, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ অনলাইন সংস্করণ

সেতুমন্ত্রী উন্নয়ন করলেও পরিবহন ব্যবস্থাপনায় টোটালি ফেল: চুন্নু

  নিজস্ব প্রতিবেদক

  প্রকাশ : 

সেতুমন্ত্রী উন্নয়ন করলেও পরিবহন ব্যবস্থাপনায় টোটালি ফেল: চুন্নু

গণপরিবহনের অব্যবস্থাপনার কঠোর সমালোচনা করে জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, সড়ক মন্ত্রীকে বলবো আপনি পদ্মা ব্রিজসহ অনেক উন্নয়ন করেছেন। কিন্তু আপনি টোটালি ফেল ট্রান্সপোর্টেশনের (সড়ক ব্যবস্থাপনায়) বিষয়ে।

রোববার (৩ এপ্রিল) জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এসময়ে তিনি সরকার, সরকারের সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ও বাস মালিক সমিতি নিয়ে সমালোচনা করেন।

মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ২৪ লাখ ড্রাইভিং লাইসেন্স আটকে আছে। ঢাকা শহরে আজ গাড়ি চলে না। ভালো বাস নেই। সরকারের কী ঢাকা নতুন পাঁচশ/এক হাজার বাস নামানোর সক্ষমতা নেই? মানুষ নিজের টাকা দিয়ে টিকিট কিনে গাড়িতে যাবে। কিন্তু লাইনের পর লাইন। টিকিট কিনে ওঠার কোনো বাস নেই। এতো অপ্রতুল পরিবহন। এ বিষয়টি দৃষ্টি দেওয়ার জন্য অনুরোধ করবো।

বাস মালিকরা সরকারের সঙ্গে যোগসাজশে মানুষকে কষ্ট দিচ্ছেন কি না সেই প্রশ্নও তোলেন তিনি। এসময় সংসদে পাশের সিটে বসা মশিউর রহমান রাঙ্গার প্রতি ইঙ্গিত করে চুন্নু বলেন, আমার পাশে বসেছেন বাংলাদেশ বাস ওনার্স সমিতির সভাপতি। ওনাদেরকে বলবো আপনারা মানুষের প্রতি দরদী হন। যে সমস্ত গাড়ি, ব্রেক নেই, পুরোনো ইঞ্জিন, রং নেই..। এগুলো সরকার- কেউ দেখে না। আপনারা সরকারের সঙ্গে যোগসাজসে জনগণকে কষ্ট দিচ্ছেন।

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী নিহতসহ সম্প্রতি রাজধানীতে তিনটি দুর্ঘটনায় প্রসঙ্গ টেনে মহাসচিব জাপা বলেন, বর্তমান সরকার অনেক উন্নয়নের দাবিদার। হ্যাঁ উন্নয়ন অনেক করেছে। কিন্তু রাজধানী শহর ঢাকায় ট্রান্সপোর্টের একটি নীতিমালা, সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা চোখে দেখিনি।

তিনি আরও বলেন, ঢাকা শহরে ঘর থেকে বের হওয়া কোন উপায় নেই। ঢাকা শহরে যেসব বাস চলে তার বেশিরভাগই পুরোনো ও লক্কর-ঝক্কর। লাইসেন্স নেই। কোনো আইন মানে না। রাস্তায় যেখানে সেখানে পার্ক করে রাখে।

মুজিবুল হকের বক্তব্যের জবাবে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মসিউর রহমান বলেন, আমার কলিগ। আমি উনার আগে জাতীয় পার্টির মহাসচিব ছিলাম দুই বছর। তারপর উনি মহাসচিব হয়েছেন। সেই ক্ষোভে কি না, বা আমি বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির সভাপতি সে ক্ষোভে কি না বা জনগণের দুর্দশা দেখে কি না- কীভাবে উনি বলেছেন আমি বুঝতে পারলাম না। পরিবহনের এই বিষয়টি আমাকে বললেনও না হঠাৎ করে বললেন- আমার সভাপতি আমার পাশে রয়েছেন।

রাঙ্গা বলেন, ঢাকায় আগে পরিবহনগুলো ৮/৯টি ট্রিপ দিতো। যানজটের কারণে এখন একটি বাস তিনটির বেশি ট্রিপ দিতে পারে না। আয় আগের তুলনায় কমে গেছে। উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড হোক আর যে কোনো কারণে হোক গতিসীমা কমে গেছে।

গাড়ির ফিটনেস না থাকা এবং লক্কর-ঝক্কর বাস প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ফিটনেস আছে কিনা তা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও বিআরটিএ দেখবে।

তিনি বলেন, গাড়িগুলো অসামঞ্জস্যপূর্ণ ভাবে চলে না তা আমি করবো বলবো না। এটা বিভিন্ন সময় হয়ে থাকে। চালক গুলো করে থাকে। আমরা বাসের মালিক আমরা তো চালাক না। আমরা গাড়ি চালাই না এজন্য এ বিষয়টি বলতে পারবোনা। তবে ফিটনেসের বিষয়টি আমাদের পরিবহন মালিকদের। ফিটনেস না থাকলে জরিমানা করা হয়। ডাম্পিং স্টেশনে নিয়ে গাড়ি গুলো কেটে ফেলা হয় যাতে করে আর চালাতে না পারে।

তিনি বলেন, উন্নয়নের প্রসববেদনার জন্য আমাদের এই সমস্যা হচ্ছে আমাদের এটা মেনে নিতে হবে।

মসিউর রহমান বলেন, কোনো গাড়ির বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে তা তাকে বললে তিনি সংসদে বসেই জরুরি ব্যবস্থা নিতে পারতেন।

এদিকে গত বৃহস্পতিবার তাকে নিয়ে সংসদে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের দেওয়া বক্তব্যেরও জবাব দেন চুন্নু। তিনি বলেন, তথ্যমন্ত্রী আমাকে বললেন, আমি নাকি অসত্য কথা বলেছি। আমার অসত্য কথা বলার কোনো প্রয়োজন নেই, আমি ব্যবসা করি না। আমি বাজারে যাই, এক সপ্তাহ আগে যে বেগুনের দাম ছিল ৪০ টাকা পরশু দিন বাজারে গিয়ে দেখি ৭০ টাকা। ৩০ টাকার শসা ১০০ টাকা কেজি। ৩০ টাকার পেঁয়াজের কেজি ৩৫ টাকা। চিনির দাম বেড়েছে কেজিতে ৫ টাকা। ৬৩০ টাকার গরুর গোশত ৬৫০ টাকা। শুধু সয়াবিন তেলের দাম কমেছে বৃদ্ধি পায়নি। তথ্যমন্ত্রীকে বলবো, কথা বলতে পয়সা লাগে না কিন্তু আমি অসত্য কথা বলেছি... ‘অসত্য কথা’ শব্দটি কখন ব্যবহার করবেন এটা উনার শেখা প্রয়োজন।

  • সর্বশেষ - রাজনীতি