, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১ অনলাইন সংস্করণ

বিশ্বের প্রথম রোবট চিত্রশিল্পী যেভাবে আঁকেন ছবি

  ফিচার ডেস্ক

  প্রকাশ : 

বিশ্বের প্রথম রোবট চিত্রশিল্পী যেভাবে আঁকেন ছবি

বিশ্বব্যাপী এখন প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের ছড়াছড়ি। স্বাস্থ্যসেবা থেকে শুরু করে মহাকাশ অনুসন্ধান, সব কিছুতেই রোবট ব্যবহার করা হচ্ছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন রোবট দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে বিভিন্ন হোটেল-রেস্টুরেন্ট। এমনকি ঘরের কাজও করছে রোবট।

তবে বিশ্বে এবারই প্রথম খোঁজ মিলল রোবট চিত্রশিল্পীর। অবিকল মানুষের মতো দেখতে এই নারী রোবটের নাম দেওয়া হয়েছে আই দা। তার চিত্রকর্ম তাক লাগিয়ে দিয়েছে বিশ্ববাসীকে। লন্ডনে আই-দা’র এক চিত্রকর্ম প্রদর্শনী হতেই প্রথম দিনে বিক্রি হয়েছ ১ মিলিয়নের বেশি মূল্যের পোট্রেট।

আই-দা রোবটের মধ্যে শিল্প-কর্ম ও সৃজনশীলতার জন্য বিশেষ প্রোগ্রাম ইনস্টল করা হয়েছে। লন্ডনের ডিজাইন মিউজিয়ামে এরই মধ্যে আই-দা তার দক্ষতা প্রদর্শন করেছে। এই রোবটটি রোবোটিক্স ফার্ম ‘ইঞ্জিনিয়ার্ড আর্টস’ এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের করাপ এআই আলগোরিদম বিকাশের সহযোগিতার ফলাফল।

jagonews24

মার্কিন অভিনেত্রী কিম কার্দাশিয়ানের মতোই দেখতে অনেক আই-দা। অনেকে মজার ছলে বলছেন কার্দাশিয়ানের ছোট বোন সে! মানুষের চোখে চোখ রেখেই তার ছবি এঁকে দিতে পারে আই-দা। এ সময় সে তার চোখের পলক ফেলে, আর তখনই আই-দার সামনে থাকা ব্যক্তির ছবি চোখের মধ্যে ক্যাপচার করে নেয়।

jagonews24

তারপর ওই ছবি কম্পিউটিং ভিশন সিস্টেমের মাধ্যমে মনের মতো আঁকেন আই-দা। তার মধ্যে চিত্র শিল্প বিষয়ক সব ধরনের জ্ঞান দেওয়া আছে। সেখান থেকেই তথ্য কাজে লাগিয়ে অবিশ্বাস্য সব পোট্রেট আঁকছে আই-দা। তার চিত্রকর্ম দেখে প্রদর্শীতে আসা দর্শকরাও বাহবা দিচ্ছেন। সবাই খুশি এমন রোবট পেয়ে, যে কি-না শিল্পকে নিজের মধ্যে লালন করছে!

jagonews24

আই-দা-র নির্মাতা ও গ্যালারি পরিচালক আইদন মেলারি এই বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন রোবট সম্পর্কে জানান, ‘চিত্রকর্মের প্রতিকৃতি সম্মিলিত লেয়ারিং কৌশলে বাস্তবায়িত হয়। আই-দার মধ্যে অঙ্কন, অ্যালগরিদম, ফটোগ্রাফ সবই আছে। সবগুলো লেয়ারের ফলাফল হলো একটি সুন্দর চিত্রকর্ম।'

jagonews24

কম্পিউটিংয়ের অগ্রদূত অ্যাডা লাভলাসের নাম অনুসারে, আই-দার নামকরণ করা হয়েছে। টানা দুই বছর গবেষণা ও পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে প্রোগ্রামার, রোবোটিক, শিল্প বিশেষজ্ঞ এবং মনোবিজ্ঞানীদের একটি দল তৈরি করেছেন আই-দাকে।

jagonews24

২০১৯ সালে আই-দা’কে তৈরি করা হলেও এই দুই বছর ধরে তার মধ্যে এআই প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে আপডেট করা হয়েছে। লন্ডনে সম্প্রতি আই-দা’র নিজস্ব পোট্রেটের প্রদর্শনী হয়েছে। বিশালাকার একেকটি পোট্রেটে নিজের চেহারা তুলে ধরেছে আই-দা রোবট। প্রযুক্তি এখন কতটা এগিয়েছে, তারই নিদর্শন প্রমাণ করবে আই-দা।

jagonews24

অক্সফোর্ড গ্যালারিস্ট ও আই-দা’র নির্মাতা মেলার বলেন, ‘এই রোবট তৈরির পরে মানব শিল্পীরা নিজেদেরকে অসহায় মনে করছেন। অনেকেই বলছেন, এটি মোটেও কাজের নয় বরং শিল্পকে ধ্বংস করবে এসব কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। আসলে আই-দা কারও জন্যই হুমকিস্বরূপ নয় বরং এটি প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন। এটি নিয়ে গর্ব করা উচিত।’

সূত্র: নিউজ আর্ট/ইউরো নিউজ/দ্য গার্ডিয়ান

  • সর্বশেষ - ফিচার