, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ অনলাইন সংস্করণ

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ বাস্তবায়নে করোনা যুদ্ধে অগ্রণী ভূমিকা রেখে ‘মানবিক মেয়র’ উপাধি পেয়েছেন টিটু

  শাহ মোহাম্মদ রনি

  প্রকাশ : 

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ বাস্তবায়নে করোনা যুদ্ধে অগ্রণী  ভূমিকা রেখে ‘মানবিক মেয়র’ উপাধি পেয়েছেন টিটু
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ বাস্তবায়নে করোনা যুদ্ধে অগ্রণী ভূমিকা রেখে ‘মানবিক মেয়র’ উপাধি পেয়েছেন মোঃ ইকরামুল হক টিটু। বিশেষ ব্যবস্থায় নগরবাসীকে করোনার ভ্যাকসিন প্রদান করে দেশে রেকর্ড সৃষ্টি করেন। অন্যান্য সিটি কর্পোরেশন ও বৃহৎ পৌরসভার মধ্যে ময়মনসিংহ নগরীতে করোনায় মৃত্যুর হার অনেক কম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ময়মনসিংহ নগরীতে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে বিশেষ ব্যবস্থা ও সঠিক সময়ে নাগরিকদের ভ্যাকসিন প্রদান করায় মৃত্যুর হার কম ছিলো। সূত্র মতে, ৫ লাখ ৭৭ হাজার অধিবাসীর নগরীতে সাড়ে ৫ লাখের বেশি মানুষকে করোনার প্রথম ডোজের ভ্যাকসিন দেওয়া হয়। পর্যায়ক্রমে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ ডোজের আংশিক ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। মসিকের ব্যবস্থাপনায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ, এসকে হাসপাতাল, সিএমএইচ, মসিকের ইপিআই সেন্টার ও ৩৩ ওয়ার্ডের কেন্দ্র থেকে ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়। মসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ইউসুফ আলী সোমবার দৈনিক জাগ্রত বাংলা’কে জানান, আবারো করোনার ভ্যাকসিন সরবরাহ পাওয়া গেলে বাদ পড়াদের তৃতীয় ও চতুর্থ ডোজ প্রদান করা হবে। অপরদিকে করোনা সঙ্কট নিরসনে নগরীর ৩৩ ওয়ার্ডে চালু করা হয়েছিলো প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত বিশেষ খাদ্য কর্মসূচি। ৭৫ হাজার পরিবার এই সহযোগিতা পায়। এর মধ্যে ৫০ হাজারের বেশি পরিবার মানবিক সহায়তা ও ১৮ হাজার পরিবার বিশেষ ওএমএস কার্ড পেয়েছে। সরকারি ১ লাখ, মেয়রের ব্যক্তিগত তহবিলের ৫৫ হাজার এবং সংগ্রহ করা সাড়ে ৫ হাজার ব্যাগ খাদ্যপণ্য বিতরণ করা হয় অসহায় ও দুস্থদের মধ্যে। প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে কয়েক দফায় পাওয়া ৬০০ টনের বেশি চাল, ৬০ টনের বেশি ডাল ও ১১০ টন আলু উপহার হিসেবে অসহায় ও দুস্থ পরিবারের মধ্যে বিতরণ করা হয়। লকডাউন দীর্ঘ হওয়ায় বহু পরিবার একাধিকবার খাদ্যপণ্য পান। মেয়রের নির্দেশনা অনুযায়ী পুরুষ ও নারী কাউন্সিলররা প্রধানমন্ত্রীর উপহার ত্রাণের চাল, ডাল ও আলু বিতরণ করেন। অন্যদিকে মেয়রের ব্যক্তিগত উদ্যোগে আওয়ামী লীগ, কৃষক লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, ছাত্রলীগ, মৎস্যজীবি লীগ, তাঁতী লীগ, পেশাজীবি, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা এবং স্বেচ্ছাসেবকরা ওয়ার্ডভিত্তিক অসহায় ও দুস্থদের মধ্যে খাদ্যপণ্য বিতরণ করেন। লোকলজ্জায় থাকা হাজার হাজার মধ্যবিত্ত পরিবারের কাছেও খাদ্যপণ্য পৌঁছানোর ব্যবস্থা করেন ‘মানবিক মেয়র’ টিটু।

