, নেত্রকোণার জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. মোয়েতাছেমুর রহমান, জামালপুরের জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. আসাদুজ্জামান খান, বিভিন্ন প্রশাসনের পদস্থ কর্মকর্তা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক পরে ময়মনসিংহ সিএসডি ও মধুপুরের স্টিল সাইলো পরিদর্শন করেন।
বুধবার (২৮-০৫-২০২৫) সন্ধ্যা পর্যন্ত ময়মনসিংহ বিভাগের ৪ জেলায় ২ লাখ ২৫ হাজার ৬২৭ টন ৪৮০ কেজি বোরো চাল ও ৪৭ হাজার ৯৩৬ টন ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৭৫ হাজার ৫৩৬ টন ৭০ কেজি চাল ও ২ হাজার ১৭৯ টন ৬০০ কেজি ধান কেনা হয়েছে। এর মধ্যে ময়মনসিংহে ৯২ হাজার ৮১৯ টন ২৫০ কেজি চাল ও ১৭ হাজার ৯৮৭ টন ধানের বিপরীতে ৩৪ হাজার ১২৮ টন ৪১০ কেজি চাল ও ৪১৪ টন ধান কেনা হয়েছে। নেত্রকোণায় ৬১ হাজার ১৬১ টন চাল ও ১৩ হাজার ৪৩২ টন ধানের বিপরীতে ১৭ হাজার ৭০৯ টন ৬৪০ কেজি চাল ও ১ হাজার ৪০৫ টন ৯২০ কেজি ধান কেনা হয়। জামালপুরে ৪১ হাজার ৬৭৬ টন ২৭০ কেজি চাল ও ৮ হাজার ৯০১ টন ধানের বিপরীতে ১৩ হাজার ৪৩৩ টন ৬১০ কেজি চাল ও ২১৪ টন ধান কেনা হয়েছে। শেরপুরে ২৯ হাজার ৯৭০ টন ৯৬০ কেজি চাল ও ৭ হাজার ৬১৬ টন ধানের বিপরীতে ১০ হাজার ২৬৪ টন ৪১০ কেজি চাল ও ১৪৫ টন ৬৮০ কেজি ধান কেনা হয়।
জানা যায়, আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় গত সপ্তাহে চাল ও ধান সংগ্রহে কিছুটা বিঘ্ন ঘটে। তবে সংগ্রহ মৌসুম পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে গতি বাড়বে বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে।