, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ অনলাইন সংস্করণ

নেত্রকোণায় নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত, ঝুঁকিতে ফসল রক্ষা বাঁধ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

  প্রকাশ : 

নেত্রকোণায় নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত, ঝুঁকিতে ফসল রক্ষা বাঁধ

ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ভারী বর্ষণের ফলে উজান থেকে নেমে আসা ঢলে দ্বিতীয় দফায় নেত্রকোণার ধনু, সোমেশ্বরী, কংস, উব্ধাখালীসহ বেশকিছু নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বিশেষ করে জেলার হাওরাঞ্চলের প্রধান নদী ধনুর খালিয়াজুরী পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। 

রোববার (১৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহন লাল সৈকত ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। 

এদিকে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ঝুঁকিতে পড়েছে জেলার চরহাইসদা, গোমাইল ও কীর্তনখোলা বাঁধসহ বেশ কয়েকটি ফসল রক্ষা বাঁধ। 

তবে এসব বাঁধ রক্ষায় দিন-রাত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড, জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও কৃষকরা।

নেত্রকোণা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহন লাল সৈকত জানান, দ্বিতীয় দফায় ধনু নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১৪ সেন্টমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় কীর্তনখোলা, গোমাইল ও চরহাইসদা ফসল রক্ষা বাঁধ ঝুঁকিতে রয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, আমরা গত ১৮ দিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ ফসল রক্ষা বাঁধগুলো টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছি। এখন পর্যন্ত জেলার কোনো বাঁধ ভেঙে ফসলের ক্ষতি হয়নি। আশা করছি, কৃষকরা তাদের হাড়ভাঙা পরিশ্রমের ফসল ঘরে তুলতে পারবেন।

এ নিয়ে কথা হলে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক এফএম মোবারক আলী বলেন, জেলার ১০ উপজেলায় ১ লাখ ৮৪ হাজার ৮৮৩ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে জেলার মদন, মোহনগঞ্জ ও খালিয়াজুরী উপজেলায় ৪০ হাজার ৯৩০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে। বন্যার কবল থেকে বাঁচতে হাওরাঞ্চলের জমির ধান ৮০ ভাগ পাকলেই কেটে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। আমরাও কৃষকদের দ্রুত ধান কাটার পরামর্শ দিচ্ছি। এ পর্যন্ত হাওরের ৬২ ভাগ ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে। 

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক কাজি মো. আবদুর রহমান বলেন, সরকার হাওরের ফসল রক্ষায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। হাওরের বাঁধের যেন কোনো ক্ষতি না হয় সে জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা নিয়মিত তদারকি করছেন। পানি আর না বাড়লে কৃষকরা তাদের কাঙ্ক্ষিত ফসল ঘরে তুলতে পারবেন। 

এর আগে প্রথম দফায় উজান থেকে নেমে আসা ঢলে ধনু নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে খালিয়াজুরী ও মদন উপজেলার হাওরাঞ্চলের নিচু এলাকার অন্তত ৫০০ একর জমির বোরো ধান পানিতে তলিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তখন কীর্তনখোলা ফসল রক্ষা বাঁধের কয়েকটি স্থানে ফাটল ও ধস দেখা দিলে ঝুঁকিতে পড়ে বাঁধটি। 

পরে স্থানীয় কৃষক, জনপ্রতিনিধি, উপজেলা প্রশাসন, জেলা প্রশাসন ও জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তৎপরতায় কয়েকদিন ধরে ওই বাঁধের মেরামত কাজ করার পর ঝুঁকি কমে আসে। কিন্তু কয়েকদিন না যেতেই দ্বিতীয় দফায় আবারও নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে ঝুঁকিতে পড়েছে ফসল রক্ষা বাঁধগুলো।

  • সর্বশেষ - মহানগর