এই সেতু থেকে কেন লাফিয়ে আত্মহত্যা করে কুকুর?
প্রকাশ :
![এই সেতু থেকে কেন লাফিয়ে আত্মহত্যা করে কুকুর?](uploads/thumbnail/image_2021_07_30_1627663583_648.webp)
রহস্যময় এক সেতু থেকে লাফিড়ে পড়ে কুকুর। আজও এ রহস্যের সমাধান হয়নি। এই সেতুর নিচেই আছে পাথুরে এক নদী। যা অধিকাংশ সময়ই শুষ্ক থাকে। আর সেখান থেকে পড়ে এ পর্যন্ত প্রায় ৬০০ এরও বেশি কুকুর আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছে। যার মধ্যে মারা গেছে ৫০টিরও অধিক।
স্কটল্যান্ডের ডাম্বারটন শহরে ১৫০ বছর আগে নির্মাণ করা হয় ওভারটন ব্রিজ। বর্তমানে এই ব্রিজটি ডগ সুইসাইডাল ব্রিজ নামেই পরিচিত বিশ্বজুড়ে। নদী থেকে ব্রিজটি ৫০ ফুট উঁচুতে। জানা যায়, ব্রিজটির ডান দিকের এক স্থান থেকেই লাফ দেয় কুকুরগুলো।
লাফিয়ে পড়ে বেঁচে যাওয়া অনেক কুকুর আবার দ্বিতীয়বার আত্মহত্যা করতে একই স্থান থেকে লাফ দিতে দেয়। ইতিহাস অনুযায়ী, ১৯৯৪ সালে কেভিন নামের এক লোক নিজের বাচ্চাকে খ্রিস্টানবিরোধী ও শয়তান দাবি করে সেতুর নিচে ফেলে দিয়েছিল।
এ ঘটনার কিছুদিন পরেই সে নিজেও একই সেতু থেকে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। অনেকেই তাই মনে করেন, ব্রিজটিতে আছে অশুভ কোনো শক্তির প্রভাব। ড. স্যান্ড নামক প্রাণী আচরণের গবেষক বলেন, ব্রিজের দুই পাশেই রয়েছে পাথরের তৈরি মাঝারি উচ্চতার দেয়াল।
কুকুরগুলো তাই বুঝতেই পারে না সেতুর নিচে কী আছে? আর এই বিভ্রান্তি থেকে তারা লাফ দেয়। স্যান্ডসহ অন্য গবেষকরা মনে করেন, ঝাঁপ দেওয়ার এই প্রবণতাটি আসলে আত্মহত্যার ইচ্ছা নয়। ব্রিজটির আশপাশেই ছড়িয়ে আছে অসংখ্য মিঙ্ক (বেঁজিজাতীয় প্রাণী) ও ইঁদুর।
রৌদ্রজ্জ্বল দিনে বাতাসে এসব প্রাণীর গন্ধ অন্যান্য দিনের চেয়ে বেশি ছড়িয়ে যায়। কুকুরগুলো মিঙ্কের আর্কষণেই সেতুর দেওয়ালে চড়ে। তারপর এর উচ্চতা কত তা বোঝার আগেই ঝাঁপ দেয়। তবে নির্দিষ্ট সেতুটির এক স্থান থেকেই কেন কুকুরগুলো লাফ দেয় তার কোনো যুক্তি নেই কারও কাছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ব্রিজে ওঠার পরেই কুকুরগুলো অদ্ভুত আচরণ করতে থাকে। তারা যেকোনোভাবে ব্রিজ থেকে লাফ দিতে চায়। কুকুরদের এই অস্বাভাবিক আচরণকে শেষ পর্যন্ত প্যারানরমাল লাইনে ব্যাখ্যা করতে চেয়েছেন স্থানীয় মানুষ।
ওভারটন সেতু এলাকাটা যে স্টেটের অধীনে, ওটার একসময়কার মালিক জন হোয়াইটের বিধাবা স্ত্রীর প্রেতাত্মাকে নিয়ে নানা ধরনের গল্প-গাঁথা প্রচলিত আছে এই অঞ্চলে। কারো কারো মতে শ্বেতবসনা ওই নারীর আত্মাই কুকুরগুলোকে আত্মহত্যায় প্রলুব্ধ করে। তবে প্রাণী গবেষকরা এটা মানতে নারাজ।
প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুরতা রোধ নিয়ে কাজ করা স্কটিশ সোসাইটি কুকুরের অদ্ভুত এই আচরণটির কারণ খুঁজে বের করতে ওভারটনে এ পর্যন্ত অনেক গবেষককেই পাঠিয়েছে। তবে প্রকৃত কারণটি আজও অজানাই থেকে গেছে।