, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ অনলাইন সংস্করণ

মসিক নির্বাচনে প্রার্থীতা ফিরে পেতে ঋণ খেলাপি মীর হাবিবুর রহমানের বিভিন্ন মহলে দৌড়ঝাঁপ

  বিশেষ প্রতিবেদক

  প্রকাশ : 

মসিক নির্বাচনে প্রার্থীতা ফিরে পেতে ঋণ খেলাপি মীর হাবিবুর রহমানের বিভিন্ন মহলে দৌড়ঝাঁপ

ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রার্থীতা ফিরে পেতে বিভিন্ন মহলে দৌড়ঝাঁপ করছেন ঋণ খেলাপি মীর হাবিবুর রহমান। তিনি ৫ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী ছিলেন। এরই মধ্যে খেলাপি ঋণ পরিশোধ করেছেন। মনোনয়নপত্র বাছাই শেষে রিটার্নিং অফিসার ১৫ ফেব্রুয়ারি তার প্রার্থীতা বাতিল করেন। সোমবার তার আপিল শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। মঙ্গলবার আপিলের রায় ঘোষণা করবেন মসিক নির্বাচনের আপিল কর্মকর্তা ও বিভাগীয় কমিশনার উম্মে সালমা তানজিয়া। সূত্র মতে, মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া ৩২ জন প্রার্থীর মধ্যে রবিবার ১৬ জনের আপিল শুনানি হয়েছে। মঙ্গলবার বাকি ১৬ জনের আপিল শুনানি হবে। নির্বাচনী বিভিন্ন বিষয় নিয়ে হাইকোর্টে মামলা পরিচালনা করা অ্যাডভোকেট আজিম উদ্দিন পাটোয়ারী দৈনিক জাগ্রত বাংলা’কে জানান, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন আইন অনুযায়ী কারো প্রার্থীতা বাতিলের দিন ঋণ পরিশোধ করলে আপিলে প্রার্থীতা ফিরে পাওয়ার সুযোগ নেই। হলফনামায় তথ্য গোপন করে প্রার্থী বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো’র (সিআইবি) রিপোর্টে ঋণ খেলাপি ধরা পড়লে তিনি আর বৈধ হতে পারবেন না। তিনি বলেন, ছোট কোনো ত্রুটি থাকলে আপিলে প্রার্থীতা ফিরে পাওয়া সম্ভব। আপিলে প্রার্থীতা ফিরে না পেলে কাউন্সিলর প্রার্থী মীর হাবিবুর রহমান হাইকোর্টে আবেদন করবেন বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে। এরই মধ্যে শুরু করেছেন ফাইলিং প্রস্তুতির কাজ।
জানা যায়, মনোনয়নপত্র বাছাই শেষে রিটার্নিং অফিসার ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন চৌধুরী বৃহস্পতিবার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মীর হাবিবুর রহমানের প্রার্থীতা বাতিল ঘোষণা করেন। ঋণ খেলাপি থাকার পরও হলফনামায় মিথ্যা তথ্য দেওয়ার কারণে তার প্রার্থীতা বাতিল করা হয়। মুহূর্তেই এলাকায় খবর ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাটি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। সূত্র মতে, বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবি রিপোর্টে ইসলামী ব্যাংকের ঋণ খেলাপির কথা উল্লেখ থাকলেও মীর হাবিবুর রহমান বিটিসিএলের বিল খেলাপি ছিলেন। ঋণ খেলাপি ঘোষণার দিনই ধুরন্ধর হাবিব তড়িঘড়ি ইসলামী ব্যাংকে গিয়ে ঋণ পরিশোধ এবং মেয়েকে দিয়ে বিটিসিএলের বিল পরিশোধ করে প্রত্যয়নপত্র নিয়ে আপিলের প্রস্তুতি নেন। মীর হাবিবুর রহমান মসিক নির্বাচনের আপিল কর্মকর্তা ও বিভাগীয় কমিশনার উম্মে সালমা তানজিয়া বরাবর আপিল দাখিল করেন। এর পর থেকেই মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করানোর জন্য বিভিন্ন মহলে দৌড়ঝাঁপ করছেন। এক্ষেত্রে মহানগর আওয়ামী লীগের দানবীর খ্যাত এক সহ-সভাপতি কলকাঠি নাড়ছেন।
সূত্র জানায়, মীর হাবিবুর রহমান ৫ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে সহকারী রিটার্নিং অফিসার সৈয়দা শারমিন সুলতানার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন। হলফনামায় মিথ্যা তথ্য থাকায় বাছাই শেষে তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। আপিল শুনানি উপেক্ষা করে হাবিব একদল সমর্থক নিয়ে প্রতিদিনই মিছিল ও প্রচারণা চালাচ্ছেন। অপরদিকে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন আইন ভঙ্গ করে সমর্থক নিয়ে শোডাউন করছেন সদ্য সাবেক কাউন্সিলর মোঃ নিয়াজ মোর্শেদ। এ ঘটনায় এলাকায় বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। সদ্য সাবেক এই কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ রয়েছে। জলাবদ্ধতা নিরসন ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করিয়েছেন নিজের এলাকায়। নজর দেননি কলেজ রোড, মীর বাড়ি সড়ক, গুলকীবাড়ি ও মোহাম্মদ আলী রোড এলাকায়। ময়লা-আবর্জনা ও ড্রেন থেকে ছড়ানো দুর্গন্ধে মানুষের ভোগান্তি চরমে। প্রতীক বরাদ্দের আগেই তিনি টাকার বিনিময়ে নির্বাচনী মাঠ গরম করছেন। মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া হাবিবের বিরুদ্ধেও রয়েছে নানান অভিযোগ। তিনি বিলুপ্ত পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কমিশনার ও কাউন্সিলর ছিলেন। এলাকার উন্নয়নে ভূমিকা না রেখে ব্যবসা ও ক্লাব পাড়ায় ব্যস্ত থাকতেন। পৈত্রিক বাড়ির সামনের সড়কের দুই পাশের কোনো কোনো অংশে ড্রেন নির্মাণ না করে প্যাকেজের টাকা আত্মসাত করেন সাবেক এই কাউন্সিলর। তার বিরুদ্ধে ট্রেড লাইসেন্সের টাকা জমার রসিদ জালিয়াতিরও অভিযোগ রয়েছে। বিলুপ্ত পৌরসভার লাইসেন্স ইন্সপেক্টর ও সহকারী লাইসেন্স ইন্সপেক্টরকে তৎকালীন সময়ে সহযোগিতা করে ধরা পড়েন মীর হাবিবুর রহমান।

  • সর্বশেষ - আলোচিত খবর