, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ অনলাইন সংস্করণ

বাণিজ্য-বিনিয়োগ বাড়াতে পণ্যের মান-গ্রহণযোগ্যতার বিকল্প নেই

  নিজস্ব প্রতিবেদক

  প্রকাশ : 

বাণিজ্য-বিনিয়োগ বাড়াতে পণ্যের মান-গ্রহণযোগ্যতার বিকল্প নেই

বিশ্ববাজারে দেশীয় পণ্যের বাণিজ্য-বিনিয়োগ সম্প্রসারণে পণ্য এবং সেবার মান ও গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করার বিকল্প নেই বলে জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।

তিনি বলেছেন, পণ্যের মান ও গ্রহণযোগ্যতাই ভোক্তার মনে আস্থার তৈরি করে। যার মাধ্যমে বিকশিত হয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ।

রোববার (১২ জুন) রাজধানীর ঢাকা চেম্বারে ‘অ্যাক্রেডিটেশন; টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন এবং পরিবেশ সংরক্ষণে সহায়তা” শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। বিশ্ব অ্যাক্রেডিটেশন দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ড (বিএবি) এবং ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) যৌথভাবে এ সেমিনার আয়োজন করে।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, পণ্য ও সেবার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভে অ্যাক্রেডিটেশনের কোনো বিকল্প নেই। দেশীয় ল্যাবরেটরিগুলোতে আধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজনের মাধ্যমে পণ্যের সনদের আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করতে হবে। স্থানীয় পণ্য ও সেবা রপ্তানি সম্প্রসারণে আন্তর্জাতিক সনদ সংস্থাগুলোর সঙ্গে দেশীয় সংস্থার সমন্বয় খুবই জরুরি। এ লক্ষ্যে সরকার একটি কার্যকরী অ্যাক্রেডিটেশন অবকাঠামো ইকো-সিস্টেম নির্মাণে বদ্ধপরিকর। এ বিষয়ে সরকার একটি মান নীতিমালা প্রণয়নের বিষয়েও চিন্তাভাবনা করছে।

সেমিনারে শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, সনদ প্রদানকারী সংস্থাসমূহের মান ও অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে রপ্তানি বাণিজ্য সম্প্রসারণে কার্যকরী ভূমিকা রাখা যাবে। এ লক্ষ্যে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। আমাদের স্থানীয় সনদের আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা অর্জনে আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অ্যাক্রেডিটেশনের ভূমিকা অপরিসীম।

শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা বলেন, অপরিকল্পিত শিল্পায়ন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কারণে বৈশ্বিক জলবায়ুতে নেতিবাচক প্রভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। এর প্রভাব বাংলাদেশেও প্রতীয়মান। এ অবস্থায় শিল্প উদ্যোক্তাসহ সব স্তরের মানুষকে পণ্য ও সেবার গুণগত মান নিশ্চিতকরণে আরও সচেতন হতে হবে।

তিনি বলেন, দেশীয় পণ্যের রপ্তানির বাজার সম্প্রসারণে পণ্যের আন্তর্জাতিক মান নিশ্চিতকরণ ও যথাযথ অবকাঠামোর কোনো বিকল্প নেই। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অ্যাক্রেডিটেশনকে ‘ই-পাসপোর্ট’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। দেশীয় পণ্যের অ্যাক্রেডিটেশন নিজ দেশে সম্পন্ন করা সম্ভব হলে রপ্তানি সম্প্রসারণের পাশাপাশি সময়-ব্যয় দুটোই কমানো সম্ভব।

সেমিনারে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, দেশীয় শিল্পপণ্য ও সেবার মানোন্নয়ন, ভোক্তা অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিধি বাড়াতে অ্যাক্রেডিটেশনের গুরুত্ব অপরিসীম। এসডিজি লক্ষ্যমাত্রায় টেকসই উন্নয়নকে প্রধান্য দেওয়া হলেও আমাদের শিল্পখাতের অবকাঠামোর টেকসই উন্নয়ন তেমনভাবে পরিলক্ষিত হয় না। বাংলাদেশের রপ্তানিমুখী পণ্যগুলো, যেমন: চামড়া, পাট ও পাটজাত পণ্য, প্লাস্টিক, হিমায়িত খাদ্য প্রভৃতির রপ্তানি আরও বাড়ানোর লক্ষ্যে টেকসই ব্যবসায়িক পরিবেশ বাস্তবায়নে সরকার গৃহীত নীতিমালার আশু বাস্তবায়নের ওপর জোর দিতে হবে।

এসময় তিনি দেশের টেস্টিং ল্যাবরেটরিগুলোর সনদের আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা অর্জনের আহ্বান জানান।

সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ড (বিএবি) মহাপরিচালক মো. মনোয়ারুল ইসলাম বলেন, নিরাপদ পণ্য ও সেবার জন্য সাপ্লাই চেইনের প্রতিটি পর্যায়ে মান নিশ্চিত করা আবশ্যক। একইসঙ্গে নিরাপদ পণ্য ও সেবা উৎপাদনের জন্য একটি কার্যকর জাতীয় মান অবকাঠামোও একান্ত অপরিহার্য।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক।

তিনি বলেন, নিরাপদ পণ্য, সেবা এবং মান নিশ্চিতকরণের বিষয়সমূহ আমাদের সবার জন্য খুবই জরুরি। ২০০৬ সালে স্থাপিত হলেও বিএবি একটি কার্যকরী প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে এটিকে আরও কার্যকর করতে হবে। যার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাজারে বিএবির গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে।

সেমিনারে অ্যাক্রেডিটেশন সনদ পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর-সাইন্স ল্যাবরেটরি)-এর চামড়া গবেষণা ইন্সটিটিউট, যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইটিএস ল্যাব টেস্ট বাংলাদেশ লিমিটেডের ঢাকা ল্যাবরেটরি, তুরস্কভিত্তিক সংস্থা ল্যাব রাইট বাংলাদেশ লিমিটেডের ঢাকা ল্যাবরেটরি, কন্টিনেন্টাল ইন্সপেকশন কো. বিডি লিমিটেডের টেস্টিং ল্যাবরেটরি এবং এজিএস কোয়ালিটি অ্যাকশন।

  • সর্বশেষ - অর্থ-বাণিজ্য