, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ অনলাইন সংস্করণ

রাখাইনের পোন্নাগিউন সামরিক ঘাঁটি দখল আরাকান আর্মির, পরবর্তী টার্গেট রাজধানী

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  প্রকাশ : 

রাখাইনের পোন্নাগিউন সামরিক ঘাঁটি দখল আরাকান আর্মির, পরবর্তী টার্গেট রাজধানী

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের পোন্নাগিউনের দেশটির সামরিক জান্তার সর্বশেষ ঘাঁটিটি দখল করে নেওয়ার দাবি করেছে জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)। এর মধ্য দিয়ে রাজ্যের রাজধানী সিতওয়ে থেকে প্রায় ২০ মাইল উত্তর-পূর্ব দিকে শহরটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দাবি করেছে বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি। তারা দাবি করেছে, এখন রাখাইনের রাজধানী সিতওয়ের দিকে দৃষ্টি তাদের।

ওই সামরিক ঘাঁটি দখলের সময় চলা যুদ্ধে সেনাবাহিনীর যুদ্ধবিমান ও নৌবাহিনীর যুদ্ধযান থেকে বোমা হামলা করা হয়। আরাকান আর্মির বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালায় তারা। এক পর্যায়ে পোন্নাগিউনের পতনের পর সামরিক বাহিনীর যুদ্ধবিমান জাই তি পিয়ান ব্রিজ ধ্বংস করে দেয়। এই ব্রিজটি পোন্নাগিউন ও রাথেডাংকে সংযুক্ত করেছিল। সোমবার স্থানীয় সময় বিকাল ৫টার দিকে সেখানে ১২ বার হামলা চালায় সামরিক জান্তা। মঙ্গলবার পর্যন্ত আরাকান আর্মির কাছে আটটি শহরের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে সামরিক বাহিনী। এর মধ্যে আছে চিন রাজ্যের পালেতোয়া।

এর বাইরে আছে বিপুল পরিমাণ বড় ঘাঁটি ও আউটপোস্ট, নৌযান। গত বছরের ১৩ নভেম্বর থেকে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বড় ধরনের আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে আরাকান আর্মি ও অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর বিদ্রোহীরা। তারপর থেকে ধারাবাহিকভাবে একের পর এক পরাজিত হচ্ছে সেনাবাহিনী।আরাকান আর্মির মুখপাত্র ইউ খাইং থুখা সোমবার এক অনলাইন সংবাদ ব্রিফিংয়ে বিষয়টি জানান।

তিনি বলেন, পুরো রাখাইনকে স্বাধীন না করা পর্যন্ত এবং রাজ্য থেকে সামরিক শাসকগোষ্ঠীকে উৎখাত না করা পর্যন্ত অব্যাহতভাবে লড়াই চালিয়ে যাবে আরাকান আর্মি। সামরিক জান্তার সঙ্গে চীনের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে আরাকান আর্মি-সহ তিনটি জাতিগত বিদ্রোহী গ্রুপের জোট দ্য থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স জানুয়ারিতে শান রাজ্যের উত্তরাঞ্চলে হামলা চালানো স্থগিত করে।

কিন্তু সেই যুদ্ধবিরতি রাখাইন রাজ্যের জন্য প্রযোজ্য ছিল না। এই রাজ্যে সামরিক শাসকের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রাখে আরাকান আর্মি। এই গ্রুপটির ডেপুটি কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ড. নিও তুন অং সোমবার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, হাইজেং চুক্তি অনুযায়ী বর্তমানে শুধু উত্তরাঞ্চলীয় শান রাজ্যে যুদ্ধবিরতি চলছে। চীনের মধ্যস্থতায় আলোচনায় আমরা চীন-মিয়ানমার সীমান্ত বাণিজ্য, অনলাইনে অনিয়ম এবং শান রাজ্যের সীমান্তে স্থিতিশীলতা নিয়ে কথা বলেছি। রাখাইনে যুদ্ধবিরতি নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। 

এখন পোন্নাগিউন দখলের পর রাখাইনের রাজধানী সিতওয়ে দখল করে নিতে পারে আরাকান আর্মি। পোন্নাগিউন থেকে মাত্র ৪৫ মিনিটের পথ সিতওয়ে। একজন সামরিক বিশ্লেষক বলেছেন, সামরিক জান্তার সেনাদের কাছ থেকে যেসব অস্ত্র জব্দ করেছে আরাকান আর্মি, এখন সেটা ব্যবহার করেই তারা রাজধানীতে সামরিক ঘাঁটিকে টার্গেট করতে পারবে। 

তিনি বলেন, এই স্থানটি সিতওয়ের খুবই কাছে। পোন্নাগিউন থেকেই সিতওয়েতে সামরিক ঘাঁটিতে গোলা নিক্ষেপ করা সম্ভব। আরাকান আর্মি এরই মধ্যে রাখাইন রাজ্যের বেশির ভাগ যুদ্ধে বিজয়ী হয়েছে। এর অর্থ এই নয় যে, তারা পুরো রাজ্যে জয়লাভ করেছে। রাজ্যের অন্য এলাকাগুলোতে এখনও কিছু সামরিক ঘাঁটি আছে।

  • সর্বশেষ - আন্তর্জাতিক