, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ অনলাইন সংস্করণ

বঙ্গবন্ধুর খুনি রিসালদার মোসলেহ উদ্দীন এখন ভারতে বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের হেফাজতে

  শাহ মোহাম্মদ রনি

  প্রকাশ : 

বঙ্গবন্ধুর খুনি রিসালদার মোসলেহ উদ্দীন এখন ভারতে বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের হেফাজতে

ভারতীয় গোয়েন্দাদের সহযোগিতায় আটক বঙ্গবন্ধুর খুনি রিসালদার (বরখাস্ত) মোসলেহ উদ্দীন এখন ভারতে বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের হেফাজতে। কয়েকদিন আগে ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়া ক্যাপ্টেন (বরখাস্ত) আব্দুল মাজেদের গ্রেফতার হওয়ার খবর শুনেই নিজের মৃত্যু সংবাদ ছড়িয়ে এলাকা থেকে অন্যত্র গা-ঢাকা দিয়েছিল খুনি মোসলেহ উদ্দীন। কিন্তু তার শেষ রক্ষা হয়নি। ভারতীয় গোয়েন্দাদের জালে ধরা পড়ে সে। পালিয়ে থাকা আস্তানা থেকে অন্যত্র পালানোর সময় সীমান্তের জিরো পয়েন্টে বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের হাতে ধরা পড়েছে ইতিহাসের জঘন্যতম এই খুনি। তবে বিভিন্ন মাধ্যমে এ খবর ছড়িয়ে পড়লেও সোমবার রাত পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে কেউ বিষয়টি স্বীকার করেন নি।

জানা যায়, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোরে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের বাসায় সপরিবারে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা হয়। যে ক’জন সেনা কর্মকর্তা এই হত্যাকাণ্ড মিশনে অংশ নেয় তার মধ্যে রিসালদার মোসলেহ উদ্দীন অন্যতম। গুলির শব্দ শুনে বঙ্গবন্ধু যখন ঘটনা জানার জন্য নীচে নামছিলেন সেই সময় সিঁড়িতে বঙ্গবন্ধুকে নিজ হাতে বুকে গুলি করে হত্যা করে এই মোসলেহ উদ্দীন। এরপর দীর্ঘ বছর ধরে সে বিভিন্ন দেশে পালিয়ে থাকে। সর্বশেষ সে ভারতের উত্তর ২৪ পরগনার গোবরডাঙ্গার ঠাকুরনগর এলাকায় বসবাস শুরু করে। সে ওই এলাকায়  ইউনানী চিকিৎসক হিসেবে পরিচিত ছিল। ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়া ক্যাপ্টেন (বরখাস্ত) আব্দুল মাজেদ ৬ এপ্রিল গ্রেফতার হওয়ার পর গোয়েন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদে সে রিসালদার মোসলেহ উদ্দীন  সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেয়। মাজেদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে মোসলেহ উদ্দীনের পরিবারের সদস্যদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করে গোয়েন্দারা।


ভারতীয় গোয়েন্দাদের একটি সূত্র কলকাতার আনন্দবাজারকে মোসলেহ উদ্দীনের বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের হাতে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। গোয়েন্দা সূত্রটি পত্রিকাটিকে জানিয়েছে লকডাউনের সময় এ দেশ থেকে  মোসলেহ উদ্দীনকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়ায় সমস্যা হতে পারে বলে বাংলাদেশের গোয়েন্দারা বিষয়টি ভারতের গোয়েন্দাদের জানায়। ভারতীয় গোয়েন্দারা এই খুনিকে কার্যত তাড়িয়ে সীমান্তের কোনও একটি অরক্ষিত এলাকা দিয়ে বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের হাতে তুলে দিয়েছে। মুজিবের আর এক খুনিও কি এই বঙ্গে শিরোনামে আনন্দবাজার পত্রিকা সোমবার রিপোর্ট প্রকাশ করে। তবে ভারতীয় গোয়েন্দা সূত্র পত্রিকার কাছে স্বীকার করলেও সরকারিভাবে এখনও কোনো কিছুই বলা হয়নি। এমনকি পশ্চিমবঙ্গ সরকারও  মুখ খোলেনি। কলকাতার গোয়েন্দা সূত্র নিশ্চিত করলেও বাংলাদেশ সরকার এখনও পর্যন্ত এ ব্যাপারে কিছুই বলেনি। বিষয়টি নিয়ে সর্বোচ্চ গোপনীয়তা বজায় রাখা হচ্ছে।

সূত্র জানায়, যে কোনো সময় জাতির সামনে এই সুখবর আসতে পারে বলে। রোববার রাতে নিউইয়র্ক মেইল বঙ্গবন্ধুকে গুলি করে হত্যাকারী রিসালদার মোসলেহ উদ্দীন ভারতে আটক শিরোনামে এক্সক্লুসিভ রিপোর্ট প্রকাশ করে। রিপোর্ট প্রকাশের পর কয়েক মিনিটের মধ্যেই তা ভাইরাল হয়। বাংলাদেশ ও ভারতের মিডিয়া কর্মীরা চারিদিকে খোঁজ খবর নিতে থাকেন বিষয়টির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য। তবে দু’দেশের সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার না করায় অনেকেই রিপোর্ট করতে পারেন নি।

  • সর্বশেষ - রাজনীতি