, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ অনলাইন সংস্করণ

ডলার বাজার আরও অস্থির, দামে রেকর্ড

  নিজস্ব প্রতিবেদক

  প্রকাশ : 

ডলার বাজার আরও অস্থির, দামে রেকর্ড

আবার অস্থির ডলারের বাজার। দেশের খোলা বাজারে ডলারের দাম আবারও বেড়েছে। নগদ ডলারের দাম এক দিনে ৪ টাকা বেড়ে রেকর্ড ১২৬ টাকা ৫০ পয়সায় বিক্রি হচ্ছে। গত বুধবারও দাম ছিল ১২২ থেকে ১২৩ টাকা। ব্যাংক ও খোলা বাজারে বিনিময় হারের ব্যবধান কয়েক মাস কম থাকার পর তা আবারও বাড়ছে।

বেসরকারি ব্যাংক এমডিদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাফেডা) নির্ধারিত ব্যাংকগুলোয় ডলার দর রয়েছে ১১১ টাকা। খোলা বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ১২৬ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১২৭ টাকায়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মহামারি করোনার পর অর্থনীতিতে ডলারের বাড়তি চাহিদা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ডলারের দর হুহু করে বাড়িয়ে দিয়েছে। গত কয়েক মাস ব্যাংক ও খোলা বাজারে ডলারের বিনিময় হারের মধ্যে ব্যবধান কম ছিল। ব্যাংকে ডলারের মজুদ কম, দাম নির্ধারণ ও বিদেশে যাওয়া শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি হুন্ডির মাধ্যমে লেনদেন বেড়ে যাওয়ায় ব্যাংক ও খোলা বাজারে দামের ব্যবধান আবারও বেড়েছে।

জানা গেছে, বেশিরভাগ বাণিজ্যিক ব্যাংক ভ্রমণকারীদের কাছে ডলার বিক্রি করছে না। ফলে ডলার কিনতে তারা খোলা বাজারে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। রাজধানীর মতিঝিলে বেশ কয়েকটি মানি চেঞ্জার গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, তারা ১২৬ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১২৭ টাকায় ডলার বিক্রি করছেন। মানি চেঞ্জারদের একজন বলেন, চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়া ব্যক্তি বা ভ্রমণকারীরা ডলার কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন। মানি চেঞ্জাররা বিদেশি মুদ্রার যে মূল্য তালিকা করেছেন সেখানে ডলার বিক্রির দাম ১১৩ টাকা ৩০ পয়সা ও কেনার দাম ১১১ টাকা ৮০ পয়সা উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এই হার কোথাও মানা হয় না। মানি চেঞ্জার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সেক্রেটারি হেলাল উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ঘোষিত বিনিময় হার না মানলে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ব্যাংক নির্ধারিত ডলারের দাম খোলা বাজারে বাড়তি চাহিদা তৈরিতে সহায়তা করেছে। তারা মনে করেন, খোলা বাজারে প্রবাসী বাংলাদেশিরা যখন ডলার প্রতি ১২৭ টাকা পাবেন, তখন তারা ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠানো থেকে বিরত থাকবেন। এ বিষয়ে গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত অনুসারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বাজার ভিত্তিক বিনিময় হার চালু করা উচিত।

বিএমইটির তথ্য বলছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর সময়ে ৯ লাখ ৮৯ হাজার ৬৮৫ জন শ্রমিক বিভিন্ন ধরনের কাজ নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গেছেন। ২০২২ সালের একই সময়ে বিদেশে যাওয়া শ্রমিকের সংখ্যা ছিল ৮ লাখ ৭৪ হাজার ৭৩৯ জন। প্রবাসে কর্মসংস্থান সৃষ্টির ক্ষেত্রে ঐতিহাসিক ঘটনা। ২০২২ সাল থেকে বিদেশে শ্রমিক পাঠানোর রেকর্ড করলেও প্রবাসী আয় কমছে। আবার দেশের বৈদেশিক মুদ্রার মজুদও দুর্বল হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিসংখ্যান বলছে, গত ৪১ মাসের মধ্যে সেপ্টেম্বরে সর্বনিম্ন ১৩৪ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। এর আগে সবচেয় কম ১০৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে।

  • সর্বশেষ - অর্থ-বাণিজ্য