‘সংবাদ সংগ্রহে মা গেছেন ময়মনসিংহ, ফিরবেন দুইদিন পর’
প্রকাশ :
পেশাগত দায়িত্বপালনকালে হয়রানির শিকার প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামের একমাত্র মেয়ে আতিকা ইসলাম আলভিনা এখনো জানে না তার মা কোথায় আছে। রোজিনা ইসলামের পারিবারিক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
রোজিনা ইসলামের মামাতো বোন নাজনীন আক্তার রেখা জাগো নিউজকে বলেন, ‘আলভিনা ভালো আছে। ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া করছে। ওকে আসলে সেভাবে বিষয়টা জানানো হয়নি। আলভিনা জানে যে ওর মা দুইদিনের জন্য ময়মনসিংহ গেছে, একটা রিপোর্টের জন্য। ওকে এভাবে বলা হয়েছে।’
তিনি জানান, আলভিনা ভিকারুননিসা নূন স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে।
এদিকে রোজিনা ইসলামের স্বামী ব্যবসায়ী মো. মনিরুল ইসলাম মিঠুর সারাদিন ব্যস্ততায় কেটেছে। দুপুরে রাজধানীর শাহজাহানপুরে রোজিনা ইসলামের বাসায় গেলে জানা যায় তিনি বাসায় নেই। মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘ব্যস্ততার মধ্যে আছি। আরেকটা ফোনে কথা বলতে হবে। আপনার সঙ্গে পরে কথা হবে।’
গতকাল সোমবার (১৭ মে) দুপুরে সচিবালয়ে পেশাগত দায়িত্বপালনকালে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিবের একান্ত সচিব মো. সাইফুল ইসলাম ভূঞার কক্ষে রোজিনাকে প্রায় সাড়ে পাচঁ ঘণ্টা আটকে রাখা হয়। পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে তাকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের একজন উপ-সচিব তার বিরুদ্ধে মামলা করেন। সেখানে ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধির ৩৭৯ ও ৪১১ ধারায় চুরি এবং ১৯২৩ সালের ‘অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের’ ৩ ও ৫ ধারায় গুপ্তচরবৃত্তি ও রাষ্ট্রীয় গোপন নথি নিজের দখলে রাখার অভিযোগ আনা হয়।
মঙ্গলবার (১৮ মে) সকালে রোজিনা ইসলামকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে নেয়া হয়। ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিম রিমান্ড নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বৃহস্পতিবার (২০ মে) তার জামিন শুনানির দিন ঠিক করে দেন আদালত। পরে রোজিনা ইসলামকে কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে নেয়া হয়।
এজলাস থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পথে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রোজিনা ইসলাম বলেন, ‘আমার সঙ্গে অন্যায় হচ্ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিয়ে রিপোর্ট করায় আমার সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে।’
এদিকে রোজিনা ইসলামকে হেনস্তা ও গ্রেফতারের প্রতিবাদ জানিয়েছে সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন। নিন্দা জানিয়েছেন জাতীয় মহিলা পরিষদ, মানবাধিকার কমিশনসহ আরও অনেকেই।