সূত্র জানায়, করোনা মহামারীতে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সিভিল সার্জন অফিস, বিভিন্ন সরকারি অফিস ও স্বেচ্ছাসেবকদের বিপুল পরিমাণের পিপিই, মাস্ক, গ্লাভস ও স্যানিটাইজার, নাগরিকদের মধ্যে ৩ লাখ মাস্ক, ৫০ হাজার গ্লাভস ও ৫০ হাজার স্যানিটাইজার বিতরণ এবং বিভিন্ন এলাকায় ৫২৫টি হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করেন ‘মানবিক মেয়র’ টিটু। মসিকের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও পরিচ্ছন্ন কর্মীদের সুরক্ষার জন্য দেওয়া হয় পর্যাপ্ত সুরক্ষা সামগ্রী। প্রতিদিন শতাধিক মাইকে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হয় নগরীর সর্বত্র। নাগরিকদের মধ্যে বিতরণ করা হয় লাখ লাখ প্রচারপত্র। করোনা রোগীদের চিকিৎসার সাথে জড়িত ডাক্তার ও নমুনা সংগ্রহে নিয়োজিত টেকনিশিয়ানদের যাতায়াতের জন্য দেওয়া হয় একাধিক গাড়ি। কয়েকটি এ্যাম্বুলেন্সে পরিবহন করা হয় করোনার লাশ। নাগরিকদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে নগর ভবনে স্থাপন করা হয়েছিলো টেলিমেডিসিন সেন্টার। তৎকালীন সময়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দীপক মজুমদার সোমবার জানান, মেয়র মহোদয়ের কঠোর নির্দেশনা অনুযায়ী নাগরিকদের করোনার ভ্যাকসিন প্রদান, সংক্রমণ প্রতিরোধে ব্যবস্থা ও জনসচেতনা সৃষ্টির জন্য ব্যাপক প্রচারণার পাশাপাশি করোনার লাশ দাফনের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিলো। মসিকের কবরস্থান সমন্বয়কারীর নেতৃত্বে দক্ষ টিম গোসল ও জানাযা শেষে নগরীর বিভিন্ন কবরস্থানে আড়াই শতাধিক লাল দাফন করে। অনেক লাশ এ্যাম্বুলেন্সে বিভিন্ন উপজেলায় পাঠানো হয়। স্বেচ্ছাসেবকরাও আমাদেরকে অনেক সহযোগিতা করেন। অভিন্ন বক্তব্যে নাগরিক নেতারা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ বাস্তবায়নে মেয়র টিটু সময় মতো করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে মাঠে না নামলে এবং অসহায় ও দুস্থ নাগরিকদের পাশে না দাঁড়ালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হতো। টিটু অল্প সময়ের মধ্যে অসহায় ও দুস্থ পরিবারের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর উপহার এবং ব্যক্তিগত উদ্যোগের খাদ্যপণ্য বিতরণ করেন। নেতারা আরো বলেন, টিটু মহানুভব মানুষ। হাজার হাজার পরিবারের হাহাকার মিটিয়ে তিনি ‘মানবিক মেয়র’ এবং দেশের অন্যতম ‘শীর্ষ জনপ্রতিনিধি’র উপাধি পেয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী অসহায় ও দুস্থ পরিবারের মধ্যে খাদ্যপণ্য বিতরণ এবং জনসচেতনতার জন্য অক্লান্ত শ্রম দিয়েছেন মেয়র মোঃ ইকরামুল হক টিটু। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে নাগরিকদের জন্য কাজ করায় তিনি ময়মনসিংহ বিভাগসহ দেশের মানুষের হৃদয়ে ঠাঁই করে নিয়েছেন। দাগ কেটেছেন কোটি মানুষের হৃদয়ে। অধিকাংশ জনপ্রতিনিধি ও নেতারা যখন লকডাউনের নামে বাড়িতে তখন তিনি আক্রান্তের ঝুঁকি মাথায় নিয়ে নিরলসভাবে সেবা দিয়েছেন। এ কারণে তাকে দেশের অন্যতম ‘মানবিক মেয়র’ ও ‘শীর্ষ জনপ্রতিনিধি’ উপাধি দিয়েছেন ময়মনসিংহবাসী। নগরবাসী অকপটে স্বীকার করেন তার মহানুভবতার কথা। নানান কারণে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি টিটু নগরবাসীর খুবই প্রিয়। সুনাম অর্জন করেছেন করোনা মহামারীতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে। মানুষের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে কাঁচা বাজার স্থানান্তর করেন। দেশে কাঁচা বাজার স্থানান্তরের প্রথম উদ্যোগ নেওয়া হয় ময়মনসিংহ থেকে। মানুষ যখন প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাস সংক্রমণের অজানা আশঙ্কায় তখনো সড়কে অবস্থান করেন মেয়র টিটু। নিজে উপস্থিত থেকে জীবাণুনাশক ও ব্লিচিং পাউডার মেশানো পানি ছিটানোর কাজ তদারকি করেন। পরিচ্ছন্ন রাখেন প্রধান সড়ক ও ওয়ার্ডগুলোর সড়কসহ অলিগলি। জীবন বিপন্ন হতে পারে জেনেও নাগরিকদের জন্য কাজ করে যাওয়ার বিষয়টিকে মহানুভবতার সর্বোচ্চ স্বীকৃতি দিয়েছেন ময়মনসিংহবাসী। তিনি শুভাকাঙ্খীদের সাবধানতার বিষয়টিও মাথায় নেননি। নাগরিকদের কল্যাণে জীবন বাজি রেখে সিটি কর্পোরেশন ও স্বেচ্ছাসেবীদের অর্ধশত টিমের কাজ তদারকি করেন। মন্ত্রণালয়, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও বিভিন্ন এজেন্সীর সাথে সমন্বয় করেন করোনা পরিস্থিতিতে করণীয়। বস্তি ও ঘনবসতি এলাকায় কাজ করে মসিকের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্প। জনসচেতনতার জন্য এই প্রকল্পের মাধ্যমে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হয় নগরীর ৩৩ ওয়ার্ডে। ১৯ হাজার ৬১১ পরিবারের মধ্যে বিতরণ করা হয় সাবান ও সুরক্ষা সামগ্রী। অতিদরিদ্র ৪ হাজার ৭৫৫ পরিবারের মধ্যে বিতরণ করা হয় ১ হাজার ৫০০ করে টাকা। ৯৪টি সিডিসির হাত ধোয়ার পয়েন্টে বিতরণ করা হয় সাবান।

