, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ অনলাইন সংস্করণ

নির্বাচনের কারণে চলমান উন্নয়ন কাজে কোনো প্রভাব পড়বে না : মসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা

  শাহ মোহাম্মদ রনি

  প্রকাশ : 

নির্বাচনের কারণে চলমান উন্নয়ন কাজে কোনো প্রভাব পড়বে না : মসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা

নির্বাচনের কারণে ময়মনসিংহ নগরীতে চলমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে কোনো প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছেন সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (যুগ্ম সচিব) মোঃ ইউসুফ আলী। তিনি বলেন, নগরীর ৩৩ ওয়ার্ডে একযোগে চলছে সড়ক ও ড্রেন নির্মাণ কাজ। চলমান নির্মাণ কাজের জন্য ঘনবসতি এলাকায় নাগরিকদের চলাফেরা করতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। কাজ শেষ হয়ে গেলে আর সমস্যা থাকবে না। নাগরিকরা স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচল করতে পারবেন। অপরদিকে মসিক সিইও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিয়েছেন।
টেকসই ও মজবুত নির্মাণ কাজ সম্পর্কে সিইও বলেন, ঠিকাদারদের কাছ থেকে টেকসই ও মজবুত কাজ বুঝে নেওয়ার জন্য প্রধান প্রকৌশলীসহ দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলীদের কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে কারও সঙ্গে আপস করার কোনো সুযোগ নেই। তিনি বলেন, আমরা ঠিকাদারদের সাফ জানিয়ে দিয়েছি দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে। দরপত্র অনুযায়ী গুণগত মালামাল দিয়ে কাজ করতে বলা হয়েছে। এর হেরফের হলে প্রকৌশল বিভাগ ও ঠিকাদারদের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরো বলেন, নির্মাণ কাজের গুণগত মান নিশ্চিত করার জন্য আমি নিয়মিত প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন করি। নির্মাণ কাজ দেখতে অনেক সময় রাতের বেলা আমাকে বাইরে থাকতে হয়।
মসিক জনসংযোগ কর্মকর্তা শেখ মহাবুল হোসেন রাজীব সোমবার দৈনিক খোলা কাগজকে জানান, সাড়ে ৫ বছর আগে গঠিত দেশের সর্বশেষ সিটি কর্পোরেশন ময়মনসিংহের উন্নয়নের জন্য সরকার ২ বছর আগে ১৫৭৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। করোনা মহামারির প্রভাব ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে উন্নয়ন কাজ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। তার পরও গত দেড় বছরে প্রায় ৩২৫ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন হয়েছে। দৃশ্যমান এসব কাজের মধ্যে ১০৫ কিলোমিটার আরসিসি, বিসি ও সিসি সড়ক, ৫০ কিলোমিটার ড্রেন ও ৩ কিলোমিটার ফুটপাত নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। চলমান রয়েছে ১২৫০ কোটি টাকার ৩৪৮ কিলোমিটার আরসিসি, বিসি ও সিসি সড়ক, ২৪২ কিলোমিটার ড্রেন ও ১০ কিলোমিটার ফুটপাত নির্মাণ।

তিনি বলেন, প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের সড়ক ও ড্রেনেজ নেটওয়ার্ক ব্যবস্থাপনা সক্ষমতার ব্যাপক পরিবর্তন ঘটবে। কমে যাবে নগরীর কয়েকটি এলাকার জলাবদ্ধতা। স্মার্ট ময়মনসিংহ নগরী বিনির্মাণে প্রকল্পগুলো মাইলফলক হয়ে থাকবে। তিনি আরো বলেন, চোখে পড়ার মতো উন্নয়ন কাজ হয়েছে নতুন ২২ থেকে ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সিটিতে যুক্ত হওয়া এলাকাগুলোতে প্রশস্ত সড়ক ও ড্রেন পাল্টে দিয়েছে নাগরিকদের জীবনমান। উদ্ধার করে পানির প্রবাহ সৃষ্টি করা হয়েছে বিভিন্ন সময়ে দখল হওয়া ৫টি খালের ১৬ কিলোমিটার এলাকা।
মসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ আজাহারুল হক জানান, নগরীর বিভিন্ন এলাকা আলোকিত করতে ১৭১ কিলোমিটার সড়কে স্থাপন করা হয়েছে জিআই পোলসহ ৬৮৯০টি দৃষ্টিনন্দন সড়ক বাতি। গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সোলার প্যানেলসহ স্থাপন করা হয়েছে ৩৫৮টি সড়ক বাতি। নয়নাভিরাম জয়নুল উদ্যানে লাগানো হয়েছে ২৭০টি গার্ডেন লাইট। নগরীর আরো কয়েকটি এলাকা আলোকিত করার জন্য প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। নগরবাসীর স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার জন্য বাঘমারায় নগর মাতৃসদন ও গুলকীবাড়িতে নির্মাণ করা হচ্ছে নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্র। নাগরিকদের সেবা দিতে চলমান রয়েছে একটি নগর মাতৃসদন ও ৩টি প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র। নগরবাসীর গলার কাটা শালবন পরিবহনকে মাসকান্দা থেকে পরিচালনার জন্য টারমিনাল সংস্কার করা হয়েছে। শিগগিরিই শালবন মাসকান্দা থেকে চলাচল করবে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছরের ১১ মার্চ ময়মনসিংহ সার্কিট হাউজ মাঠের জনসভাস্থলের কাছে ৫৭০ কোটি ৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ৭৩টি উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন ও ২৭৬২ কোটি ২৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩০টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এর মধ্যে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের দৃশ্যমান কয়েকটি প্রকল্প রয়েছে। সূত্র মতে, ২০১৮ সালে ময়মনসিংহ পৌরসভাকে বিলুপ্ত করে সিটি কর্পোরেশনের কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর গত সাড়ে ৫ বছর নগরীতে রেকর্ড পরিমাণ উন্নয়ন কাজ হয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ডের প্রধান সড়ক এবং অলিগলিতে হয়েছে সড়ক ও ড্রেন নির্মাণ।



  • সর্বশেষ - আলোচিত খবর