, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ অনলাইন সংস্করণ

৫ মাসের সন্তানকে হাসপাতালে রেখেই কোপার ফাইনালে খেলেন লাওতারো

  স্পোর্টস ডেস্ক

  প্রকাশ : 

৫ মাসের সন্তানকে হাসপাতালে রেখেই কোপার ফাইনালে খেলেন লাওতারো

কর্তব্যের ডাক কি নাড়ীর টানকেও হার মানাতে পারে? হয়তো পারে। নাহয় আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড লাওতারো মার্টিনেজ পারলেন কী করে? ৫ মাস বয়সী কন্যা খাট থেকে পরে মাথায় আঘাত পেয়ে হাসপাতালে তখন, সেই অবস্থাতেই বাবা লাওতারো নেমেছিলেন কোপা আমেরিকার ফাইনালে।

আর্জেন্টিনার এই স্ট্রাইকার রোববার ভোর ছয়টায় যখন রিও ডি জেনিরোর বিখ্যাত মারাকানা স্টেডিয়ামে নেমেছিলেন ব্রাজিলের বিপক্ষে ফাইনালে লড়তে, তাঁর পাঁচ মাস বয়সী সন্তান তখন হাসপাতালে। ছিল জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে।

সন্তানের জন্য সবচেয়ে বেশি টানটা থাকে বাবা মায়ের, তাতে মিশে থাকে বাড়তি উদ্বেগও। সেই সন্তানই যখন হাসপাতালে, তখন বাবা মায়ের রাতের ঘুম হারাম হয়ে যাওয়া খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু মার্টিনেজ সেই উদ্বেগ একপাশে রেখেই নেমেছিলেন মাঠে। তাতেই ক্ষান্ত হননি, দলকে ২৮ বছর পর শিরোপা জেতাতে রেখেছেন দারুণ ভূমিকাও।

আর্জেন্টাইন সংবাদ মাধ্যম জানাচ্ছে, যে সময় মাঠে গড়ায় ফাইনাল, যে ফাইনালে খেলছিলেন লাওতারো, সে সময় তার ৫ মাস বয়সী কন্যাসন্তান নীনা ছিল হাসপাতালে। আগের রাতে ডায়পার বদলানোর সময় খাট থেকে পড়ে যায় নীনা। আর তাতেই লাগে মাথায় গুরুতর চোট। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে, ২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণের পরামর্শ দেওয়া হয় অভিভাবকদের।

লাওতারো ফাইনাল জিতেই আর অপেক্ষা করেননি। দেশে ছুটে গিয়েছিলেন সঙ্গে সঙ্গেই। সেখানে গিয়েই পেয়েছেন আরেক সুখবর। কন্যাসন্তান মুক্তি পেয়েছে হাসপাতাল থেকে। ২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল তাকে। সে সময় অবস্থার অবনতি না হওয়াতেই দ্রুত মুক্তি পেয়েছে ছোট্ট নীনা।

লাওতারো আর্জেন্টিনায় ফিরেছিলেন ২৮ বছর পর দেশকে শিরোপার স্বাদ দিয়ে। ১৯৯৩ সালে সবশেষ কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল লা আলবিসেলেস্তেরা। এরপর আরও সাতটি টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেললেও সেটাই হয়ে ছিল ডিয়েগো ম্যারাডোনার দেশের সবশেষ আন্তর্জাতিক ট্রফি। অবশেষে এস্তাদিও দে মারাকানায় সে স্বপ্নপূরণ।

টুর্নামেন্টে দারুণ ফর্মে ছিলেন লিওনেল মেসি। তবে লাওতারোও কম আলো ছড়াচ্ছিলেন না। টুর্নামেন্টে গোল করেছেন দুটো, তবে সেমিফাইনালে তার করা গোলটা যে আর্জেন্টিনার কাছে কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। ফাইনালে গোল না পেলেও নিজের অন্য সব দায়িত্ব পালন করেছেন ঠিকঠাক, যাতেই ধরা দিল চলতি শতাব্দিতে দলের প্রথম আন্তর্জাতিক শিরোপা। ঘরে ফিরে তো আরও আনন্দিত হওয়ার উপলক্ষই পেলেন মেয়েকে সুস্থ স্বাভাবিক দেখে।

  • সর্বশেষ - খেলাধুলা