গ্রাহকের অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে এনজিও উধাও!
প্রকাশ :
বগুড়ার শেরপুরে সহজ শর্তে ঋণ দেয়ার কথা বলে গ্রাহকদের সঞ্চয়ের অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়েছে ‘কৃষি উন্নয়ন ফাউন্ডেশন’ নামে একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা।
গত সোমবার পৌর শহরের টাউন কলোনী এলাকায় অবস্থিত ‘ক্ষণিকালয়’ ভবনে ওই সংস্থার শাখা কার্যালয়ে ঋণ নিতে এসে গ্রাহকরা তালা ঝুলতে দেখেন। এ সময় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মুঠোফোনও বন্ধ পাওয়া যায়।
এদিকে সংস্থাটি উধাও হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হলে গ্রাহকরা হতাশ হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। মূহুর্তের মধ্যে খবরটি বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। এরপর থেকে সংস্থাটির অসংখ্য গ্রাহক অফিস কার্যালয়ে ছুটে আসছেন এবং ঘটনার সত্যতা যাচাই করে প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিচ্ছেন।
সরেজমিনে টাউন কলোনী এলাকায় সংস্থার কার্যালয়ে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে।
ভুক্তভোগী গ্রাহকরা জানান, সম্প্রতি কৃষি উন্নয়ন ফাউন্ডেশন নামে সংস্থাটি শেরপুর উপজেলায় তাদের শাখা অফিস চালু করে। এরপর পৌরসভাসহ উপজেলার অন্তত ১০টি ইউনিয়নে তাদের কার্যক্রম শুরু করে। শরীফ উদ্দীন নামে এক ব্যক্তি শাখা ব্যবস্থাপক হিসেবে নিজেকে পরিচয় দেন। পাশাপাশি বেশ কয়েকজন মাঠকর্মীও নিয়োগ দেন তিনি। এরা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামাঞ্চল ঘুরে কম সুদে এবং সহজ শর্তে ঋণ দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সদস্য ভর্তি এবং সঞ্চয় আদায় শুরু করে। এক লাখ টাকা ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে ১০ হাজার টাকা সঞ্চয় জমা রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়। বেশি ঋণ নিলে সে অনুযায়ী সঞ্চয় জমা রাখার নিয়ম করে দেন তারা। এলাকার অসহায়-দরিদ্ররা ঋণ পেতে সেখানে সঞ্চয় জমা রাখেন। ঋণ বিতরণের নির্ধারিত দিন অফিসে তালা লাগিয়ে উধাও হয়ে যায় এ প্রতারক চক্র। তারা গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রায় অর্ধকোটি টাকা জমা নিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সংস্থাটিকে অফিস ভাড়া দেয়া ভবনের মালিক মোমিনুল হক বলেন, কৃষি উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের কথা বলে এক মাস আগে তার ভবনটি ভাড়া নেয়। চুক্তি অনুযায়ী জামানত হিসেবে যে টাকা দেয়ার কথা ছিল সেটা এখনও পরিশোধ করেনি। এরই মধ্যে পালিয়েছে তারা।
শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিয়াকত আলী সেখ বলেন, সংস্থাটি কাজ শুরু করার ব্যাপারে অনুমতি নেয়নি। এ বিষয়ে আমরা অবগত ছিলাম না। ঘটনা জানার পর গ্রাহকদের থানায় অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে।
শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম জানান, ভুক্তভোগীদের একটি অভিযোগ পেয়েছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে পুলিশ।