জানা যায়, মেয়র মোঃ ইকরামুল হক টিটু একজন স্বাপ্নিক মানুষ। সেবার মানসিকতা ও নতুন নতুন কনসেপ্ট বাস্তবায়ন করে বদলে দিয়েছেন ময়মনসিংহ নগরীর দৃশ্যপট। সিটি কর্পোরেশনের মেয়রদের মধ্যে যেক’জন আলোচিত টিটু তাদের একজন। দৃশ্যমান ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড, সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্প, ক্লিন ইমেজ, বিচক্ষণতা এবং সাংগঠনিক দক্ষতার কারণে তিনি সকলের নজর কেড়েছেন। মেয়র টিটু সম্পর্কে নাগরিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার নূরুল আমিন কালাম দৈনিক জাগ্রত বাংলা’কে বলেন, নিজের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে টিটু নগরবাসীর পাশে দাঁড়িয়েছেন। সকলের প্রিয় এই মানুষ জীবন বাজি রেখে নাগরিক সুরক্ষার জন্য কাজ করেন। ২ বার করোনা আক্রান্ত হন। সুস্থ হয়ে করোনা সঙ্কট নিরসনে আবারো মাঠে নামেন ‘মানবিক মেয়র’ টিটু। তিনি বলেন, এ যুগে টিটু’র মতো জনপ্রতিনিধি পাওয়া কঠিন। নিঃসন্দেহে তিনি মহানুভব। অপরদিকে বিশ্লেষকরা জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব সময় ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের নাগরিকদের প্রতি আন্তরিক। তিনি ময়মনসিংহবাসীকে বিভাগ ও সিটি কর্পোরেশন উপহার দিয়েছেন। মসিকের উন্নয়নের জন্য পর্যায়ক্রমে একাধিক প্রকল্প উপহার দেন। সড়ক ও ড্রেনেজ নেটওয়ার্ক উন্নয়নের জন্য ১৫৭৫ কোটি এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য ১১২ কোটি টাকার প্রকল্প দিয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন আরেক ধাপ এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের সড়ক ও ড্রেনেজ নেটওয়ার্ক এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সক্ষমতার ব্যাপক পরিবর্তন ঘটবে। আধুনিক ও পরিচ্ছন্ন ময়মনসিংহ নগরী বিনির্মাণে প্রকল্পগুলো মাইলফলক হয়ে থাকবে। বিশ্লেষকদের মতে, মেয়র টিটু ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন করে লাখ লাখ মানুষকে আন্দোলিত করেছেন। তিনি বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছেন। আমূল পরিবর্তন করায় দেশব্যাপী অনুকরণীয় জনপ্রতিনিধিতে পরিণত হয়েছেন। দক্ষতা, শক্তিশালী টিমওয়ার্ক ও সাহসিকতায় দেড়শ’ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত ময়মনসিংহ পৌরসভাকে (২০১৮ সালে বিলুপ্ত) বর্তমান সিটি কর্পোরেশনকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন।

  • সর্বশেষ - মহানগর