, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১ অনলাইন সংস্করণ

২৫ কোটি টাকার সড়কের কাজ দুই কিলোমিটার করে ঠিকাদার উধাও

২৫ কোটি টাকার সড়কের কাজ দুই কিলোমিটার করে ঠিকাদার উধাও

য়মনসিংহের ভালুকা এবং টাঙ্গাইলের সখিপুর উপজেলার সংযোগ স্থাপনকারী জনগুরুত্বপূর্ণ সিডস্টোর-সখিপুর আঞ্চলিক সড়ক। দীর্ঘ এক যুগ বেহাল থাকার পর গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে রাফিয়া কনস্ট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর।


১৪ কিলোমিটার সড়কের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ২৫ কোটি টাকা। সময় নির্ধারণ করা হয়েছে দেড় বছর। কিন্তু এক বছর পার হলেও এখনও ১০ ভাগ কাজও শেষ হয়নি সড়কের। চার মাস ধরে সড়কের কাজ বন্ধ থাকায় বৃষ্টিতে নির্মাণসামগ্রী সরে তৈরি হয়েছে খানাখন্দ। এতে নির্দিষ্ট সময়ে সড়কের কাজ শেষ হওয়া নিয়ে দেখা দিয়েছে শঙ্কা।


একদিকে জোড়াতালি দেয়া সড়ক; তার ওপর ঝুঁকিপূর্ণ লাউতি ব্রিজ দিয়ে চলাচল করছে ভারী যানবাহন। খোঁড়াখুঁড়ির বেহাল সড়ক এবং ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজের কারণে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় স্থানীয়দের।


সরেজমিনে দেখা যায়, লোহা প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান (এনডিই), রানার মোটরসসহ বেশ কয়েকটি শিল্পকারখানার গাড়ি ৫০-৬০ টন মালামাল নিয়ে দিনে-রাতে অবাধে এই সড়ক আর লাউতি ব্রিজ দিয়ে চলাচল করে। ফলে সড়কটি এখন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি ব্রিজটি এখন ঝুঁকিপূর্ণ। যেকোনো সময় ধসে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এলজিইডি কর্তৃক ব্রিজের পাশে ১০ টনের বেশি মালবাহী গাড়ি চলাচলের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও কেউ আমলেই নিচ্ছে না বিষয়টি।


স্থানীয়রা জানায়, ১৪ কিলোমিটার সড়কের উন্নয়নকাজ শুরু হয়ে অদৃশ্য কারণে আবার বন্ধ হয়ে গেছে। ঠিকাদার রুবেল কাজ ফেলে উধাও। কেন কাজ শুরু করল আর বন্ধইবা কেন হলো। এমনিতে এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করা যায় না। বৃষ্টি হলে হাঁটুপানিতে কাদায় একাকার হয়ে যায়। সব মিলে সড়কটি দ্রুত সংস্কার করা দরকার। সেই সঙ্গে সড়কের লাউতি ব্রিজটি নতুন করে নির্মাণ না করা হলে যেকোনো সময় ভেঙে পড়বে। তখন কয়েকটি ইউনিয়নের মানুষের দুর্ভোগের সীমা থাকবে না। সেই সঙ্গে অতিরিক্ত মালবাহী গাড়ির চলাচল বন্ধ করতে হবে।


ট্রাকচালক আমিনুল ইসলাম নামে একজন বলেন, এই সড়ক দিয়ে গাড়ি চালালে গাড়ির বারোটা বেজে যায়। চাকা ও বিভিন্ন যন্ত্রাংশের ক্ষতি হয়। পুরো গাড়ি লড়তে থাকে। কখনও ট্রাক উল্টে গেলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আতঙ্ক নিয়েই এই সড়ক আর ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজ দিয়ে বাধ্য হয়ে চলাচল করতে হয় আমাদের।


অটোরিকশাচালক মোজাম্মেল হক জাগো নিউজকে বলেন, এই সড়ক দিয়ে যাত্রী নিয়ে যাওয়ার কারণে পকেটে টাকা রাখতে পারি না। ভাঙাচোরা ও যানজটের কারণে দীর্ঘসময় রাস্তায় বসে থাকতে হয়। ফলে যা আয় হয় তা গাড়ির মালিককে দিতে হয়। মালিককে ৭০০ টাকা বুঝিয়ে দিয়ে ২০০-৩০০ টাকা পকেটে থাকে। সড়কটি সংস্কার করা জরুরি।


ময়মনসিংহ জন উদ্যোগের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম চুন্নু এ সড়কে জনদুর্ভোগ সৃষ্টির জন্য এলজিইডির কিছু কর্মকর্তার দুর্নীতি এবং অব্যবস্থাপনা ও অনিয়মকে দায়ী করেন।


তিনি বলেন, সড়ক সংস্কারের সময় এলজিইডির তদারকি কম। এসব কাজে কিছুসংখ্যক কর্মকর্তা, সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার এবং এর সঙ্গে যারা থাকে তাদের ভাগ্যের উন্নয়ন হয়।


ময়মনসিংহের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী নূর হোসেন ভূঁইয়া জাগো নিউজকে বলেন, ঠিকাদার চলতি বছরের জুন মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে জেলে থাকার কারণে কাজ বন্ধ। ব্রিজ সংস্কারের জন্য প্রকল্প দেয়া হয়েছে। ঠিকাদারের প্রতিনিধির মাধ্যমে পুরো সড়কের কাজ দ্রুত শুরু হবে।

  • সর্বশেষ - ময়মনসিংহ অঞ্চল